সাভারে চামড়া শিল্প নগরী: চামড়ায় লবণ লাগিয়ে চলছে কাটিং সোকিং
Published: 8th, June 2025 GMT
সাভার বিসিক চামড়া শিল্প নগরীতে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজ চলছে পুরোদমে। ঢাকাসহ আশপাশের অঞ্চল থেকে ট্রাকযোগে কাঁচা চামড়া ঢুকছে বিভিন্ন ট্যানারিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ পিস চামড়া এসেছে কারখানাগুলোতে। এতে করে ট্যানারি এলাকা এখন পুরোপুরি কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে।
রোববার (৮ জুন) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সাভারের ট্যানারি পল্লীতে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারখানার মালিক-শ্রমিকরা। গতকাল দুপুরের পর থেকেই রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে চামড়া আসতে শুরু করে। বিভিন্ন মাদ্রাসা, এতিমখানা, আড়ৎদার ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এসব কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করছেন ট্যানারি মালিকরা। চামড়াগুলো সংরক্ষণের জন্য এখন চলছে লবণ মাখানোর কাজ।
মধু হাজী ট্যানারির শ্রমিক মো.
ট্যানারি মালিকরা বলছেন, ঈদের ১০ দিন পর্যন্ত ঢাকাসহ আশপাশ থেকে চামড়া সংগ্রহ করা হবে। এরপর ঢাকার বাইরে থেকে লবণযুক্ত চামড়া আসবে সাভারের ট্যানারিগুলোতে।
তারা আরও জানান, সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া কেনা হচ্ছে। তবে কাঁচা ও ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির সরকারি সিদ্ধান্তে হতাশ এ শিল্পসংশ্লিষ্টরা।
মধু হাজী ট্যানারির ব্যবস্থাপক মো. ইমন ইসলাম বলেন, “আমাদের ট্যানারিতে চামড়া আসা শুরু করেছে রাত সারে ১০টা থেকে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে আমরা চামড়া পাচ্ছি। সেগুলো আসতে আসতে সকাল ১০টা বেজে গেছে। এই চামড়াগুলো আমরা লবণ দিয়ে রাখতেছি। এগুলো ১০-১৫ দিন লবণে থাকবে। এরপরে আমরা পরবর্তী প্রসেসে যাবো।”
তিনি আরও বলেন, “লবণযুক্ত চামড়ায় সরকার যে দাম বেধে দিয়েছে, ওই অনুযায়ী এক সপ্তাহ বা ১০ দিন পর থেকে ঢাকার বাইরে যে আড়তদারগুলো আছে, ওদের কাছ থেকে আস্তে আস্তে চামড়া কালেক্ট করা শুরু করবো। ইনশাআল্লাহ এবার সুন্দরভাবে আমরা চামড়া পাচ্ছি। প্রতিবছর আমরা যে পরিমাণ চামড়া কালেক্ট করি, তার তুলনায় এবার প্রায় ২০% কম চামড়া কালেকশন করতে পেরেছি।’’
‘‘এর বিভিন্ন কারণ হতে পারে। অর্থনৈতিক কারণ হতে পারে। দেশের পরিস্থিতির কারণে হতে পারে,” যোগ করেন ইমন ইসলাম।
এদিকে শনিবার চামড়া শিল্প নগরীর কার্যক্রম পরিদর্শনে যান শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, “কাঁচা চামড়া ও ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির বিষয়টি একটা সময় উন্মুক্ত ছিল। পরে এটি বন্ধ করা হয়েছিল দেশের স্বার্থেই। এখন আবার দেশের স্বার্থেই যদি দাম পাওয়া না যায় তাহলে যারা কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করবেন তাদের কাছ থেকে ওই চামড়া আমরা দেশের বাইরে রপ্তানি করতে পারি, তাহলে সঠিক দাম পাওয়া যাবে। এজন্য কাঁচা চামড়া রপ্তানির বিষয়টি বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে। তবে আমরা সবসময় এটি করার প্রক্রিয়া নিবো এমন নয়। প্রয়োজন হলেই কেবল এটি করা হবে।”
এ বছর প্রায় ১ কোটি পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছেন ট্যানারি মালিকরা। গত ২৪ ঘণ্টায় ট্যানারিগুলোতে এসেছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ পিস কাঁচা চামড়া।
ঢাকা/তারা//
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এপ্রিলে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ দুরভিসন্ধিমূলক: এমরান সালেহ প্রিন্স
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল প্রধান উপদেষ্টার সামনেই আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি করেছে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধ্বে নির্বাচনের যে সময়সীমা উল্লেখ করেছেন, তা জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। জনগণ তথা রাজনৈতিক দলের মতামতকে অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করে এপ্রিলে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ দূরভিসন্ধিমূলক ও স্বৈরাচারী মনোবৃত্তির পরিচয় বহন করে। কেন প্রধান উপদেষ্টা বা অন্তর্বর্তী সরকার এপ্রিলে নির্বাচন দিতে চায় তা উল্লেখ করেন নাই। তিনি বলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে এক মাসের মধ্যে সংস্কার করে অবলীলায় ডিসেম্বরের আগেই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। রোববার দুপুরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপিও যেনতেন নির্বাচন চায় না। বিএনপি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সমর্থন যাচাই করতে চায়। জনগণের আস্থা ও রায় নিয়ে জনগণের সেবা করতে চায়। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তিন মাসের মধ্যেই অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেখানে গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন অয়োজন করেছে, সেখানে তিনটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় পার করেও ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার কেন নিরপেক্ষ নির্বাচন অয়োজন করতে পারছে না?
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, সরকারের ভেতর ও বাইরে কয়েকটি স্বার্থান্বেষী মহল ড. ইউনূসকে ব্যবহার করে নির্বাচন অনিশ্চিত করতে যড়যন্ত্র করছে। তিনিও তাদের প্ররোচণায় সম্প্রতি কয়েকটি বিতর্কিত পদক্ষেপ নিয়ে নিজেও বিতর্কিত হচ্ছেন, যা বিএনপিসহ রাজনৈতিক দল ও জনগণর কাছে বিস্ময়কর। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো তাঁর ওপর আস্থা রেখে তাঁর নেতৃত্বেই ইতিহাস সৃষ্টিকারী নিরপেক্ষ নির্বাচন চেয়েছে। কিন্তু তিনি বা তাঁর অন্তর্বর্তী সরকার কেন রাজনৈতিক দলকে অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করছে তা জাতি জানতে চায়।
ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, হালুয়াঘাট উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মোয়াজ্জেম হোসেন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, সদস্য সচিব আবু হাসনাত বদরুল কবীর, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হানিফ মোহাম্মদ শাকের উল্লাহ, সদস্য সচিব আবদুল আজিজ খান, বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যন শাহ আফাজ উদ্দিন, ট্র্যাইবল ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি বিপুল হাজং, হালুয়াঘাট শাখার চেয়ারম্যন সুব্রত রেমা, প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।