গাজীপুরে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে হত্যার অভিযোগে করা তিনটি মামলায় সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি, কামরুল ইসলাম, সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহ্‌মেদসহ (পলক) চারজনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। আজ বুধবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এ হাজির করা হলে বিচারক ওমর হায়দার এসব মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ২২ এপ্রিল একই মামলায় ওই চারজনসহ মোট ছয়জনকে আদালতে হাজির করা হয়। সেদিন আদালত চত্বরে ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয় এবং আসামিদের উদ্দেশে ডিম নিক্ষেপ করা হয়। আজ অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আদালতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, অভ্যুত্থানের সময় গাজীপুরের গাছা এলাকায় ছয়জন নিহত হন। এ ঘটনায় গাছা থানায় আলাদা তিনটি হত্যা মামলা করা হয়। এসব মামলার আসামি দীপু মনি, কামরুল ইসলাম, সাধন চন্দ্র মজুমদার ও জুনায়েদ আহ্‌মেদকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন আদালত ৩ আদালতে আনা হয়। শুনানি শেষে তাঁদের পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আজ সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দীপু মনি, সাধন চন্দ্র মজুমদার, জুনায়েদ আহ্‌মেদকে এবং কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কামরুল ইসলামকে পুলিশ প্রিজন ভ্যানে আদালতে হাজির করা হয়। সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে বিচারক ওই মামলায় তাঁদের আবার কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আলী মো.

রাশেদ বলেন, মামলায় হাজিরা দেওয়ার জন্য তাঁদের কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়েছিল। আদালতের কাজ শেষে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ জ র কর

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ