দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার পর আবারও সক্রিয় হয়েছেন খুলনা-২ আসনের (খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা) সাবেক সংসদ সদস্য, মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও বিসিবি’র সাবেক সভাপতি আলী আসগার লবী। প্রায় দেড় যুগ পর আজ বৃহস্পতিবার আবার তাকে দেখা গেছে মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভার মঞ্চে। আগামী নির্বাচনে খুলনার যে কোনো একটি আসনে  মনোনয়ন প্রত্যাশী ধণাঢ্য এই ব্যবসায়ী। 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে মহানগর ও জেলা বিএনপি। এই সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন পর রাজনীতির মঞ্চে দেখা যাওয়ায় তাকে নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। 

এ ব্যাপারে আলী আসগার লবী সমকালকে বলেন, আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে খুলনা-৫ আসনের ডুমুরিয়া উপজেলায় জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভা রয়েছে। ওই সভায় যোগদান করবো।   

সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনও তো আমি কিছু জানি না। দলের কর্মী, দল যদি বলে; তাহলে করবো। না বললে করবো না। কোনো সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত নয়। দল মনোনয়ন দিলে তো নিশ্চয়ই নির্বাচন করবো, যেখান থেকে দেবে সেখান থেকেই করবো।’  

বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, এর আগে গতবছর ২৪ নভেম্বর খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের খুলনা পর্বের খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা পর্বের এই খেলা আয়োজনে সাবেক সাংসদ লবীর আর্থিক সহযোগিতা ছিল। টুর্নামেন্ট ঘিরে স্টেডিয়াম এলাকাসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে তার ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড টানানো হয়। এছাড়া তিনি নিজে ওই দিন ঢাকা থেকে এসে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে যান। ওই দিন থেকে তাকে নিয়ে আবারও খুলনায় আলোচনা শুরু হয়।

সাবেক সাংসদ লবীর অনুসারীরা জানান, তিনি আবারও খুলনা বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন। দল থেকে যদি আগামী নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে তিনি নির্বাচন করতে আগ্রহী। এজন্য তিনি তৎপরতা চালাচ্ছেন। 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালের দিকে আলী আসগার লবী বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ওই বছর ১ অক্টোবরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া খুলনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর তার ছেড়ে দেওয়া এই আসনে উপ-নির্বাচনে আলী আসগার লবী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি খুলনা মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে তাকে আহ্বায়ক করে দেন।

২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আলী আসগার লবী খুলনায় ছিলেন দোর্দণ্ড প্রভাবশালী। তখন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সরগরম থাকতো নগরীর বড় মির্জাপুর এলাকায় তার বাড়িটি। সরকারি কর্মকর্তা, দলীয় নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিড় লেগে থাকতো সেখানে। ওই সময় তিনি বিসিবির সভাপতিও হন।  

কিন্তু দেশে জরুরি অবস্থা জারি হলে ২০০৭ সালে ভাগ্য বিপর্যয় ঘটে প্রভাবশালী নেতা লবীর। ওই বছর ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার গুলশানের বাসা থেকে তাকে যৌথবাহিনী গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও হয়। তার সবগুলো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, স্থাবর-অস্থাবর অনেক সম্পদ এবং কয়েকটি গাড়ি জব্দ করে তৎকালীন সরকার। ২০০৭ সালের জুলাইয়ে একটি মামলায় আদালত তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। 

২০০৯ সালের প্রথম দিকে তিনি জামিনে বের হন। এরপর থেকে বেশিরভাগ সময় তিনি দেশের বাইরে এবং ঢাকায় ছিলেন। আর মাঝেমাঝে দু-একবার খুলনায় এলেও দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নেননি। নগরীর বড় মির্জাপুর এলাকায় তার বাড়ি।   

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলায় ব্যবসায়ী নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সন্ত্রাসীদের হামলায় মোস্তফা কামাল নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের নন্দীপাড়া গ্রামে তার ওপর হামলা হয়। নিহত মোস্তফা কামাল একই গ্রামের মৃত মমিন মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মোস্তফা কামাল রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছে সড়কে একা পেয়ে সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা করে। তারা তার মাথা ও ঘাড়ে কোপ দিয়ে পালিয়ে যায়।

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠনই বলছে, ‘গাজায় গণহত্যা চলছে’

বান্দরবানে যুবককে পাথর দিয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার  ২

একজন পথচারী মোস্তফা কামালকে সড়কের পাশে পরে থাকতে দেখে পরিবারের লোকদের খবর দেন। তারা তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক মোস্তফা কামালকে মৃত ঘোষণা করেন। 

সরাইল থানার ওসি মোরশেদুল আলম চৌধুরী জানান, রাতে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের হামলায় এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ