গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে তরিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক পল্লী চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের হাতি চামটার ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করেন দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

ভিডিওতে দেখা যায়, মাথায় হেলমেট এবং পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার সামনেই কয়েকজন ব্যক্তি তরিকুল ইসলামকে টেনে-হিঁচড়ে একটি অটোভ্যানে তুলছেন। এ সময় আশপাশের কয়েকজন তাকিয়ে দেখেন। তরিকুল তাদের সাহায্য চাইলেও সবাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তদের একজনকে বলতে শোনা যায়, 'এ এখানে প্রশাসনের লোক আছে।' 

অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলাম ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর কুটিপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। ভাতগ্রাম বাজারে পল্লি চিকিৎসক হিসেবে তার চেম্বার ও ওষুধের দোকান রয়েছে। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করতেন।

এদিকে অপহরণের দুইদিন পার হলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে না পারায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বজনরা। তবে অপহরণকারীরা এ পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ বার ফোন দিয়ে অপহৃত তরিকুলের ছোটভাই হিরুর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। 

এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে পল্লী চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া সাদুল্লাপুর থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও সাত-আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তরিকুল ইসলামের ঔষধের দোকানে সুমন নামে এক ব্যক্তি ৬ মাস কাজ করেছেন। পরে তাকে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হলে বিভিন্ন অজুহাতে তিনি  টাকা দাবি করে আসছিলেন দোকান মালিক তরিকুলের কাছে। এ নিয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে শালিসি বৈঠকও হয়। গত শুক্রবার বিকেলে তরিকুল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ভাতগ্রাম বাজারে তার দোকানে যাচ্ছিলেন। পথে সুমনসহ স্থানীয় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক তাকে অটোরিকশা ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়।

পল্লি চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া বলেন, অভিযোগ দেওয়ার দুইদিন হয়ে গেল, এখনো আমার ভাইকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ সেখানে সাদুল্লাপুর থানার একজন এএসআই উপস্থিত ছিলেন। অপহরণকারীরা সবার পরিচিত। দিনে দুপুরে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কারণে ভাইকে নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি আমরা। তার দুই মেয়ে শুধু কাঁদছে। 

তিনি আরও বলেন, সবশেষ রোববার দুপুরে অপহৃত তরিকুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোন থেকে দুর্বৃত্তরা ফোন করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন। প্রশাসনের কাছে তার বড়ভাইকে দ্রুত উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। 

রোববার রাত ৯টায় সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার সমকালকে বলেন, ‘অপহরণের সময় পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তির উপস্থিতির কথা শুনেছি। কিন্তু স্পষ্ট নয়। অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলামকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলামান রয়েছে।’ 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অপহরণ অপহরণ র উপস থ ত চ ক ৎসক কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

টেকনাফে অস্ত্র-মাদকসহ ২৮ মামলার আসামি ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, মাদক, অপহরণসহ ২৮ মামলার পলাতক আসামি ও ইউপি সদস্য নুরুল হুদাকে ( ৪৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা গ্রামে এ অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তার নুরুল হুদা হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং ওই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর প্রথম আলোকে বলেন, ইউপি সদস্য নুরুল হুদা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক পাচারকারী। টেকনাফে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণকারী ১০২ জন মাদক পাচারকারীর মধ্যে নুরুল হুদাও ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় ১৬টি মাদক, একটি অপহরণ, ৩টি অস্ত্র, একটি বিশেষ ক্ষমতা আইন, চারটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলাসহ মোট ২৮টি মামলা রয়েছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হুদা দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি এলাকায় এসে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। গোপন সংবাদের ভিত্তিকে গতকাল রাতে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

পুলিশ জানায়, আজ শনিবার বিকেলে ইউপি সদস্য নুরুল হুদাকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত বুধবার রাতে পুলিশ টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রাজারছড়া গ্রামের বাসিন্দা ও একই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রশিদ মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ইউপি সদস্য রশিদ মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, মানব পাচার, বিস্ফোরক ও নাশকতার পাঁচটি মামলা রয়েছে। তিনি টেকনাফ উপজেলার যুবলীগের সদস্য ছিলেন।

পৃথক অভিযানে টেকনাফের দুই ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) অলক বিশ্বাস। তিনি বলেন, সরকার মাদক চোরাচালান দমনে কঠোর অবস্থানে। মাদক ও মানব পাচারকারীদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টেকনাফে অস্ত্র-মাদকসহ ২৮ মামলার আসামি ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার