অপু বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা গেল শাকিবকে, নতুন গুঞ্জনের শুরু
Published: 10th, June 2025 GMT
এবারের ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান অভিনীত বহুল প্রতীক্ষিত ছবি তাণ্ডব, যা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রেক্ষাগৃহে উপচে পড়া ভিড় আর টিকিটের সংকট দেখা গেছে। তবে হলে সিনেমা চললেও বরাবরের মতো এবারও শাকিব খান ছিলেন পরিবারমুখী।চলচ্চিত্রের আলো-ঝলমলের বাইরে একান্ত সময় কাটাচ্ছিলেন প্রিয়জনদের সঙ্গে।
এই নিরবতার মধ্যেই ঈদের ছুটিতে ছেলেকে নিয়ে শহরের একটি বিপণিবিতানে কেনাকাটায় বের হয়েছিলেন শাকিব খান। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে আব্রাহাম খান জয় এবং জয়ের মা, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। হঠাৎ করেই তাদের তিনজনকে একসঙ্গে দেখা যায় ঢাকার একটি সড়কে, গাড়িতে ওঠার মুহূর্তে। কারও নজর এড়িয়ে যায়নি সেই দৃশ্য। মুহূর্তেই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, তৈরি হয় নতুন করে আলোচনার ঝড়।
ভিডিওতে দেখা যায়, শাকিব, অপু ও জয় একই ধরনের মাস্ক পরে গাড়িতে উঠছেন। সামনের আসনে বসেন শাকিব ও তাঁর ছেলে, পেছনে জায়গা নেন অপু বিশ্বাস। আব্রাহামের হাতে ধরা একটি ছোট ব্যাগ যেন এই পারিবারিক মুহূর্তকে আরও নিখুঁতভাবে তুলে ধরে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু ভক্ত এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করলেও তারা দ্রুত গাড়ি চালিয়ে সরে যান। এ যেন বাস্তব জীবনের হঠাৎ ধরা পড়া এক টুকরো সিনেমা!
যদিও এ দৃশ্যের পেছনে রয়েছে নিছক পারিবারিক প্রয়োজন। জয়কে নিয়ে কেনাকাটা। তবুও তাদের একসঙ্গে দেখা যাওয়া নতুন করে গুঞ্জন তুলেছে ভক্তমহলে। অনেকেই প্রশ্ন করছেন-শাকিব ও অপু কি আবার কাছাকাছি আসছেন?
ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, শাকিবের পরিবারের সঙ্গে অপু বিশ্বাসের সম্পর্ক বর্তমানে বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ। বিশেষ করে শাকিবের মা, বাবা ও বোনদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। শাকিব নিজে অপুর বাসায় না গেলেও অপু বিশ্বাস মাঝেমধ্যে যান শাকিবের বাড়িতে, ছেলের প্রয়োজনে। তাদের সম্পর্কের এই স্থিতি সামাজিকভাবে ইতিবাচক বলেই মনে করছেন অনেকে।
তবে এইসব গুঞ্জনের মাঝে শাকিব খান নিজেই এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেছিলেন তাঁর অবস্থান। “আমি যেমন আব্রাহাম ও শেহজাদের বাবা, তেমনি অপু-বুবলীও তাঁদের মা। সন্তানের প্রয়োজনেই আমাদের দেখা হয়, কথা হয়। কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গায় অপু ও বুবলী দুজনেই এখন আমার অতীত। তাদের সঙ্গে কোনো পুনর্মিলনের সম্ভাবনা নেই।” বলেছিলেন শাকিব খান।
তবে অতীতের সম্পর্ক ‘অতীত’ হয়ে গেলেও সন্তানের ভালোর জন্য যে বন্ধন বজায় রাখা জরুরি, সেটিই যেন এই দৃশ্য চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। শাকিব-অপুর পুরোনো গল্পের ভেতর থেকেও উঠে এলো এক নতুন বাস্তবতা।সন্তানই এখন তাঁদের সবচেয়ে বড় সংযোগ।
আর ঠিক এই মানবিকতার জায়গাটিই হয়তো আজ ভক্তদের আবার ভাবিয়ে তুলছে। পর্দার নায়ক বাস্তব জীবনেও কখনও কখনও এক অন্যরকম গল্পের চরিত্র হয়ে ওঠেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অপ ব শ ব স
এছাড়াও পড়ুন:
৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নবম ব্যাচের (নবনীতক ৯) শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সমাপনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের বিদায় বেলায় এক মঞ্চে আসীন হন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান সাত উপাচার্য।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী, খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল আওয়াল, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন তারেক।
আরো পড়ুন:
নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
এক মঞ্চে একইসঙ্গে এতজন উপাচার্যকে পেয়ে সমাপনী ব্যাচসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “এভাবে একসঙ্গে পুরো সেশনের শিক্ষা সমাপনী আয়োজনের আইডিয়াটি অত্যন্ত চমৎকার। এতে করে একটি ব্যাচের একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ ঘটে। যেখানে সবার একসঙ্গে পরীক্ষা হয়, রেজাল্ট প্রকাশ হয় এবং কোনো সেশন জট থাকে না। আমি এই আইডিয়াটি আমার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”
খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান বলেন, “আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এখানে এসেছি সংহতি জানানোর জন্য। আমি নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জীবনে সফলতা কামনা করছি।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিসিএস দেওয়া, বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা বা ব্যবসা করার লক্ষ্য থাকে। তবে জীবনে কোনো না কোনো কিছু করতেই হবে। এক্ষেত্রে অবসর বলে কোনো শব্দ থাকা উচিত নয়।”
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমি যখন দেশের বাইরে পড়াশোনা করতাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমি কখনোই দেখিনি। আর বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে কখনো একসঙ্গে সাতজন উপাচার্যকেও বসতে দেখিনি, এটা অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর করে দেখিয়েছেন।”
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমরা যদি আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করি, আমাদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি এমন কিছু করার মানসিকতা রাখতে হবে, যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।”
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আতিয়ার রহমান বলেন, “শিক্ষা সমাপনী মানেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করা নয়। বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে, যেখানে অ্যালামনাই থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাই নিজেকে বিস্তৃত পরিসরে মেলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করার দায়িত্ব নিতে হবে।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “নিজেকে চেনাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আর শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনই বলে দেবে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কতটা জ্ঞান অর্জন করেছে।”
প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর আগত উপাচার্যদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। একইসঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি তুলে ধরাও আমাদের লক্ষ্য। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় এবং অচিরে দাঁড়াবেই।”
তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসির দুইটি হিট প্রকল্প পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরো পাব। আমরা আশা করছি, বি ক্যাটাগরি থেকে আগামী অর্থবছরের আগেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হবে।”
গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসানের সভাপতিত্বে এতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি ও প্রাধ্যক্ষগণ, দপ্তর প্রধানগণ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।
শিক্ষা সমাপনী উপলক্ষে বুধবার ছাত্রদের কালার ফেস্ট ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী