বন্দরে মসজিদের ঈমামকে মুসল্লিদের রাজকীয় বিদায়
Published: 13th, June 2025 GMT
প্রতিটি সমাজেই একটি মসজিদ একজন ঈমাম ও মুয়াজ্জিন আছে। তবের বেশির ভাগ মসজিদে ঈমাম থাকলেও মুয়াজ্জিনের সংখ্যা নগন্ন। আবার অনেক মসজিদে ঈমামের ঈমামতি দীর্ঘস্থায়ী হয় না। বিশেষ করে সমাজ ভিত্তিক বেসরকারি মসজিদ মাদ্রাসাগুলোর ঈমামগন।
কখনো সভাপতি কিংবা সেক্রেটারী, ক্যাশিয়ারের কথার অবাধ্য হলেই চাকুরী নিয়ে নড়বড়ে চলে। তবে সবার ক্ষেত্রে নয়। এমনও মসজিদ মাদ্রাসা আছে যে সকল ঈমামদের ঈমামতির চাকুরী যুগযুগ ধরে বহাল থাকে।
তাদের মধ্যে একজন হাফেজ মাওলানা মুফতি মোঃ আবুল কাসেম। যিনি বন্দর উপজেলা ধামগড় ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ডের কামড়াব কুচিয়ামোড়া বাইতুল নূর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ঈমাম। যিনি আরবি লেখাপড়া শেষ করেই অবিবাহিত জীবনে অত্র মসজিদে ঈমামতি'র চাকুরী নেন।
সূদীর্ঘ ৪৫ বছর চাকুরী জীবনে গত ১৩-০৬-২৪ইং পবিত্র শুক্রবার জুম্মা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে ঈমামতির চাকুরী থেকে অবসর গ্রহন করেন। সমাজবাসী সহ এলসকার শত শত মুসল্লি ঈমামকে নতুন পায়জামা, পাঞ্জাবি, পাগড়ি,ফুল ও টাকার মাল্য সহ দেড় বছরের অগ্রীম বেতন দিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বাড়ি পর্যন্ত পৌছিয়ে দেন। এসময় তিন কিলোমিটার রাস্তায় নারী পুরুষ দাড়িয়ে ঈমামকে হৃদয় বিদারক বিদায় জানান।
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৪৫ বছর অত্র মসজিদে চাকুরী করার সুবাদে আমি সমাজবাসীর পক্ষ থেকে যে মূল্যায়ন পেয়েছি তা ভূলবার নয়। দোয়া করি মহান আল্লাহপাক যেন সবাইকে হেদায়েত দান করেন।
সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন বলেন, আমি যেই ঈমামকে বিদায় জানাচ্ছি তিনি আমার শিক্ষক। তার অসংখ্য ছাত্র আছে যারা আজ দেশের গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক, সচিব থেকে শুরু করে অসংখ্য আলেম, মাওলানা, মুফতি উনার ছাত্র। আমরা দোয়া করি মহান আল্লাহপাক যেন ঈমামকে সুস্থ্যতার সহিত দীর্ঘ হায়াৎ নসীব করেন।
বিদায়ী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মসজিদ কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ তাওলাদ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ সামসুদ্দোহা, মোহাম্মদ আলী, শেখ ফরিদ, ইয়াজউদ্দীন, শামিম সহ এলাকার মুসল্লিগন।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: মসজ দ ন র য়ণগঞ জ মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
হঠাৎ ওড়ার শক্তি হারায় উড়োজাহাজটি
ভারতের গুজরাট প্রদেশের রাজধানী আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজ (বোয়িং ৭৮৭-৮) বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত থ্রাস্ট (আকাশে ওঠার শক্তি) না পাওয়া, দুই ইঞ্জিনই বিকল হয়ে যাওয়া, ফুয়েল মিটারিং সিস্টেম বন্ধ হওয়া কিংবা বার্ড স্ট্রাইক (পাখির সঙ্গে সংঘর্ষ) মতো কারণগুলোকে সামনে রেখে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ভারতীয় তদন্তকারীদের সঙ্গে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরাও যোগ দিয়েছেন। সহায়তা দেবে বোয়িংও।
ভিডিও বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উড়োজাহাজটি ৬২৫ ফুট উঁচুতে উঠে আর ওড়ার শক্তি পাচ্ছিল না। শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি এক্স পোস্টে লেখেন, ধ্বংসের দৃশ্যটি দুঃখজনক।
শুক্রবার রয়টার্সকে দুটি পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম কক্ষের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পরিবার মুখ দেখে শনাক্ত করায় ছয়টি মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে ভারত সরকার এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমান বহর বন্ধ রাখার কথা ভাবছে। অন্যদিকে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে বোমা আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়েছে একটি ফ্লাইট।
বিবিসির যাচাই করা ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানটি আবাসিক এলাকার ওপর দিয়ে খুব নিচু দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত ফ্লাইট ডেটা অনুসারে, বিমানটি ৬২৫ ফুট (প্রায় ১৯০ মিটার) উচ্চতা পর্যন্ত উঠেছিল। এর পর বিমানটি ওড়ার শক্তি হারিয়ে ফেলে এবং ক্রমেই নিচে নেমে যায় ও বিস্ফোরণ ঘটে। বিমানটি আকাশে ছিল মাত্র ৩০ সেকেন্ড।
বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে (স্থানীয় সময়) উড্ডয়ন করে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রাকালে ফ্লাইট এআই১৭১ গুজরাট বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। তাতে ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন। একজন বাদে বাকি সবারই মৃত্যু ঘটেছে। মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের ওপর আছড়ে পড়ায় ছয় শিক্ষার্থী মারা গেছেন। বিমানটি চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাবহারওয়াল ও কো-পাইলট ক্লাইভ কুন্ডার। বিমান চালনায় তাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে।
আকাশে ওড়ার আগে শেষ মুহূর্তে তোলা একটি ছবি শেষ স্মৃতি হয়ে রইল। বিমানে থাকা চিকিৎসক দম্পতি ও তাদের তিন শিশুর সেই সেলফি এখন সবার হৃদয়ে দাগ কেটেছে। ছবিতে দেখা যায়, ডা. প্রত্যুষ জোশী ও ডা. কৌমি ব্যাস প্লেনের এক পাশে পাশাপাশি বসে আছেন। অন্য পাশে বসা তাদের তিন সন্তান– আট বছরের মেয়ে মিরায়া আর পাঁচ বছরের যমজ দুই ছেলে নকুল ও প্রদ্যুৎ। শিশুদের চোখেমুখে প্লেনে চড়ার আনন্দ, বাবার ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসির চেষ্টা করছে তারা। কিন্তু কে জানত, এই ছবিই হয়ে উঠবে পরিবারটির শেষ ছবি।