প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে কলোরেক্টাল ক্যানসারে সুস্থতার সম্ভাবনা অনেক বেশি
Published: 26th, May 2025 GMT
বিশ্বজুড়ে কলোরেক্টাল ক্যানসার সবচেয়ে গুরুতর ক্যানসারগুলোর মধ্যে একটি। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে এ ক্যানসার থেকে সুস্থ হয়ে ফেরার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কলোরেক্টাল ক্যানসারের বেশ কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, খাদ্যাভ্যাস যেমন উচ্চচর্বিযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার বেশি খাওয়া, ধূমপান, তামাক গ্রহণ ইত্যাদি।
‘বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে। সবার ভেতর ক্যানসার-বিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে এই পর্বের আয়োজন করে এসকেএফ অনকোলজি। ২১ মে আলোচনা পর্বটি সম্প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম, প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলোজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
এ পর্বে অতিথি হিসেবে ছিলেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অনকোলজি বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা.
শুরুতেই উপস্থাপক জানতে চান, বাংলাদেশে কলোরেক্টাল ক্যানসারের পরিসংখ্যান কেমন? উত্তরে ডা. মুকিতুল হুদা বলেন, ‘ঝুঁকির দিক দিয়ে সব ক্যানসারের মধ্যে কলোরেক্টাল ক্যানসারের অবস্থান তৃতীয়। প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে গড়ে তিনজন এই ক্যানসারে আক্রান্ত। অর্থাৎ, বাংলাদেশে যদি ২০ কোটি মানুষ থাকে, তাহলে গড়ে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ কলোরেক্টাল ক্যানসারে আক্রান্ত।’
কলোরেক্টাল ক্যানসারের লক্ষণগুলো সম্পর্কে মুকিতুল হুদা বলেন, প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শরীর দুর্বল হয়ে যায়, মলের রঙ কালো হয়ে যায়, তলপেটে ব্যথা অনুভূত হয়। তবে কলোরেক্টাল ক্যানসার গুরুতর পর্যায়ে চলে গেলে মলদ্বার দিয়ে রক্ত যেতে পারে এবং খাদ্যনালিতে অবস্ট্রাকশন দেখা দিতে পারে। এভাবে দেহ থেকে রক্ত বের হয়ে যেতে যেতে একসময় অ্যানিমিয়া দেখা দিতে পারে।
কলোরেক্টাল ক্যানসারের নির্ণয়প্রক্রিয়া সম্পর্কে মুকিতুল হুদা বলেন, নির্ণয়ের প্রাথমিক পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে মলের পরীক্ষা (স্টুল টেস্ট) করে দেখা যে সেখানে রক্তকণিকা আছে কি না। যদি রক্তকণিকা পাওয়া যায়, তবে কোলনে কোনো সমস্যা থাকতে পারে বলে ধরে নেওয়া হয়।
কলোরেক্টাল ক্যানসারের রিস্ক ফ্যাক্টর বা ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে মুকিতুল হুদা বলেন, কলোরেক্টাল ক্যানসারের বেশ কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা, যেমন উচ্চচর্বিযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার বেশি খাওয়া, ধূমপান, তামাক গ্রহণ ইত্যাদি। এ ছাড়া পরিবারে কারও কলোরেক্টাল ক্যানসার বা পলিপ থাকলেও কলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। সেই সঙ্গে কোলনের ভেতর ছোট ছোট পলিপ তৈরি হলে পরবর্তীকালে এটি থেকে ক্যানসার সৃষ্টি হতে পারে। এপিসি জিনের মিউটেশন বংশপরম্পরায় এই ঝুঁকি বাড়ায়।
প্রসঙ্গক্রমে উপস্থাপক জানান, এসকেএফ অনকোলজি বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র ইউজিএমপি ও অ্যানভিজা ব্রাজিল অনুমোদিত প্ল্যান্ট। ফলে এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় ২৭টি দেশে এবং দক্ষিণ আমেরিকায় রপ্তানি হচ্ছে।
বাংলাদেশে কলোরেক্টাল ক্যানসারের বর্তমান পরিস্থিতি, ডায়াগনোসিস, আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা, সচেতনতা ও প্রতিরোধব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেন ডা. মুকিতুল হুদাউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষণের অভিযোগে হাকিমির বিচার দাবি ফরাসি কৌঁসুলিদের
২০২৩ সালে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল পিএসজি তারকা আশরাফ হাকিমির বিচার করার দাবি তুলেছেন ফরাসি কৌঁসুলিরা। মরক্কোর এই রাইটব্যাক অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন।
নঁতের কৌঁসুলি অফিস বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, তদন্তে নিয়োজিত বিচারককে ধর্ষণের এই অভিযোগ ফৌজদারি আদালতে তোলার অনুরোধ করেছেন ফরাসি কৌঁসুলিরা। কৌঁসুলি অফিস থেকে এএফপিকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিজের আদেশ কাঠামোর ভেতরে থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার এখন তদন্তে নিয়োজিত ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর।’
আরও পড়ুননিষেধাজ্ঞা মেসির পিছু ছাড়ছে না, এবার নিষিদ্ধ হলেন তাঁর দেহরক্ষী৫৭ মিনিট আগেগত মে মাসে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে পিএসজির ৫–০ গোলের জয়ে বড় অবদান ছিল হাকিমির। পিএসজির প্রথম গোলটি ২৬ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়ের। সর্বশেষ ২০২২ বিশ্বকাপেও প্রথম আরব দেশ হিসেবে মরক্কোর সেমিফাইনালে ওঠায় দারুণ অবদান ছিল হাকিমির। ২০২৩ সালের মার্চে ২৪ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
হাকিমির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি অভিযোগকারীকে প্যারিসের উপকণ্ঠে বুলান–বিয়ানকুতে অবস্থিত নিজের বাসায় আসার খরচ দেন। তখন হাকিমির স্ত্রী ও সন্তান ছুটি কাটাতে বাইরে ছিলেন। অভিযোগকারী সেই নারী এরপর পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাকিমির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন এবং তখন পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। সেই নারী আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করতে না চাইলেও কৌঁসুলিরা হাকিমির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।
পুলিশকে অভিযোগকারী নারী তখন জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ইনস্টাগ্রামে হাকিমির সঙ্গে তাঁর পরিচয়। সেই রাতে ট্যাক্সি করে হাকিমির বাসায় তিনি গিয়েছিলেন এবং ভাড়াটা পিএসজি তারকাই দেন। পুলিশকে সেই নারী বলেছিলেন, হাকিমি সম্মতি ছাড়াই তাঁর শরীর স্পর্শ করেন এবং তারপর ধর্ষণ করেন। পুলিশের এক সূত্রও তখন এএফপিকে এ কথা জানায়। এক বন্ধুকে ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে আসতে বলেছিলেন সেই নারী। পরে সেই বন্ধু এসে তাঁকে নিয়ে যান।
আরও পড়ুনরিয়াল মাদ্রিদ ছাড়তে চান না কোনো খেলোয়াড়, ‘বেকায়দায়’ ক্লাব কর্তৃপক্ষ২ ঘণ্টা আগেকৌঁসুলিরা গতকাল হাকিমির বিচারের দাবি তোলার পর তাঁর আইনজীবী ফ্যানি কোলিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এএফপি। তাঁর মতে, কৌঁসুলিদের এ সিদ্ধান্ত, ‘মামলার উপকরণ বিচারে বোধগম্য নয় এবং অর্থহীন। আশরাফ হাকিমিসহ আমরা শান্তই আছি এবং আমরা প্রক্রিয়ার শুরুতে ছিলাম। আমরা অবশ্যই আপিলের সব রকম পথই বের করব।’ কোলিন দাবি করেন, তাঁর মক্কেল, ‘পরিকল্পিতভাবে অন্যায় দাবির শিকার’।
অভিযোগকারী নারীর আইনজীবী র্যাচেল–ফ্লোর প্রাদো এএফপিকে বলেছেন, ‘এই মামলার কোনো কিছুতেই অন্যায় দাবির আলামত নেই। আমার মক্কেল এ খবরে (হাকিমিকে বিচারের সন্মুখীন করা) অনেক স্বস্তি পেয়েছে।’
গত মৌসুমে পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল জয়ে দারুণ ভূমিকা ছিল হাকিমির