নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ীকে অপহরণ, পটুয়াখালী থেকে হাত–পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার
Published: 3rd, June 2025 GMT
হাত–পায়ের সঙ্গে চোখ–মুখও রশি আর কাপড়ে বাঁধা। গায়ের শার্ট ভিজেছিল রক্তে। এমন অবস্থায় প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরে পটুয়াখালী সদর উপজেলার পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাট এলাকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
ওই ব্যক্তির নাম সোহাগ (৪২)। তিনি নারায়ণগঞ্জ সদরের নিউ চাষাঢ়ার জামতলা এলাকার বাসিন্দা। নিজেকে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল সকালে ফেরিঘাট এলাকায় সেতুর প্রকল্পসংলগ্ন স্থানে দুটি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। প্রথমে ভেবেছিলেন গাড়িগুলো সেতুর কাজের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু একপর্যায়ে একটি প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে হাতের ইশারায় তাঁদের ডাকেন এক ব্যক্তি। এ সময় গাড়ির ভেতর থেকে অনবরত হর্ন বাজানো হচ্ছিল। কাছে গিয়ে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি হাত–পা, চোখ ও মুখ বাঁধা অবস্থায় কাতরাচ্ছেন এবং তাঁর শরীর রক্তে ভেজা। তখন তাঁরা পুলিশে খবর দেন। এরপর তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসারত অবস্থায় সোহাগ জানান, গত রোববার রাতে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের সামনে থেকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁর গাড়িতে উঠে পড়ে। এরপর তাঁর হাত–পা ও চোখ–মুখ বেঁধে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার অলিগলি ঘোরায়। এ সময় তাঁকে মারধর করা হয়। গতকাল ভোরে তারা তাঁকে পটুয়াখালী–মির্জাগঞ্জ রুটে পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাটে ফেলে যায়।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সোহাগের পরিবারের কাছে খবর পাঠালে তাঁর স্ত্রী হেলিকপ্টারে পটুয়াখালীতে আসেন। এরপর একটি জিডি করে তিনি স্বামীকে নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। এরপর আমাদের কাছে আর কোনো তথ্য নেই। ভুক্তভোগী আমাদের কাছে অপহরণের বিষয়ে মুখ খোলেননি। তাঁর দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল। এ জন্য আমাদের পক্ষ থেকে তেমন কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।’
এদিকে নারায়ণগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির আহম্মেদ জানান, সোহাগ তাঁর থানা এলাকায় ব্যবসা করেন। কিন্তু ফতুল্লা থানার সরকারি তোলারাম কলেজের সামনে থেকে তিনি অপহরণ হন। তাই আইনগত সহায়তার বিষয়টি ফতুল্লা থানা–পুলিশ দেখবে। তদন্তের স্বার্থে আপাতত বিস্তারিত প্রকাশ করতে রাজি হননি তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ অবস থ য় গতক ল ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ফকিরহাট এলাকায় আশরাফুর রহমান (১৪) নামের এক কিশোর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত শুক্রবার সে জ্বরে আক্রান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
আশরাফুর রহমান ওই এলাকার মিজানুর রহমানের একমাত্র ছেলে। সে সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সীতাকুণ্ডে এই প্রথম একজন মারা গেল।
আশরাফুর রহমানের দাদা এম এ আলীম আলী প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার তাঁর নাতির জ্বর আসে। সামান্য ব্যথাও ছিল। জ্বর কমছে না দেখে রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর আশরাফুরকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল সোমবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হয়। আজ ভোর পাঁচটার দিকে সে মারা যায়। দুপুরে মডেল মসজিদ এলাকায় জানাজার নামাজ শেষে ফকিরহাট নলুয়া দিঘি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আশরাফকে।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হাসপাতালের দায়িত্বগত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই কিশোর ভালো ছিল। আজ ভোর চারটার দিকে তার পাতলা পায়খানা ও খিঁচুনি হয়। এরপর তারা দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে কিশোরটি মারা যায়।
সীতাকুণ্ডে আজ এক দিনেই ৬ জনের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন।