রাজবাড়ীর পদ্মা নদী থেকে মাথাবিহীন লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলাটি করেন সহিদ সরকার নামের এক ব্যক্তি। তিনি লাশটিকে নিজের নিখোঁজ সন্তান জিহাদ সরদারের বলে দাবি করেছেন।

এর আগে গত রোববার দুপুরের দিকে গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চর বরাট পদ্মা নদীর শাখা ক্যানাল থেকে মাথাবিহীন লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় করা মামলায় আসামি হিসেবে তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন নারী। বাকি দুজন হলেন স্থানীয় বাসিন্দা হৃদয় (২৪) ও জিহাদের চাচাতো ভাই সোহাগ সরদার (২৭)। আসামিদের মধ্যে সোহাগকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আজ মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুনপদ্মায় ভাসছিল মাথাবিহীন মরদেহ, নিখোঁজ যুবকের পরিবারের আহাজারি২৭ এপ্রিল ২০২৫

লাশ উদ্ধারের দুই দিন পরও মাথা উদ্ধার করা যায়নি। তবে পরনের পোশাক ও শরীরের বিভিন্ন চিহ্ন দেখে লাশটিকে নিখোঁজ জিহাদের বলে দাবি করে পরিবার। জিহাদ গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউপির কাসরন্দ গ্রামের বাসিন্দা। রাজধানী ঢাকায় একটি জাহাজ মেরামত কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি বাড়িতে আসেন। ওই রাতে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তিনি। পরদিন গোয়ালন্দ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তাঁর পরিবারের লোকজন।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদী থেকে উদ্ধার লাশটিকে নিখোঁজ জিহাদের বলে তাঁর পরিবার শনাক্ত করলেও পুলিশ নিশ্চিত হতে ডিএনএর নমুনা রাজধানী ঢাকায় পাঠিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মামলার আসামি ওই নারীর সঙ্গে জিহাদের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। জিহাদ ঢাকায় থাকতেন। একপর্যায়ে হৃদয় ও সোহাগের সঙ্গে ওই নারী সম্পর্ক গড়ে উঠে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরেন জিহাদ। ধারণা করা হচ্ছে, ওই দিন গভীর রাতে ওই গৃহবধূর সঙ্গে দেখা করতে গেলে হৃদয়, সোহাগসহ কয়েকজন মিলে জিহাদকে নদীর পাড়ে নিয়ে হত্যা করেন। তবে গ্রেপ্তার সোহাগ বিষয়টি স্বীকার করেননি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গঙ্গাচড়ায় হিন্দুবাড়িতে হামলা ঠেকাতে ‘পর্যাপ্ত’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন