পবিত্র ঈদুল আজহা মানেই মাংস সংরক্ষণের বাড়তি চাপ। স্বাদ বদলাতে অনেকে এ সময় মাছও সংরক্ষণ করে রাখেন। মাংস হোক বা মাছ, সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে অল্প দিনে পচে যায়। পচে না গেলেও নষ্ট হয় এসবের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ। তাই এই ঈদে ফ্রিজে মাছ ও মাংস সংরক্ষণের কিছু সহজ কৌশল শিখিয়ে দিলেন রন্ধনবিদ সিতারা ফেরদৌস।
মাংস সংরক্ষণের নিয়মঈদের আগেই ফ্রিজ পরিষ্কার করে নিন। ফ্রিজ ঠিকমতো কাজ করছে কি না, এখনই একবার পরখ করুন। ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা ঠিক আছে কি না, বরফ হচ্ছে কি না, এসব ভালোভাবে লক্ষ করুন। অনেক সময় ফ্রিজের এসব ত্রুটির কারণে মাংস নষ্ট হয়।
টাটকা মাংস প্রাথমিকভাবে বেশ গরম থাকে। তাই মাংস কেটে আনার সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়। এতে মাংসের ভেতরের তাপ বের হতে পারে না। ফলে মাংস থেকে পচা গন্ধ ছড়াতে পারে। তাই মাংস স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এলে তারপর ফ্রিজে রাখতে হবে।
কাঁচা মাংস থেকে রক্ত ও পানি ঝরিয়ে নিন। টুকরাগুলো হাতের তালুর সমান বা সামান্য ছোট মাপের করে কেটে নিন। ছোট ছোট টুকরা করে কাটা মাংস বেশি দিন ফ্রিজে রাখলে স্বাদ দ্রুত নষ্ট হয়। আবার অনেক বড় মাংসের টুকরাও ফ্রিজে রাখবেন না। বরফ হয়ে গেলে কাটতে গিয়ে বিপাকে পড়তে পারেন।
আরও পড়ুনবিদ্যুৎ নেই, ফ্রিজ নষ্ট বা বাড়িতে ফ্রিজ নেই? এভাবে মাংস সংরক্ষণ করুন২৭ জুন ২০২৩মাংসের টুকরা পানি দিয়ে ধুয়ে ফ্রিজে রাখলে স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু রক্ত ঝরার ভয়ে অনেকেই মাংস ধুয়ে রাখেন। এটা না করে মাংসের টুকরাগুলো পরিষ্কার শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে নিলেই আর রক্ত ঝরার ভয় থাকবে না।
ফ্রিজ থেকে মাংসের প্যাকেট বের করে পুরোটাই রান্না করে ফেলা ভালো। কারণ, মাংস পানিতে ভিজিয়ে আবার উঠিয়ে ফ্রিজে রাখলে স্বাদ ও পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। তাই একসঙ্গে বেশি মাংস না রেখে প্রয়োজন বুঝে মাংস প্যাকেট করুন।
কলিজা সংরক্ষণের জন্য প্রথমে পানি দিয়ে ধুয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে প্যাকেটে ভরে ফ্রিজে রাখুন।
মাংস পলিথিন ব্যাগ, জিপার ব্যাগ বা ফয়েল কাগজে করে ফ্রিজে রাখতে পারেন। প্যাকেটের মুখ বন্ধ করার আগে ভেতরের অতিরিক্ত বাতাস বের করে দিন।
প্যাকেট খাড়া করে না রেখে শুইয়ে রাখুন। এতে মাংস তাড়াতাড়ি বরফ হবে এবং একসঙ্গে অনেক মাংস রাখতে পারবেন। প্রতিটি ব্যাগের মাঝে নিউজপ্রিন্ট কাগজ দিন। এতে বরফ হওয়ার পর একটি প্যাকেটের সঙ্গে অন্যটি লেগে যাবে না। প্যাকেট বের করা সহজ হবে।
মাংসের প্যাকেটের গায়ে ট্যাগ লাগান। রানের মাংস, হাড়, কলিজা, কাবাবের মাংস ইত্যাদি কাগজে লিখে স্কচটেপ দিয়ে প্যাকেটের গায়ে আটকে দিন। প্রয়োজনের সময় খুঁজে পেতে সহজ হবে।
ফ্রিজ না থাকলে মাংসে সামান্য হলুদ আর লবণ মাখিয়ে তারে গেঁথে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করুন। লেবুর রস বা ভিনেগার দিয়ে বয়ামে রাখলেও মাংস বেশ কিছুদিন ভালো থাকে। এ ছাড়া হলুদ, লবণ, তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচি ইত্যাদি দিয়ে দিনে অন্তত দুবার মাংস জ্বাল দিয়ে রাখলে বেশ কয়েক দিন ভালো থাকে।
মাছ সংরক্ষণবড় মাছ কেটে টুকরাগুলো খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত টুকরা থেকে সাদা পানি বের না হবে, ততক্ষণ ধুতে হবে। ফ্রিজে মাছ কত দিন ভালো থাকবে, এটা অনেকটাই নির্ভর করে এই পরিষ্কার হওয়ার ওপর।
মাছের টুকরাগুলো থেকে পানি ঝরিয়ে নিন। এরপর পরিষ্কার পলিথিন বা কনটেইনারে রাখুন।
রান্নার হিসাব অনুযায়ী মাছ প্যাকেট করুন। ফ্রিজ থেকে বের করে আবার উঠিয়ে রাখলে মাছ নরম হয়ে যায়। পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। খেতে ভালো লাগে না।
ছোট বা গুঁড়া মাছ হলে প্রথমেই কাটাবাছা করে নিন। এরপর ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। ফ্রিজে রাখার আগে প্যাকেটে বা কনটেইনারে সামান্য পানি দিয়ে রাখুন। এভাবে ছোট মাছ অনেক দিন সতেজ থাকবে।
আরও পড়ুনরান্নাঘরে ফ্রিজ যেখানে রাখবেন২৬ নভেম্বর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ষ ক র ট কর গ ল র ট কর ব র কর
এছাড়াও পড়ুন:
ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার
ফের দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ বেড়ে ৩১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। আজ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিন শেষে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার। গত ৭ সেপ্টেম্বর আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ছিল ৩০ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিন শেষে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম–৬ অনুযায়ী রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার। গত ৭ সেপ্টেম্বর বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার।
গত জুন মাস শেষে রেমিট্যান্সে আয়ের প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ পাওয়ার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ বেড়ে ৩১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার হয়। এরপর গত জুলাইর প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ২০২ কোটি ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ। তখন গ্রস রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ২৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলারে। আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ছিল ২৪ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। এরপর কমলেও আজ বুধবার রিজার্ভ বেড়ে ৩১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখায় বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল ছিল। বিশেষ করে ডলারের দাম ১২২-১২৩ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রাখে। বিপরীত দিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে থাকে। ফলে মাঝে মধ্যে বাজার থেকে ডলার কেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেইসঙ্গে দাতা সংস্থার অনুদান রিজার্ভ বাড়ায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলারে। করোনা পরবর্তী সময়ে সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে। ফলে ধীরে ধীরে কমতে থাকে রিজার্ভ। যা অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
ঢাকা/নাজমুল/বকুল