২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কিছু প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে ব্রোকারহাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক, তালিকাভুক্ত কোম্পানি তথা পুরো পুঁজিবাজারই লাভবান হবে। যদিও এবারের বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রত্যক্ষভাবে কেনো প্রণোদনা রাখা হয়নি। তবে পুরো পুঁজিবাজার লাভবান হলে পরোক্ষভাবে বিনিয়োগকারীরাও উপকৃত হবেন। তাই একবারের প্রস্তাবিত বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাজেটে উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো হলো- পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর হারের ব্যবধান ২.

৫০ শতাংশ বাড়ানো, ব্রোকারেজ হাউজগুলোর লেনদেনর ওপর উৎসে কর হার ০.০২ শতাংশ কমানো ও মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার ১০ শতাংশ কমানো।

সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন।এবার তিনি এবার ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন।

আরো পড়ুন:

৫৯ দেশে বাংলাদেশ মিশনে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় অর্থনীতিবিদ-ব্যবসায়ীরা  

এবারের প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর হারের ব্যবধান ২.৫০ শতাংশ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। তাতে এই ব্যবধান দাঁড়াবে ৭.৫০ শতাংশ। বর্তমানে এই দুই ধরনের কোম্পানির মধ্যে কর হারের ব্যবধান ৫ শতাংশ। এক সময় এটি ১০ শতাংশ ছিল। গত চলতি অর্থবছরের বাজেটে এটি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর হারের ব্যবধান বাড়লে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে কিছুটা আগ্রহী হবে।

এবার স্টক ব্রোকারদের দাবির প্রেক্ষিতে বাজেটে লেনদেনর ওপর উৎসে করের হার কমানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। প্রস্তাব অনুসারে, আগামী অর্থবছরে ব্রোকারহাউজগুলোকে ০.০৩ হারে এই কর দিতে হবে। বর্তমানে লেনদেনের ওপর ০.০৫ শতাংশ হারে উৎসে কর দিতে হতো এসব প্রতিষ্ঠানকে। ফলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর লেনদেনর ওপর উৎসে কর হার ০.০২ শতাংশ কমেছে। এতে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর সক্ষমতা বাড়বে।

এছাড়া বাজেটে মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার ১০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো প্রকৃত অর্থে ব্যাংক না হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে ব্যাংকের সমান হারে অর্থাৎ ৩৭.৫ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। আগামী অর্থবছরে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ২৭.৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। এতে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সক্ষমতা বাড়বে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মো. আল-আমিন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “এবারের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য যেসব প্রস্তাব রাখা হয়েছে, তা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। কিন্তু বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো সুখবর নেই। তবে একটা ভালো দিক হলো-এ সরকার পুঁজিবাজার নিয়ে ভাবছে, যা বাজেট বক্তৃতায় উঠে এসেছে। বিগত সরকারের বাজেটগুলোতে এমন চিত্র দেখা যায়নি। বাজেটে যেসব প্রস্তাব এসেছে তা বাস্তবায়ন হলে পুঁজিবাজারের স্টকহোল্ডারদের সক্ষমতা বাড়বে। সার্বিক প্রেক্ষাপটে বর্তমান পরিস্থিতি পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক বাজেট বলা যেতে পারে।”

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “ব্রোকারদের দাবির প্রেক্ষিতে বাজেটে লেনদেনর ওপর উৎসে করের হার কমানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ফলে আগামী অর্থবছরে ব্রোকারহাউজগুলোকে ০.০৩ হারে এই কর দিতে হবে। বর্তমানে লেনদেনের ওপর এটা দিতে হতো ০.০৫ শতাংশ হারে।এটা আমাদের দীর্ঘদিনে দাবি ছিল। অবশেষে এ সরকারকে আমরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।সরকারের এমন সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক। এতে হাউজগুলো ব্যবসায় টিকে থাকার সক্ষমতা বা[ড়বে।”

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মাজেদা খাতুন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “প্রস্তাবিত বাজেটে মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার ১০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব খুবই ইতিবাচক। এতে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর আয় বাড়বে, আর্থিক সক্ষমতা বাড়বে। এই অর্থ পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের পাশাপাশি ভালো কোম্পানিকে আইপিওর মাধ্যমে বাজারে আনার জন্য কাজ করতে পারব।”

ঢাকা/এনটি/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ব ত ব জ ট র র প রস ত ব ত প রস ত ব র খ হ উজগ ল শ কম ন র জন য কর দ ত ল নদ ন সরক র র উৎস

এছাড়াও পড়ুন:

যুব ও ক্রীড়ায় বরাদ্দ বেড়েছে ৮৪২ কোটি টাকা   

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জন্য ২ হাজার ৪২৩ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন। যা গত অর্থ বছরে পাশ হওয়া বাজেটের তুলনায় ৮৪২ কোটি ২১ লাখ টাকা বেশি।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন খাতে ১৪৪০ কোটি ৩৭ লাখ এবং পরিচালন খাতে ৯৮২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ৬২৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা উন্নয়ন খাতে এবং পরিচালন খাতে ৯৫২ কোটি ৮৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকা পাশ হয়েছিল। সংশোধিত বাজেটে ক্রীড়া ও যুব মন্ত্রণালয় পেয়েছিল ১ হাজার ৫৮০ কোটি ৭৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।

২০২৫-২৬ অর্থবছরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতায় যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্ব) প্রকল্প, নড়াইলে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ স্টেডিয়াম ও টেবিল টেনিস ভবনের অধিকতর উন্নয়ন এবং ইনডোর স্টেডিয়াম ও ভলিবল স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্প।

এছাড়া বিকেএসপির প্রশিক্ষণ সুবিধাদির আধুনিকায়ন এবং ভৌত অবকাঠামোর সুবিধাদির উন্নয়ন প্রকল্প, দারিদ্র্য বিমোচনে প্রযুক্তিনির্ভর প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়), ৬৪টি জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প, দেশের ৪৮টি জেলায় কর্মপ্রত্যাশী যুবকদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রকল্প আছে।

এর বাইরে বাজেটে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন, অংশগ্রহণ ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান, ক্রীড়া ক্ষেত্রে প্রতিভা অন্বেষণ, গ্রামাঞ্চলে ক্রীড়া পরিবেশ সৃষ্টি ও দক্ষ ক্রীড়াবিদ তৈরি, বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থাকে অনুদান প্রদান ও অসচ্ছল ক্রীড়াবিদদের কল্যাণে অনুদান প্রদান এবং ক্রীড়া স্থাপনা নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সামনে হয়তো আম-ছালা দুটাই যাবে’
  • প্রস্তাবিত বাজেট জনবান্ধব: অর্থ উপদেষ্টা
  • বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন শুরু
  • নারীর অস্বীকৃত কাজের স্বীকৃতি নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্য, স্বাগত জানিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
  • বাজেটে পুঁজিবাজার উন্নয়নে সহায়ক নীতিমালা রয়েছে: ডিএসই
  • সরকারি কর্মচারীরা মহার্ঘ ভাতার বদলে বিশেষ প্রণোদনা পেতে পারেন
  • বাড়ছে বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও বিধবা ভাতা
  • বা‌জেট পর্যা‌লোচনা ক‌রে প্রতিক্রিয়া জানা‌বে জাপা
  • যুব ও ক্রীড়ায় বরাদ্দ বেড়েছে ৮৪২ কোটি টাকা