গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে তরিকুল ইসলাম (৩৫) নামের এক পল্লি চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। এর পর তিন দিনেও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

গত শুক্রবার (২ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের হাতি চামটার ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি তরিকুল ইসলামকে টেনেহিঁচড়ে একটি অটোভ্যানে তুলছেন। অপহরণের সময় সেখানে মাথায় হেলমেট এবং পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে ছিলেন। আশপাশে আরো কয়েকজন মানুষ ছিলেন। তরিকুল তাদের সাহায্য চাইলেও তারা এগিয়ে আসেননি। এক ব্যক্তি ভ্যানটি চালিয়ে নিয়ে যান। দুর্বৃত্তদের বলতে শোনা যায়, ‘এখানে প্রশাসনের লোক আছে।’ 

অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলাম ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর কুটিপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। ভাতগ্রাম বাজারে তার চেম্বার ও ওষুধের দোকান আছে। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করতেন।

অপহরণের পর তিন দিন পার হলেও পুলিশ তরিকুল ইসলামকে উদ্ধার করতে না পারায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বজনরা। অপহরণকারীরা কয়েক বার ফোন দিয়ে অপহৃত তরিকুলের ছোট ভাই হিরুর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। 

এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে তরিকুলের ছোট ভাই হিরু মিয়া সাদুল্লাপুর থানায় আট জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত সাত-আট জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, তরিকুল ইসলামের ওষুধের দোকানে সুমন নামের এক ব্যক্তি ৬ মাস কাজ করেছেন। তাকে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হলে বিভিন্ন অজুহাতে তিনি টাকা দাবি করে আসছিলেন তরিকুলের কাছে। এ নিয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকও হয়। গত শুক্রবার বিকেলে তরিকুল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে ভাতগ্রাম বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে সুমনসহ স্থানীয় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক অটোভ্যানে তুলে নিয়ে যান।

বাদী হিরু মিয়া বলেছেন, অভিযোগ দেওয়ার দুই দিন পরও আমার ভাইকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ, সেখানে সাদুল্লাপুর থানার এক এএসআই উপস্থিত ছিলেন। অপহরণকারীরা সবার পরিচিত। দিনে দুপুরে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কারণে ভাইকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি আমরা। তার দুই মেয়ে শুধু কাঁদছে। 

তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ রবিবার দুপুরে অপহৃত তরিকুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোন থেকে দুর্বৃত্তরা ফোন করে মোটা অংকের টাকা দাবি করেছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, আমার বড় ভাইকে দ্রুত উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হোক। 

রবিবার রাতে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার সাংবাদিকদের বলেছেন, অপহরণের সময় পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তির উপস্থিতির কথা শুনেছি। কিন্তু, স্পষ্ট নয়। অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলামকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলছে। 

ঢাকা/মাসুম/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণ র উপস থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

স্বামীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, স্ত্রীসহ কারাগারে ৬

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে স্বামীকে অপহরণ করে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে স্ত্রীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাদল কুমার চন্দ তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন— মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের মীর দেওহাটা গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে হাসান মোল্লা (৩৪), মৃত আতোয়ার হোসেনের ছেলে ইমরান হোসেন (২৫), একই এলাকার রহিম সিকদারের ছেলে জহিরুল ইসলাম (২৪), কোদালিয়া গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে মো. রানা (২০), বহুরিয়া ইউনিয়নের বহুরিয়া গ্রামের মঙ্গল সিকদারের ছেলে আরিফ (৩৩) এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন তালচানা গ্রামের আলকেসের মেয়ে আকলিমা বেগম (৪০)। তাদের মধ্যে আকলিমা অপহরণের শিকার রহিম মিয়ার স্ত্রী। 

আরো পড়ুন:

সোহাগ হত্যা মামলা: গ্রেপ্তার আরো ২

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সব থানায় চালু হচ্ছে অনলাইন জিডি

শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রাম থেকে অপহৃত রহিম মিয়াকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় সেখান থেকে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে, অপহরণে নেতৃত্ব দেওয়া রাকিব হোসেন (১৮) পালিয়ে যায়। পুলিশ তাকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশ

জানিয়েছে, একই ইটভাটায় কাজ করার সময় আব্দুর রহিমের সঙ্গে গ্রেপ্তার আকলিমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তারা বিয়ে করেন। ইটভাটায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পর আব্দুর রহিম নিজ এলাকায় চলে যান। সেখানে তার আরেক স্ত্রী আছেন। 

ছয়-সাত মাস ধরে যোগাযোগ না করায় আব্দুর রহিমকে শায়েস্তা করার ফন্দি আঁটেন আকলিমা। ফোন করে তাকে মির্জাপুরে আসতে বলেন তিনি। মির্জাপুরে আকলিমার ভাড়া বাসায় আসার পরপরই রাকিব হোসেনের নেতৃত্বে অন্যরা আব্দুর রহিমকে মারধর করেন এবং গোড়াই পালপাড়ার একটি বাড়িতে নিয়ে জিম্মি করেন। এর পর তার স্বজনদের কাছে ফোন করে ৪ লাখ টাকা দাবি করা হয়। জিম্মি আব্দুর রহিমের স্বজনরা ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান নির্ণয় করে দ্রুত অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ঢাকা/কাওছার/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাটহাজারীতে সালিসে মারধরে কিশোরীর বাবা নিহতের ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি
  • কিশোরীকে অপহরণের পর বিয়ে, সালিসে বাবাকে পিটিয়ে হত্যা
  • অপহরণ থেকে বাঁচতে ৪ লাখ টাকা, ১১ ভরি স্বর্ণসহ ব্যাগটি ছুড়ে ফেলেন তিনি
  • স্বামীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, স্ত্রীসহ কারাগারে ৬
  • আড়াইহাজারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে অপহরণ : ৯ ঘণ্টা পর উদ্ধার
  • নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে সৌদিপ্রবাসীর অপহৃত শিশুসন্তান উদ্ধার