মৌলভীবাজারে রাস্তায় গাছ ফেলে ডাকাতি, আহত ২০
Published: 1st, June 2025 GMT
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কের লাউয়াছড়ার বাঘরাবাড়ী এলাকার রাস্তায় গাছ ফেলে মুখোশ পরা একদল লোক ডাকাতি করেছে। এতে বাধা দিতে গিয়ে ডাকাতের হামলায় যানবাহন চালক ও যাত্রীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (৩১ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কের লাউয়াছড়া পাহাড়ের ভেতর বাঘরাবাড়ী এলাকায় ১০/১৫ জনের মুখোশ পড়া সশস্ত্র একটি ডাকাত দল ২০/২৫টি অটোরিকশা, প্রাইভেটকার ও পিকআপ ভ্যান থামিয়ে চালক ও যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইলসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নেয়। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী ডাকাতি চলে।
ডাকাতের হামলায় আহতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- আরিফুল ইসলাম, অপু দাস, ওয়াজেদ মিয়া, মেরাজ মিয়া, সুমিত আলী, নিবাস পাল, সালেক মিয়া ও তাহমিদ আলী।
খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ রাত ১০টার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগে ডাকতদল পালিয়ে যায়। পুলিশ রাস্তার গাছ সরিয়ে দিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভুক্তভোগী ওয়াজেদ মিয়া বলেন, “আমরা প্রাইভেটকারে করে কমলগঞ্জ থেকে শ্রীমঙ্গল যাচ্ছিলাম। লাউয়াছড়া বাঘরাবাড়ি এলাকায় পৌঁছলে ১৫/২০ জনের মুখোশ পরা ডাকাত দল আমাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। সাথে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায় তারা।”
কমলগঞ্জ উপজেলা শহরের বাসিন্দা ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি আরিফুল বলেন, “ডাকাত সদস্যরা অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে।”
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক কামারুজ্জামান বলেন, “আমরা ৮ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মৌলভীবাজার প্রেরণ করেছি।”
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাফর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/আজিজ/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।