পুলিশের উপস্থিতিতে পল্লি চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ, ৩ দিনেও মেলেনি খোঁজ
Published: 5th, May 2025 GMT
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে তরিকুল ইসলাম (৩৫) নামের এক পল্লি চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। এর পর তিন দিনেও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।
গত শুক্রবার (২ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের হাতি চামটার ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি তরিকুল ইসলামকে টেনেহিঁচড়ে একটি অটোভ্যানে তুলছেন। অপহরণের সময় সেখানে মাথায় হেলমেট এবং পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে ছিলেন। আশপাশে আরো কয়েকজন মানুষ ছিলেন। তরিকুল তাদের সাহায্য চাইলেও তারা এগিয়ে আসেননি। এক ব্যক্তি ভ্যানটি চালিয়ে নিয়ে যান। দুর্বৃত্তদের বলতে শোনা যায়, ‘এখানে প্রশাসনের লোক আছে।’
অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলাম ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর কুটিপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। ভাতগ্রাম বাজারে তার চেম্বার ও ওষুধের দোকান আছে। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করতেন।
অপহরণের পর তিন দিন পার হলেও পুলিশ তরিকুল ইসলামকে উদ্ধার করতে না পারায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বজনরা। অপহরণকারীরা কয়েক বার ফোন দিয়ে অপহৃত তরিকুলের ছোট ভাই হিরুর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে তরিকুলের ছোট ভাই হিরু মিয়া সাদুল্লাপুর থানায় আট জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত সাত-আট জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, তরিকুল ইসলামের ওষুধের দোকানে সুমন নামের এক ব্যক্তি ৬ মাস কাজ করেছেন। তাকে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হলে বিভিন্ন অজুহাতে তিনি টাকা দাবি করে আসছিলেন তরিকুলের কাছে। এ নিয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকও হয়। গত শুক্রবার বিকেলে তরিকুল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে ভাতগ্রাম বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে সুমনসহ স্থানীয় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক অটোভ্যানে তুলে নিয়ে যান।
বাদী হিরু মিয়া বলেছেন, অভিযোগ দেওয়ার দুই দিন পরও আমার ভাইকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ, সেখানে সাদুল্লাপুর থানার এক এএসআই উপস্থিত ছিলেন। অপহরণকারীরা সবার পরিচিত। দিনে দুপুরে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কারণে ভাইকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি আমরা। তার দুই মেয়ে শুধু কাঁদছে।
তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ রবিবার দুপুরে অপহৃত তরিকুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোন থেকে দুর্বৃত্তরা ফোন করে মোটা অংকের টাকা দাবি করেছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, আমার বড় ভাইকে দ্রুত উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হোক।
রবিবার রাতে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার সাংবাদিকদের বলেছেন, অপহরণের সময় পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তির উপস্থিতির কথা শুনেছি। কিন্তু, স্পষ্ট নয়। অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলামকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলছে।
ঢাকা/মাসুম/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণ র উপস থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
রাঙামাটিতে নারী সমাবেশে অংশ নেওয়া অতিথিদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি
রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় নারী সমাবেশে অংশ নেওয়া অতিথিদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও ছাত্র-জনতা সংগ্রাম পরিষদ।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। কল্পনা চাকমা অপহরণের ২৯ বছর পূর্তিতে গত বৃহস্পতিবার কাউখালীতে নারী সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে ঢাকায় ফেরার পথে তিন অতিথির ওপর হামলার প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কল্পনা চাকমার অপহরণ দিবসে রাঙামাটিতে সমাবেশ শেষে ঢাকায় ফেরার পথে বেতছড়ি এলাকায় তিনজন অতিথির ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা করে। কাউখালী ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক নাঈম হোসেনের নেতৃত্বে এ হামলা হয়। অবিলম্বে তাঁদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানানো হয় লিখিত বক্তব্যে।
সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেন, ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার কথা ছিল। পাহাড় ও সমতলে সবার সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা ছিল; কিন্তু আগের মতোই তারা হামলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। রাঙামাটিতে তিন অতিথির ওপর হামলা এ কথাই প্রমাণ করে।
এ সময় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষক অলিউর সান বলেন, হামলার সময় কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুর রহমানকে ফোন করা হয়। তিনি নানা অজুহাতে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরদিন অনলাইনে একটি জিডি করতে চাইলেও করা যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য ও হামলার শিকার মারজিয়া প্রভা।
এ সময় বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে হামলার শিকার বাসের চালকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া, হামলাকারীদের সহযোগিতার জন্য প্রশাসনকে জবাবদিহি করা, কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার ও বিচার কার্যকর করা, সাধারণ জনগণকে হয়রানি বন্ধ করা ও সাম্প্রদায়িক উসকানি বন্ধ করা ইত্যাদি।