ঢাকায় ফেরার পথে দুর্ঘটনায় নিহত রাইড শেয়ারের দুই মোটরসাইকেলচালক
Published: 17th, June 2025 GMT
ঢাকায় ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন দুই বন্ধু আবু মোতালেব (২৭) ও সাজু ইসলাম (৩৩)। ঈদে তাঁরা বাড়ি এসেছিলেন। ঈদের পর মোটরসাইকেলে করে ঢাকায় ফিরছিলেন তাঁরা। কিন্তু পথে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন এই দুই বন্ধু। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের রাঙামাটি বিজিবি ক্যাম্পসংলগ্ন ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত আবু মোতালেব দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। সাজু ইসলাম একই উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি পিকআপ ফুলবাড়ী শহর থেকে দিনাজপুরের দিকে যাচ্ছিল। বিপরীত দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে আসছিলেন আবু মোতালেব ও সাজু ইসলাম। ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পিকআপটি রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। স্থানীয় লোকজন দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আবু মোতালেবের স্ত্রীর বড় ভাই মিজানুর রহমান বলেন, দুই বছর আগে মোতালেব বিয়ে করেন। এর পর থেকে তিনি ঢাকায় ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। সম্প্রতি কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি আরবে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঢাকায় গিয়ে পাসপোর্ট ও ভিসাসংক্রান্ত কাজ শেষ করে কয়েক দিনের মধ্যেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই মৃত্যুর সংবাদ এল।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোহিব্বুল হক বলেন, দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। পিকআপটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তবে চালক ও সহকারী পলাতক। দুজনের মরদেহ ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা আসার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন ইসল ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।