সমকাল সুহৃদ সমাবেশের কার্যক্রমকে আরও বেগবান করতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৪৫ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটিতে ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রাকিবকে সভাপতি ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সাফা খাতুন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

বুধবার সুহৃদ সমাবেশের বার্ষিক সাধারণ সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও সমকাল জবি প্রতিনিধি ইমরান হুসাইন নবগঠিত কমিটির নাম ঘোষণা করেন। কমিটি গঠনের ফলে পুরোনো ও নতুন সুহৃদ সদস্যরা একত্র হন এবং সর্বসম্মতিক্রমে নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে একমত পোষণ করেন।

এ সময় নবনির্বাচিত সভাপতি রাকিব বলেন, ‘আমরা নানাভাবে এগিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু আমাদের মৌলিকত্ব হারাচ্ছে। সুহৃদরা সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও জ্ঞানচর্চার মৌলিকত্বকে ধরে রাখতে চান। সমকাল তার জন্মলগ্ন ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সেই কাজের অন্যতম অংশীদার সুহৃদ সমাবেশ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশজুড়ে সুহৃদদের সঙ্গে সমানতালে কাজ করে যাবে– এটাই আমাদের প্রত্যয়।’

‎নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সাফা খাতুন বলেন, ‘আজ আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হলো, সেই দায়িত্ব শতভাগ পালন করার চেষ্টা করব। ঈদের পর ক্যাম্পাসে নতুন কর্মসূচি আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমাদের এ কমিটির কাজ শুরু হবে। আশা করি, সব সুহৃদ সেই কাজে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবেন।’

কমিটি ঘোষণা শেষে সমাপনী বক্তব্যে ইমরান হুসাইন সুহৃদদের উদ্দেশে বলেন, ‘সুহৃদ সমাবেশ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক সংগঠন হিসেবে দেশজুড়ে যে খ্যাতি অর্জন করেছে, জবি সুহৃদদের সেই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সংগঠন চর্চার মাধ্যমে সব ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। কথায় নয়, এটি কাজে প্রমাণ করতে হবে।’ 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

চবিতে ৬ ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, একজনের স্থায়ী বহিষ্কার বহাল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত ১০ ছাত্রীকে বহিষ্কারের  ঘটনায় সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এনেছে কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে ছয়জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর তিন ছাত্রীর বহিষ্কারের মেয়াদ দুই বছর থেকে কমিয়ে ছয় মাস করা হয়েছে। বাকি এক ছাত্রীর স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বহাল থাকছে। তিন মাস পর সিদ্ধান্তে পরিবর্তন ও তিন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ বহাল রাখার কারণে সমালোচনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন। ছয় মাস বহিষ্কারাদেশ বহাল থাকা ছাত্রীদের দু’জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স আর একজন মার্কেটিং বিভাগের ছাত্রী। আর স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ বহাল থাকা ছাত্রী আইন বিভাগের।   

এ বিষয়ে অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন সমকালকে বলেন, বিজয় ২৪ হলের (পূর্ব নাম জননেত্রী শেখ হাসিনা হল) ঘটনায় যে ১০ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছিল, সে সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এসেছে। শিক্ষককে শারীরিক লাঞ্ছনা করা এক ছাত্রীর স্থায়ী বহিষ্কারের আদেশ বহাল থাকছে। ছয়জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকি তিনজনের বহিষ্কারাদেশ কমিয়ে ছয় মাস করা হয়েছে। এই বহিষ্কারের আদেশ ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছাত্রীদের আবাসিক বিজয় ২৪ হলের সামনে রাখা নৌকা আকৃতির বসার স্থান ভাঙচুর করতে যাওয়া কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিতণ্ডা হয় আবাসিক ছাত্রীদের। এ সময় সহকারী প্রক্টরকে শারীরিক লাঞ্ছনা এবং ও ধর্ম অবমাননার কারণে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ১২ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১১ জনই ছাত্রী। এর মধ্যে ১০ জন ছাত্রীকে ৫ ফেব্রুয়ারি রাতের ঘটনায় বহিষ্কার করা হয়েছিল। এই বহিষ্কারের ঘটনায় সারাদেশে বিভিন্ন পক্ষের সমালোচনার মুখে ওই ১০ শিক্ষার্থীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়। স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীর সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে আজ সিদ্ধান্তে আবারও পরিবর্তন আনা হয়েছে।

এ ঘটনায় ছাত্রীদের অভিযোগ, তারা নৌকা ভাঙার বিপক্ষে ছিলেন না। বরং প্রশাসন যেন এটি ভাঙে, সে দাবি করেছিলেন। এ জন্য তারা আগেই প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তবে প্রশাসন সেটি ভাঙেনি। উল্টো মধ্যরাতে একদল শিক্ষার্থী সেটি ভাঙতে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছে। এসব ঘটনায় হলের আবাসিক শিক্ষক ও প্রক্টরিয়াল বডিকে ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে সেদিন রাতে উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে প্রতিবাদ জানাতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ড. মোহাম্মদ কুরবান আলির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে সহকারী প্রক্টর কোরবান আলীকে শারীরিক লাঞ্ছনা করতে দেখা যায় এক ছাত্রীকে। এ ছাড়া কয়েকটি ভিডিওতে প্রক্টরিয়াল বডির একাধিক সদস্যকে ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে দেখা গেছে।

এর মধ্যে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ওই ছাত্রীদের বহিষ্কার করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রক্টর উসকানিমূলক বার্তা দিয়েছেন কিছু শিক্ষার্থীকে। ছড়িয়ে পড়া এসব স্ক্রিনশটে ছিল সহকারী প্রক্টর কোরবান আলী ও নুরুল হামিদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর কথোপকথন।

ফেসবুকের মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তায় দেখা যায়, এই দুই প্রক্টর ওই ১০ ছাত্রীকে বহিষ্কারের জন্য ‘প্রশাসনকে চাপ দিতে’ বলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ