বন্দরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরন, মুক্তিপন দাবি : গ্রেপ্তার ১
Published: 28th, May 2025 GMT
বন্দরে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া (৩৫)কে অপহরন পর শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি ঘটনায় অপহরকারি চক্রের হোতা মেহেদী হাসান (৩০)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত অপহরণকারি মেহেদী হাসান বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের শুভকরদী এলাকার আলমগীর মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃক অপহরনকারি মেহেদী হাসান ও এক নারীসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ্য করে বন্দর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এর আগে গত সোমবার (২৬ মে) বিকেল ৫টায় মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখা থানার নিমতলা ফুটওভার ব্রিজের নিচে থেকে অপহরনের পর বন্দর এলাকায় মুক্তিপন দাবি ঘটনাটি ঘটে।
মামলার তথ্যসূত্রে জানাগেছে, সুদূর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানার ধানখালি এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহীন মিয়া পেশায় একজন ব্যবসায়ী। এ সুবাদে ১নং বিবাদী বন্দর থানার শুভকরদী এলাকার আলমগীর মোল্লার ছেলে মেহেদী হাসান ব্যবসায়ী শাহীন মোল্লার প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করত।
উক্ত কর্মচারি চাকুরি করা কালিন সময়ে বিভিন্ন অপকর্মের জন্য তাকে চাকুরীচুত করা হয়। কর্মচারি মেহেদী হাসান চাকুরি ছাড়ার পর থেকে মালিক ব্যবসায়ী শাহীন মিয়াকে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতি সাধনের জন্য পাঁয়তারা করে আসছিল।
এর ধারাবাহিকতায় ফতুল্লা থানার তল্লা এলাকার আলমগীর হোসেন মিয়ার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (২৮) তার এর ইমু থেকে উল্লেখিত ব্যবসায়ীকে বন্ধুত্ব করার অনুরোধ করে। ব্যবসায়ী শাহীন বেশ কিছু দিন ২ নং বিবাদী সাথে ইমুতে কথা বলে।
পরবর্তিতে শাহীন মিয়া ব্যবসায়ী কাজের জন্য ঢাকা উদ্দেশ্য রওনা করিলে ২নং বিবাদী সুমাইয়া আক্তার ব্যবসায়ী শাহীন মিয়াকে দেখা করার জন্য মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদীখা থানার নিমতলা মেইনরোডস্থ ফুটওভার ব্রীজের নিচে আসতে বলে।
২নং বিবাদী কথা অনুযায়ী গত সোমবার (২৬ মে) বিকেল ৫টায় ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া উল্লেখিত স্থানে এসে একটি অজ্ঞাত চায়ের দোকানে বসলে ওই সময় অপরহরনকারি চক্রের ৪ সদস্য সাঈদ, সিজান, রুবেল ও রনী একটি প্রাইভেটকার যোগে এসে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী শাহীনকে অজ্ঞাত নামা গাড়ীযোগে অপহরন করে বন্দর থানার ২৪ নং ওয়ার্ডের দেউলী চৌরাপাড়া বটতলা একটি অজ্ঞাত ক্লাবে আটক রেখে সকল বিবাদীগন শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে মানিব্যাগে রাখা নগদ ২৫ হাজার টাকা ও ১টি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেওয়ার পরও ২০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে।
এ ছাড়াও বিবাদীদের দাবীকৃত টাকা না দিলে বিধানীগন ব্যবসায়ী শাহিনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়াসহ প্রাননাশের হুমকি প্রদান করে ০৫ টি ১০০ টাকার নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখে। পরবর্তীতে উল্লেখিত বিবাদীরা ব্যবসায়ী শাহিনকে চোখে কালো কাপড় বেধে বন্দর রাত ১টায় বন্দর থানার শুভকরদীস্থ চাকুরিচ্যুত ১ নং বিবাদী মেহেদী হাসানের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে বিবাদীরা পুনরায় মারপিট করিয়া ভিডিও ধারন করে ব্যবসায়ী আত্মীয় স্বজনদের নিকট ভিডিও পাঠাইয়া মুক্তিপন দাবী করিতে থাকে।
বিবাদীরা ব্যবসায়ী শাহীনকে আটক রেখে গত বুধবার (২৮ মে) রাত ৩টায় বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও প্রান নাশের হুমকি প্রদান করিয়া ফরাজীকান্দ্য মেইন রোডে দিয়ে যায়। পরে ফরাজীকান্দা মেইনরোডে টহল পুলিশের গাড়ী দেখিয়া থামানোর সংকেত দিলে টহল পুলিশ গাড়ী থামাইলে অপহৃত ব্যবসায়ী ঘটনার বিষয়ে থানা পুলিশকে জানাইলে থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করিয়া ব্যবসায়ী দেখানোমতে অপহরনকারি মেহেদী হাসানকে তাহার নিজ বসত বাড়ী হইতে আটক করিয়া জিজ্ঞাসাবাদ করিলে সে তাহার এবং পলাতক আসামীদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে এবং অজ্ঞাতনামা ০২/০৩ জন আসামীদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করিতে অস্বীকৃতি জানায়।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ব যবস য় র জন য উল ল খ এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।
গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।