‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদের কন্যা লামিয়ার আত্মহত্যার জন্য আমরা সবাই লজ্জিত। আমাদের প্রত্যেকের এই হত্যা কুঁড়ে কঁড়ে খাচ্ছে। লামিয়ার আত্মহত্যার দায় এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের, মামলা এই সরকারের বিরুদ্ধে হওয়া উচিত।”

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম‌্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু রবিবার (২৬ এপ্রিল) বিকা‌লে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দ‌লটির ছয় বছরপূর্তি  উদযাপন অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ ও মিলনমেলায় এসব কথা ব‌লেন।

ম‌জিবুর রহমান মঞ্জু ব‌লেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ শাসব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে নতুন একটি রাজনৈতিক দল অপরিহার্য হয়ে পড়ে। যখন আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো মুক্তিযুদ্ধ ও তত্ত্ব নিয়ে বিতর্কে আবদ্ধ ঠিক তখনই নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এই প্রেক্ষাপটে একটি নতুন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ নামক প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়। সেই 'জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ' নামক প্ল্যাটফর্মটিই আজকের ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’তে রূপান্তরিত হয়।”

তিনি বলেন, “একটি জাতির ইতিহাস না থাকলে সেটি জাতি হিসেবে দাঁড়াতে পারে না। ঠিক তেমনি একটি দল প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপটেও ইতিহাস থাকে। আমাদেরও ঐতিহাসিক ইতিহাস আছে।  একেক সময় একেকজন দলের হাল ধরবেন, এটিই একটি দলের বৈশিষ্ট্য।”

“আমাদের মধ্যে একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল- একটা নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ। নতুন কিছু খুঁজতে চাওয়ার, আমরা যেটির নাম দিয়েছিলাম জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ। আমাদের মধ্যে একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল, নতুন কিছু করার আকাঙ্ক্ষা। কয়েকজন একত্র হলেই বলতাম, কিছু একটা করা যায় কি না।  আস্তে আস্তে লেখালেখি করে আমাদের চিন্তাগুলো সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিলাম।”

দল গঠ‌নের প্রেক্ষাপট তু‌লে ধ‌রে মঞ্জু ব‌লেন, “১৪ ফেব্রুয়ারি আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে যায়, যেটি নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনা হয়। তখনই আমরা সিদ্ধান্ত নেই, আমরা একটা ঘোষণাপত্র প্রকাশ করব।  এটি অনেক খ্যাতিমান গুণিজনকে পাঠিয়ে আমরা পরামর্শ নিই। তখন আমরা চিন্তা করে জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ নামক প্ল্যাটফর্ম করি। অনেক সলাপরামর্শ করে আমরা হোটেল ৭১-এ জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশের ঘোষণা দেই।” 

“ঘোষণা দেওয়ার প্রাক্কালে পুলিশি বাঁধার সম্মুখীন হই,  আমরা পুলিশি বাঁধা উপেক্ষা করে জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করি। সেদিন পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আমরা প্রোগ্রাম করি। সেদিনের যাত্রাটি আমরা সফলভাবে শুরু করতে পেরেছি। অনেক দুর্দশা মেনে নিয়ে আমরা নতুন প্ল্যাটফর্মের যাত্রা শুরু করি। ইনক্লুসিভ পলিটিক্স করার লক্ষ্যে আমরা নতুন প্ল্যাটফর্ম শুরু করি। আমরা এই উদ্যেগ নিয়ে তুর্কির সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করি। ইংল্যান্ডে একঝাঁক ব্যারিস্টার ও একাডেমিশিয়ানদের সঙ্গে  দীর্ঘ সলাপরামর্শ করি।”

মঞ্জু ব‌লেন,  “একটা পর্যায়ে আমরা পার্টির নাম ঠিক করি আমার বাংলাদেশ পার্টি।  আমরা আহ্বায়ক হিসেবে সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরীকে চূড়ান্ত করি। করোনার মধ্যেই আমরা রাজনৈতিক দল ঘোষণা করি। এবি পার্টি যদি কখনো ক্ষমতায় আসে, তাহলে বিশ্বের ইতিহাসে এবি পার্টির নাম লেখা থাকবে। পৃথিবীতে করোনার মধ্যে কোনো দল ঘোষণা হইছে কি না, আমার জানা নাই।”

“করোনার সময়ে দল ঘোষণা না করলে আমাদের উদ্যেগটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। আমাদের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ ছিল নিবন্ধন পাওয়া। আমাদের দলের চিন্তার সাথে পৃথিবীর দুজন রাষ্ট্রনায়কের চিন্তা জড়িত। একজন হচ্ছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়েপ এরদোয়ান, আরেকজন হচ্ছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।” 

তি‌নি ব‌লেন, “আমাদের নতুন দলটি ভাঙার অনেক  অপচেষ্টাও করা হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের মনোবল ছিল অনেক শক্ত ও চাঙ্গা, আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এবি পার্টির প্রত্যেকটি স্তরে স্তরে অনেক ধরনের সফলতা পেয়েছি, যা  আমাদের পার্টিকে আরো বেগবান করেছে।  সামনে আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পার্টির নেতাকর্মীদের দলীয় প্রচার-প্রচারণা বেশি বেশি করতে হবে।”

পার্টির তৎপরতা সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান রেখে মঞ্জু বলেন, “আজকে যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাদের ত্যাগ রয়েছে; তারা শ্রম দিয়েছেন বলেই তাদের গোটা দুনিয়া চিনছে।”

সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা.

ওহাব মিনার বলেন, “২০১৯ সালের ২৭শে এপ্রিলে আমরা এই প্ল্যাটফর্মটি গঠন করি। আমরা কি বিল্ডিংয়ের সব ম্যাকানিজম দেখতে পাই? একটা শূন্য থেকে আমরা লাফ দেওয়ার সাহস করেছিলাম বাট (কিন্তু) অন্যরা তা পারেননি। হুমকি-ধমকি জীবনাবসানের শঙ্কা- সব কিছুই আমাদের ক্ষেত্রে করা হয়েছিল।  সব কিছু উপেক্ষা করে আমরা উদ্যেগটি নিয়েছিলাম।”
“জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ আর এখনকার লোকজনের মধ্যে আমরা মিনিমাম ফারাক করব না।  আমরা এখনো আমাদের কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি।” 

“৫ আগস্টের আগে যেমন ঐক্য ছিল, এখন কিন্তু সেই ঐক্য নাই; যার ফলে ফ্যাসিস্ট মিছিল করার সাহস করে,” মনে করেন ডা. ওহাব মিনার। 

“আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য আমাদের সবকিছু ঢেলে দিতে হবে। আমাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য পৌঁছার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। টকশো-টিভি প্রোগ্রামের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট অংশের কাছে পৌঁছাতে পারি কিন্তু ১৮ কোটি এখনো বহুদূর। এমন কিছু  লিডার পেয়েছি, যাদের বক্তব্য-বিবৃতি অনুপ্রেরণার মতো কাজ করে। রাজনীতিতে এবি পার্টি নতুন নতুন মুখ উন্মুক্ত করবে বলে আশা করি।”

এবি পার্টির যুগ্ম  সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পার্টির নেতাদের মধ্যে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার জুবায়ের আহমেদ ভূইয়া, এবিএম খালিদ হাসান, ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, ব্যারিস্টার সানি আব্দুল হক, শ্যাডো অ্যাফেয়ার্স-বিষয়ক সম্পাদক আব্বাস ইসলাম খান নোমান, জাগপার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ জামাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা) আমজাদ খান, কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শাহ আব্দুর রহমান, ওবায়দুল্লাহ মামুন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা) শাহজাহান বেপারী, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা ও নারীবিষয়ক সহ-সম্পাদক আমেনা বেগম। 

 অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবি যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, ব্যাংকিং ও বেসরকারি খাত উন্নয়নবিষয়ক সহ-সম্পাদক হাবিবুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমাদ, সফিউল বাশার, শ্রমবিষয়ক সহ-সম্পাদক আজিজা সুলতানা, শিক্ষাবিষয়ক সহ-সম্পাদক ফয়সাল মনির, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক সহ-সম্পাদক মাসুদ জমাদ্দার রানা।

নারী উন্নয়নবিষয়ক সহ-সম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা, সহ-প্রচার সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, রিপন মাহমুদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক শরন চৌধুরী, মশিউর রহমান মিলু, যুব পার্টির দপ্তর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার রাসেল; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহ-সম্পাদক স্থপতি আবুল কালাম মাহমুদ, আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য মেহজাবিন হাজেরা, পল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সী, যাত্রাবাড়ী থানা আহ্বায়ক আরিফ সুলতানসহ কন্দ্রীয়, মহানগরী, যুবপার্টি ও ছাত্রপক্ষের বিভিন্ন পর্যায়ের  নেতারা।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জনআক ঙ ক ষ র ব প ল য টফর ম অন ষ ঠ ন র রহম ন সরক র র র জন য ন র জন আম দ র সদস য গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

চিনি-লবণের অনুপম পাঠ

চিনি আর লবণ– দুটিই সাদা ও ঝকঝকে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে এক হলেও তাদের স্বাদ সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই সরল অথচ গভীর সত্যটি আমাদের চারপাশের সমাজের প্রতিচ্ছবি। আজ যখন মানুষ শুভাকাঙ্ক্ষীর মুখোশ পরে এগিয়ে আসে, আমরা বুঝতে পারি না– কে চিনি, কে লবণ। এই বিভ্রমের মধ্য দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের চিরন্তন দ্বন্দ্ব। তার ফলে সমাজে জন্ম নিচ্ছে ভাঙন, ক্ষয় ও ব্যথার করুণ কাব্য।

শুভাকাঙ্ক্ষী সেজে প্রতারণার ছায়া আজ সমাজের অলিগলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কখনও বন্ধুত্বের আবরণে, কখনও আত্মীয়তার মোড়কে, আবার কখনও নির্ভরতার চাদরে ঢাকা পড়ে থাকা বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের বারবার আহত করে। রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষাঙ্গন বা পারিবারিক জীবন– বিশ্বাসের অবক্ষয়ের নির্মম চিত্র আজ সর্বত্র বিদ্যমান। সবচেয়ে আপন বলে যার হাত ধরেছি, সেই হাত কখন যে ছুরি হয়ে ফিরে আসে– বলা দুষ্কর।

সম্প্রতি রাজধানীর উপকণ্ঠে ঘটে যাওয়া এক ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। বৃদ্ধ মা তাঁর তিন সন্তানকে অকুণ্ঠ বিশ্বাস করে সব সম্পত্তি লিখে দেন। সন্তানরা কথা দিয়েছিল– শেষ দিন পর্যন্ত মায়ের পাশে থাকবে। কিন্তু দলিলের কালি শুকানোর আগেই মাকে উঠিয়ে দেওয়া হয় বৃদ্ধাশ্রমে। মায়ের চোখের জল তখন ছিল মূল্যহীন; সম্পদের নেশাই ছিল মূল।

অন্যদিকে দীর্ঘদিনের ‘বিশ্বস্ত’ বন্ধু ব্যবসার আড়ালে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে অদৃশ্য হয়েছে রাতের অন্ধকারে। এসব গল্প আজ প্রতিটি নগর-পল্লীর অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছে। সম্পর্কের পবিত্রতা আজ যেন লোভ ও মুনাফার কাছে নতজানু।

বিশ্বাসভঙ্গের যন্ত্রণা কোনো দাগের মতো নয়, যা সময়ের সঙ্গে মুছে যায়। বরং এটি মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। একজনের আঘাত শুধু তার নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না; ছড়িয়ে পড়ে সমাজজুড়ে। গড়ে ওঠে এক অবিশ্বাসের দেয়াল, যেখানে একে অপরকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়। সম্পর্কের উষ্ণতা ক্রমে ঠান্ডা হতে হতে বরফে পরিণত হয়, যা গলাতে লাগে যুগের পর যুগ।

ভোগবাদী সভ্যতা মানুষকে করে তুলেছে আত্মকেন্দ্রিক। মূল্যবোধের অবক্ষয়, নৈতিকতার সংকট এবং তাৎক্ষণিক লাভের মোহে সম্পর্কও আজ মুনাফার মাপে মাপা হয়। বন্ধুত্ব, আত্মীয়তা, প্রেম– সবকিছু যেন পরিণত হয়েছে একেকটি চুক্তিতে। ‘কে কতটা কাজে লাগবে’– এই প্রশ্নই আজ সম্পর্কের মানদণ্ড। তবে সব আলো নিভে যায়নি। অন্ধকার যত গভীর হোক, এক টুকরো মোমবাতি গোটা ঘর আলোকিত করতে পারে। এই সংকটময় সময়ে আমাদের প্রয়োজন আত্মসমালোচনা ও মূল্যবোধের পুনর্জাগরণ। ব্যক্তিগতভাবে সতর্ক হতে হবে। কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস না করে, যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আবেগের তাড়নায় নয়, বিবেকের আলোয় বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। পারিবারিক শিক্ষাকে মজবুত করতে হবে। শিশুর মনে শৈশব থেকেই সততা, বিশ্বস্ততা ও মানবিকতার বীজ বপন করতে হবে। পরিবারই হচ্ছে ব্যক্তিত্ব গঠনের মূল কেন্দ্র। তা ছাড়া রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে সমাজে ন্যায়বোধ প্রতিষ্ঠা পায়। পাশাপাশি গণমাধ্যম ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে নৈতিক চেতনা জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। তবু এই অন্ধকারে কিছু আলোকবর্তিকা রয়েছেন, যারা এখনও বিশ্বাসের মানদণ্ডে অবিচল। যাদের জীবন শুধু নিজের জন্য নয়, অপরের কল্যাণে নিবেদিত। সংকটে পাশে দাঁড়ানো, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা বিলানো– এটাই তাদের ধর্ম। এরা প্রমাণ করে– বিশ্বাস এখনও বিলুপ্ত হয়নি পুরোপুরি। শুধু খুঁজে নিতে জানতে হবে।

পরিশেষে, চিনি ও লবণের বাহ্যিক সাদার ভ্রম নয়, আসল স্বাদ বোঝার সক্ষমতা অর্জন করাই আজ সময়ের দাবি। মানুষকে তার কার্যকলাপের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করতে হবে; বাহ্যিক মোহের ফাঁদে পা না দিয়ে। অন্ধবিশ্বাস নয়– সচেতন, বিবেকবান বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে গড়ে তুলতে হবে সম্পর্কের ভিত।

মুহাম্মদ ইমাদুল হক প্রিন্স: ডেপুটি রেজিস্ট্রার, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ