জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব : আলী রীয়াজ
Published: 17th, June 2025 GMT
আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে, আমরা জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অসমাপ্ত আলোচনা শেষ করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় এ কথা বলেন আলী রীয়াজ। আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোড অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ আলোচনা শুরু হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়েছেন বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা। তবে অংশ নিতে দেখা যায়নি জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে আমরা জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব। সে ক্ষেত্রে আপনারা (রাজনৈতিক দলগুলো) যে সহযোগিতা দেখাচ্ছেন সে জন্য রাজনীতিক দলগুলোর প্রতি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। "
আলী রীয়াজ বলেন, "আমরা আশা করছি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে, আমাদের পক্ষে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। আমরা চেষ্টা করছি সমস্ত বিষয়গুলোতে যাতে আমরা সকলে একমত না হলেও সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন বিষয়ে মতে আসতে পারি।" তিনি বলেন, সব বিষয়ে আমরা হয়তো একমত হতে পারব না, কিন্তু তারপরেও আমরা জাতি এবং রাষ্ট্রের স্বার্থে যেন খানিকটা হলো ছাড় দিয়ে এক জায়গায় আসতে পারি। সবগুলি বিষয়ে শেষ করতে পারব এমন নিশ্চয়তা নেই।’
আজকের আলোচনায় সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, নারী প্রতিনিধিত্ব সহ বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।
এ ছাড়া দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ),প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া সহ বেশ কিছু বিষয় আলোচনার কথা রয়েছে। আগামী ১৭, ১৮ এবং ১৯ জুন তিন দিন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত রয়েছেন আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, সফররাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত, আরপিওতে পরিবর্তন আসছে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। আর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সে বিষয়ে সরকার অনড় থাকবে। এদিকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) অধ্যাদেশের খসড়ায় আবার পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল শনিবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কয়েকজন উপদেষ্টার সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এসব নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।
সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। বিএনপি বলছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির এখতিয়ার সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। আর জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠান অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত বলেও মনে করে দলটি। জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দল নভেম্বরের মধ্যে গণভোটসহ পাঁচ দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ দেখার পরই এনসিপি সনদে স্বাক্ষরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আগে থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য ছিল। সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে ঐকমত্য কমিশন সুপারিশ জমা দেওয়ার পর তা নতুন করে তীব্রভাবে সামনে এল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, সদ্য অনুমোদন দেওয়া নির্বাচন-সংক্রান্ত আইন আরপিওর (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া আবারও সংশোধন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জোটগতভাবে নির্বাচন করলে নিজের দলের প্রতীকে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা থাকছে না। অর্থাৎ কোনো প্রার্থী চাইলে নিজ দলের প্রতীকেও নির্বাচন করতে পারবেন, অথবা জোটের কোনো দলের প্রতীকেও নির্বাচন করতে পারবেন।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন করেছিল অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল, কোনো দল জোটগতভাবে নির্বাচন করলেও নিজেদের প্রতীকে অংশ নিতে হবে।
এরপর ওই বিধান নিয়ে আপত্তি জানায় বিএনপি ও ছোট দলগুলো। ছোট দলগুলো এ নিয়ে নিজেদের আপত্তি ও উৎকণ্ঠার কথা কয়েকজন উপদেষ্টাকে জানায়। একপর্যায়ে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের আপত্তি জানায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, প্রধান উপদেষ্টার আগ্রহ এবং নির্দেশনায় আরপিওতে সর্বশেষ পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এ লক্ষ্যে আগামী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে।
সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। বিএনপি বলছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির এখতিয়ার সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। আর জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠান অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত বলেও মনে করে দলটি। জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দল নভেম্বরের মধ্যে গণভোটসহ পাঁচ দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ দেখার পরই এনসিপি সনদে স্বাক্ষরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আগে থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য ছিল। সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে ঐকমত্য কমিশন সুপারিশ জমা দেওয়ার পর তা নতুন করে তীব্রভাবে সামনে এল।