রংপুরে ইরানি দম্পতিকে আটক করে মারধর, ফোন ও বিদেশি মুদ্রা ছিনতাই
Published: 2nd, June 2025 GMT
রংপুরে ঘুরতে আসা এক ইরানি দম্পতিকে আটকে রেখে ব্যাপক মারধর এবং মোবাইল ফোন ও বিদেশি মুদ্রা ছিনতাই করে একটি চক্র। সোমবার দুপুরে তারাগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ঘনিরামপুর গ্রাম থেকে ইরানি নাগরিক হোসেইন সেলিম রেজা (৬৪) এবং তাঁর স্ত্রী ইয়াজদানজো ইয়াসমিনকে (৫৭) উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।
এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলোু ঘনিরামপুর এলাকার রশিদুল ইসলাম, তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, মোখছেদুল ইসলামের স্ত্রী রাবেয়া বেগম ও মেরাজুল ইসলাম।
ইরানি দম্পতি সেনাবাহিনীকে জানায়, তারা ঢাকা থেকে রংপুরে ঘুরতে এসেছেন রোববার। ভাড়া করা গাড়ি নিজেরা চালাচ্ছিলেন গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে। ভুল করে তারা তারাগঞ্জের একটি গ্রামে চলে যান। এরপর তারা এলাকাবাসীর কাছে সাহায্য চান। কিন্তু এলাকাবাসী তাদের সাহায্য না করে উল্টো মারধর করে ডলার, মোবাইল ফোন, একটি হাতঘড়ি ও পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয়।
সেনাবাহিনী জড়িত চারজনকে আটক করার পর এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ডলার, ঘড়ি, মোবাইল ফোন ও পাসপোর্ট উদ্ধার করে। পরে সেনাবাহিনীর টহল দল নিরাপত্তা দিয়ে ইরানি দম্পতিকে রংপুর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে এবং তাদের নিরাপদে হোটেলে পৌঁছে দেয়।
তারাগঞ্জের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর সানিয়াত চৌধুরী সৃজন জানান, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও বিভিন্ন অপকর্ম করে যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে চায়, তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক