বিশ্বজুড়ে কলোরেক্টাল ক্যানসার সবচেয়ে গুরুতর ক্যানসারগুলোর মধ্যে একটি। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে এ ক্যানসার থেকে সুস্থ হয়ে ফেরার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কলোরেক্টাল ক্যানসারের বেশ কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, খাদ্যাভ্যাস যেমন উচ্চচর্বিযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার বেশি খাওয়া, ধূমপান, তামাক গ্রহণ ইত্যাদি।

‘বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে। সবার ভেতর ক্যানসার-বিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে এই পর্বের আয়োজন করে এসকেএফ অনকোলজি। ২১ মে আলোচনা পর্বটি সম্প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম, প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলোজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।

এ পর্বে অতিথি হিসেবে ছিলেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অনকোলজি বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা.

মুকিতুল হুদা। আলোচনার বিষয় ছিল ‘কলোরেক্টাল ক্যানসার সচেতনতা’। আলোচনায় সঞ্চালক ছিলেন উপস্থাপক নাসিহা তাহসিন। বাংলাদেশে কলোরেক্টাল ক্যানসারের বর্তমান পরিস্থিতি, ডায়াগনোসিস, আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা, সচেতনতা ও প্রতিরোধব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেন ডা. মুকিতুল হুদা।

শুরুতেই উপস্থাপক জানতে চান, বাংলাদেশে কলোরেক্টাল ক্যানসারের পরিসংখ্যান কেমন? উত্তরে ডা. মুকিতুল হুদা বলেন, ‘ঝুঁকির দিক দিয়ে সব ক্যানসারের মধ্যে কলোরেক্টাল ক্যানসারের অবস্থান তৃতীয়। প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে গড়ে তিনজন এই ক্যানসারে আক্রান্ত। অর্থাৎ, বাংলাদেশে যদি ২০ কোটি মানুষ থাকে, তাহলে গড়ে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ কলোরেক্টাল ক্যানসারে আক্রান্ত।’

কলোরেক্টাল ক্যানসারের লক্ষণগুলো সম্পর্কে মুকিতুল হুদা বলেন, প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শরীর দুর্বল হয়ে যায়, মলের রঙ কালো হয়ে যায়, তলপেটে ব্যথা অনুভূত হয়। তবে কলোরেক্টাল ক্যানসার গুরুতর পর্যায়ে চলে গেলে মলদ্বার দিয়ে রক্ত যেতে পারে এবং খাদ্যনালিতে অবস্ট্রাকশন দেখা দিতে পারে। এভাবে দেহ থেকে রক্ত বের হয়ে যেতে যেতে একসময় অ্যানিমিয়া দেখা দিতে পারে।

কলোরেক্টাল ক্যানসারের নির্ণয়প্রক্রিয়া সম্পর্কে মুকিতুল হুদা বলেন, নির্ণয়ের প্রাথমিক পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে মলের পরীক্ষা (স্টুল টেস্ট) করে দেখা যে সেখানে রক্তকণিকা আছে কি না। যদি রক্তকণিকা পাওয়া যায়, তবে কোলনে কোনো সমস্যা থাকতে পারে বলে ধরে নেওয়া হয়।

কলোরেক্টাল ক্যানসারের রিস্ক ফ্যাক্টর বা ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে মুকিতুল হুদা বলেন, কলোরেক্টাল ক্যানসারের বেশ কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা, যেমন উচ্চচর্বিযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার বেশি খাওয়া, ধূমপান, তামাক গ্রহণ ইত্যাদি। এ ছাড়া পরিবারে কারও কলোরেক্টাল ক্যানসার বা পলিপ থাকলেও কলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। সেই সঙ্গে কোলনের ভেতর ছোট ছোট পলিপ তৈরি হলে পরবর্তীকালে এটি থেকে ক্যানসার সৃষ্টি হতে পারে। এপিসি জিনের মিউটেশন বংশপরম্পরায় এই ঝুঁকি বাড়ায়।

প্রসঙ্গক্রমে উপস্থাপক জানান, এসকেএফ অনকোলজি বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র ইউজিএমপি ও অ্যানভিজা ব্রাজিল অনুমোদিত প্ল্যান্ট। ফলে এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় ২৭টি দেশে এবং দক্ষিণ আমেরিকায় রপ্তানি হচ্ছে।

বাংলাদেশে কলোরেক্টাল ক্যানসারের বর্তমান পরিস্থিতি, ডায়াগনোসিস, আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা, সচেতনতা ও প্রতিরোধব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেন ডা. মুকিতুল হুদা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ অনক ল

এছাড়াও পড়ুন:

২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে: আপ বাংলাদেশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত না হলে তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। এ সময় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির

জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর

দাবিগুলো হলো— আসন্ন জকসু নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত করতে হবে; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে; সব সংগঠনকে সমান সুযোগ দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে; অরাজনৈতিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবির প্রধান সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, “আমরা যখন জকসুর দাবিতে অনশন করছিলাম, তখন প্রশাসন ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের অনশন ভাঙিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একটি মহল নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে।”

তিনি বলেন, “ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা ও বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় ওই মাসে নির্বাচন অসম্ভব। তাই ২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচনের উপযুক্ত সময়।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা জানতে চাই, নির্বাচন পেছানোর মধ্য দিয়ে জকসু নির্বাচন ভণ্ডুল করার কোনো প্রক্রিয়া চলছে কিনা। পুরান ঢাকাকে অস্থিতিশীল করে একটি মহল নির্বাচন পণ্ড করতে চায়। শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম ভোট হবে জকসু নির্বাচন—তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ