সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ: আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের বৈঠক, দ্রুত দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস
Published: 22nd, April 2025 GMT
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য বিভাগ ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে এ বৈঠক হয়।
ওই বৈঠকে শিক্ষার্থীদের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে সপ্তাহে ছয় দিন ক্লিনিক্যাল ক্লাসের ব্যবস্থা, দ্রুত অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন করে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল চালু এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষক ও জনবল নিয়োগের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন জিয়াউর রহমান চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক আনিসুর রহমান, সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া, জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুবুর রহমান, সিভিল সার্জন জসীম উদ্দিন প্রমুখ।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস জেলা সদর হাসপাতালে অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে সেখানে পদায়ন করা হয়েছে, যাঁরা এক সপ্তাহের মধ্যে যোগ দেবেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হবে। হাসপাতাল চালুর বিষয়ে দ্রুত অবকাঠামো নির্মাণ শেষ করতে গণপূর্ত বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্নের আশ্বাস দেওয়া হয়।
বৈঠকে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, তাঁদের সব দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এখন সবাই মিলে আলোচনা করে ক্লাসে ফেরা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। তাঁদের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।
১৫ এপ্রিল থেকে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপি প্রদান এবং সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। গতকাল সোমবার তাঁরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ স ন মগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ২৯
ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয় বলে জানায় জেরুজালেম পোস্ট। বিবিসি আরও দুইজন নিহতের খবর দেয়। এরপর আরেকজনের ফলে নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছাল।
আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।