ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও ঐকমত্য কমিশন জাতীয় সংসদে নারীদের আসন বৃদ্ধি নিয়ে চাপাচাপি করছে।

আতাউর রহমান বলেন, দুই কমিশন জাতীয় সংসদের আসন ৪০০ এবং সংরক্ষিত নারী আসন ১০০–তে উন্নীত করার প্রস্তাব করেছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী বাংলাদেশ গড়ার সঙ্গে নারীদের আসন বৃদ্ধির সম্পর্ক কী?

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার বিরতিতে এ কথা বলেন ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র। সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজ দ্বিতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় দিনের আলোচনার আয়োজন করে কমিশন।

আগামী দিনে দেশ সুন্দরভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে সংস্কার কমিশনগুলো গঠিত হয়েছে উল্লেখ করে আতাউর রহমান বলেন, আগামী দিনে যাতে কোনো কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা হতে না পারে, ফ্যাসিবাদ যাতে জেঁকে বসতে না পারে, সে জন্য সংস্কার কমিশন গঠিত হয়। কিন্তু এর সঙ্গে নারী আসনের সম্পর্ক কী?

বিগত দিনে সংসদের প্রধান নারী থাকার পরও দেশ সংকটে ছিল উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র বলেন, ‘বিগত দিনে আমরা কর্তৃত্ববাদ ও ফ্যাসিবাদ কায়েম হতে দেখেছি। তাহলে নারী আসন বৃদ্ধি করলেই সংকট কেটে যাবে, এমনটা মনে হয় না।’

আতাউর রহমান বলেন, তাহলে এটা নিয়ে (নারী আসন) সংস্কার কমিশন এত চাপাচাপি করছে কেন? এখানে নারীদের জন্য কোনো বাধ্যবাধকতা থাকার প্রয়োজন নেই। বরং বর্তমান নিয়মে ৩০০ আসনে নারীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ আছে।

ইসলামী আন্দোলন আলাদা হতে চায় না উল্লেখ করে দলটির মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে চাই। তাই অধিকাংশ রাজনৈতিক দল যদি মনে করে, তাহলে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হোক এবং সেখানে নারীদের একটি অংশ নির্ধারিত থাকবে। আমরা এর সঙ্গে একমত।’

ঐকমত্য কমিশনের আরেকটি প্রস্তাবের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন একমত উল্লেখ করে আতাউর রহমান বলেন, ‘৩০০ আসনে ভোট হলে দলগুলোর ভোটের আনুপাতিক হারে ১০০ আসন নারীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। এ প্রস্তাবের সঙ্গেও আমরা একমত।’

আরও পড়ুন‘একটি দলের সঙ্গে বিদেশে বসে কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেন না’১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঐকমত য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।

জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।

এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।

জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।

জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন ১৮ কোটি মানুষের দাবি: জামায়াত
  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • ‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • কমিটি গঠন, প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত 
  • বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
  • বিএনপি নির্বাচনমুখী কর্মসূচিতে যাবে
  • দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হতে হবে
  • জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ফের এক মাস বাড়ল