বর্তমান নাকি ভবিষ্যৎকে বেশি গুরুত্ব দেবেন?
Published: 25th, April 2025 GMT
জন লেননের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার, চিত্রশিল্পী, লেখক ও শান্তিকর্মী। তার কাছে জীবন ছিলো একটি দিনের সমতূল্য। ১৯৪০ সালের ৯ অক্টোবর ইংল্যান্ডের লিভারপুলে জন্ম নেওয়া এই গায়ক সারা জীবন যুদ্ধের বিপক্ষে ছিলেন। গতকাল কিংবা আগামীকাল কে গুরুত্ব দেওয়ার বদলে তিনি বর্তমানকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে গেছেন।
জন লেননের ভাষায় ‘‘জীবন হলো শুধুমাত্র একটি দিনের মতো। আপনি একদিন জন্মগ্রহন করেছেন, একদিন মরে যাবেন। সব কিছু একদিন ঘটে যাবে। আজকের দিনটিই হচ্ছে আপনার জীবন। গতকাল? দিনটি এরই মধ্যে চলে গেছে। আগামীকাল? এখনও আসেনি। আপনি আজকের দিনটিতে বসবাস করছেণ। আজকের দিনটিই শুধুমাত্র আপনার জীবন। আজকের দিনটি শুধুমাত্র ছোট্ট একটি পার্ট নয়—আপনার জীবনের জন্য। আজকের দিনটিই হলো জীবন। আজকের দিনটি উদযাপন করুন।’’
জন লেনন বলেন, ‘‘প্রতিটি দিন সুখী থাকুন। পরের বছরের জন্য সুখী হওয়ার উপলক্ষ্য জমিয়ে রাখবেন না। আপনি বলবেন না যে, আমি সুখী একটি জীবন চাই। সুখ হলো এক ধরনের ইল্যুশন—এ কথা বলবেন না। আমি প্রতিদিন সুখী হতে চাই। আপনি যখন একটি সুখী দিন পাবেন আপনি একটি সুখী জীবন পাবেন।’’
আরো পড়ুন:
সফলতার ‘সিক্রেট’ একটাই: জ্যাক মা
বয়স ৩০ হলে যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দিতে পারেন
জন লেননের এই বোঝাপড়ার সঙ্গে নিজের বোঝাপড়া একবার মিলিয়ে নিতে পারেন। জোর দিতে পারেন বর্তমান সময়টাতে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।