সাভার বিসিক চামড়া শিল্প নগরীতে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজ চলছে পুরোদমে। ঢাকাসহ আশপাশের অঞ্চল থেকে ট্রাকযোগে কাঁচা চামড়া ঢুকছে বিভিন্ন ট্যানারিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ পিস চামড়া এসেছে কারখানাগুলোতে। এতে করে ট্যানারি এলাকা এখন পুরোপুরি কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে।

রোববার (৮ জুন) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সাভারের ট্যানারি পল্লীতে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারখানার মালিক-শ্রমিকরা। গতকাল দুপুরের পর থেকেই রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে চামড়া আসতে শুরু করে। বিভিন্ন মাদ্রাসা, এতিমখানা, আড়ৎদার ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এসব কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করছেন ট্যানারি মালিকরা। চামড়াগুলো সংরক্ষণের জন্য এখন চলছে লবণ মাখানোর কাজ।

মধু হাজী ট্যানারির শ্রমিক মো.

নুরুল ইসলাম বলেন, “গতকাল থেকে লবণ লাগানো শুরু হয়েছে, কাটিং করে সোকিং দেওয়া হইছে। আগামীকাল চামড়া নামিয়ে ফ্লাসিং দেওয়া হবে। ফ্লাসিং মেশিন থেকে আবার ডামে ঢুকানো হবে। এটারে আবার পরের দিন কেমিক্যাল দেওয়া হবে।”

ট্যানারি মালিকরা বলছেন, ঈদের ১০ দিন পর্যন্ত ঢাকাসহ আশপাশ থেকে চামড়া সংগ্রহ করা হবে। এরপর ঢাকার বাইরে থেকে লবণযুক্ত চামড়া আসবে সাভারের ট্যানারিগুলোতে।

তারা আরও জানান, সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া কেনা হচ্ছে। তবে কাঁচা ও ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির সরকারি সিদ্ধান্তে হতাশ এ শিল্পসংশ্লিষ্টরা।

মধু হাজী ট্যানারির ব্যবস্থাপক মো. ইমন ইসলাম বলেন, “আমাদের ট্যানারিতে চামড়া আসা শুরু করেছে রাত সারে ১০টা থেকে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে আমরা চামড়া পাচ্ছি। সেগুলো আসতে আসতে সকাল ১০টা বেজে গেছে। এই চামড়াগুলো আমরা লবণ দিয়ে রাখতেছি। এগুলো ১০-১৫ দিন লবণে থাকবে। এরপরে আমরা পরবর্তী প্রসেসে যাবো।”

তিনি আরও বলেন, “লবণযুক্ত চামড়ায় সরকার যে দাম বেধে দিয়েছে, ওই অনুযায়ী এক সপ্তাহ বা ১০ দিন পর থেকে ঢাকার বাইরে যে আড়তদারগুলো আছে, ওদের কাছ থেকে আস্তে আস্তে চামড়া কালেক্ট করা শুরু করবো। ইনশাআল্লাহ এবার সুন্দরভাবে আমরা চামড়া পাচ্ছি। প্রতিবছর আমরা যে পরিমাণ চামড়া কালেক্ট করি, তার তুলনায় এবার প্রায় ২০% কম চামড়া কালেকশন করতে পেরেছি।’’

‘‘এর বিভিন্ন কারণ হতে পারে। অর্থনৈতিক কারণ হতে পারে। দেশের পরিস্থিতির কারণে হতে পারে,” যোগ করেন ইমন ইসলাম। 

এদিকে শনিবার চামড়া শিল্প নগরীর কার্যক্রম পরিদর্শনে যান শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, “কাঁচা চামড়া ও ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির বিষয়টি একটা সময় উন্মুক্ত ছিল। পরে এটি বন্ধ করা হয়েছিল দেশের স্বার্থেই। এখন আবার দেশের স্বার্থেই যদি দাম পাওয়া না যায় তাহলে যারা কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করবেন তাদের কাছ থেকে ওই চামড়া আমরা দেশের বাইরে রপ্তানি করতে পারি, তাহলে সঠিক দাম পাওয়া যাবে। এজন্য কাঁচা চামড়া রপ্তানির বিষয়টি বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে। তবে আমরা সবসময় এটি করার প্রক্রিয়া নিবো এমন নয়। প্রয়োজন হলেই কেবল এটি করা হবে।”

এ বছর প্রায় ১ কোটি পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছেন ট্যানারি মালিকরা। গত ২৪ ঘণ্টায় ট্যানারিগুলোতে এসেছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ পিস কাঁচা চামড়া।

ঢাকা/তারা//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স গ রহ

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২০, আহত তিন শতাধিক

উত্তর আফগানিস্তানে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রায় ৩২০ জন আহত হয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য  জানিয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শরাফাত জামান আজ সোমবার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, বালখ এবং সামাঙ্গান প্রদেশে প্রাথমিকভাবে নিহত ও আহতের সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ভূমি অফিসকে আস্থার প্রতিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে: সিনিয়র সচিব

ফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬৯

ক্ষতি প্রত্যক্ষকারী এএফপির সাংবাদিকের মতে, ভূমিকম্পে ১৫ শতকের স্মৃতিস্তম্ভ মাজার-ই-শরিফের নীল মসজিদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল আফগানিস্তানের খুলম থেকে ২২ কিলোমিটার (১৪ মাইল) পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং ২৮ কিলোমিটার গভীরে। স্থানীয় সময় রাত ১২ টা ৫৯ মিনিটে এটি আঘাত হানে বলে জানিয়েছে ইউএসজিএস।

আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় বলেছে, উদ্ধার ও জরুরি সহায়তা দলগুলো বালখ এবং সামাঙ্গান প্রদেশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছেছে। আহতদের স্থানান্তর ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তাসহ উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পে মাজার-ই-শরিফের নীল মসজিদ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এএফপি জানিয়েছে, অলঙ্কৃত কাঠামোর টুকরো, বিশেষ করে এর একটি মিনার ভেঙে মাটিতে পড়ে গেছে।

শতাব্দী প্রাচীন এই স্থানটি আফগানিস্তানের সবচেয়ে সম্মানিত ধর্মীয় নিদর্শনগুলোর মধ্যে একটি এবং ইসলামিক ও সাংস্কৃতিক উৎসবের সময় একটি প্রধান সমাবেশস্থল। এটি দেশটির কয়েকটি পর্যটন স্থানের মধ্যে একটি।

রাজধানী কাবুল এবং আফগানিস্তানের আরো কয়েকটি প্রদেশেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাহাড় থেকে পাথর পড়ার কারণে কাবুলের সঙ্গে মাজার-ই-শরিফের সংযোগকারী একটি প্রধান মহাসড়ক কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, তবে পরে রাস্তাটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগানিস্তান ধারাবাহিকভাবে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠছে। অর্থনৈতিক সংকটে থাকা দেশটি প্রায়শই এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় অসুবিধার সম্মুখীন হয়, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে।

গত ৩১ আগস্ট পাকিস্তান সীমান্তের কাছে পূর্ব আফগানিস্তানে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। তালেবান সরকারের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প এবং তার পরে শক্তিশালী আফটারশকে কমপক্ষে চার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ