মেয়েকে ধর্ষণ, সৎ বাবার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ
Published: 18th, June 2025 GMT
চার বছর আগে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে তারই সৎ বাবাকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার সকালে এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন ঢাকার কেরানীগঞ্জের মো. মোতাহার (৪১)। রায় ঘোষণার সময় আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম তার মা ও সৎ বাবার সঙ্গে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বাস করতো। পৃথক ঘরের ব্যবস্থা না থাকায় তারা একত্রে বসবাস করতেন। মোতাহার ভিকটিমকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতো। ২০২১ সালের ২০ জুন রাতে আসামি ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। ঘটনার বিষয়ে কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেয়। এজন্য সে কাউকে কিছু জানায়নি। ২২ সেপ্টেম্বর রাতে আবারও তাকে ধর্ষণ করে। ভিকটিম পরদিন বিষয়টি তার মাকে জানায়। ঘটনা শুনে তার মা ও সৎ বাবা তাকে বাসা থেকে বের করে দেয়। ভিকটিম তার বাবার কাছে চলে যায়। ২৪ সেপ্টেম্বর ভিকটিম বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেন। সংশ্লিষ্ট থানার উপ-পরিদর্শক আবুল হাসান মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ২৭ মে মোতাহারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আসামির আত্মপক্ষ শুনানি, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত আজ এ রায় দিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সৎ ব ব
এছাড়াও পড়ুন:
‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ পূর্তি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক
পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের ‘কবর’ কবিতা বাংলা সাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় সৃষ্টি। ১৯২৫ সালে লেখা অমর এ কবিতার শতবর্ষ এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ‘কবর’ কবিতা তৎকালীন সময়ের সমাজের চিত্রকে তুলে ধরেছে।
‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে এ কথা বলেন বক্তারা। শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন মফিজ ইমাম মিলন। ৪৮ জন লেখকের লেখা নিয়ে প্রকাশিত এই গ্রন্থ প্রকাশ করেছে নয়নজুলি প্রকাশনাী।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যে উঠে আসে জসীমউদ্দীনের অবিস্মরণীয় সৃষ্টি ‘কবর’ কবিতার নানান প্রসঙ্গ। কবিতাটি ১৯২৫ সালে ‘গ্রাম্য কবিতা’ পরিচয়ে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল কল্লোল পত্রিকার তৃতীয় বর্ষ তৃতীয় সংখ্যায়।
আলোচকেরা বলেন, ‘কবর’ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। কবিতাটি দীনেশচন্দ্র সেন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। এমনকি ‘কবর’ পড়ে দীনেশচন্দ্র সেন ‘অ্যান ইয়াং মোহামেডান পোয়েট’ শিরোনামে একটি আলোচনাও লিখেছিলেন ফরওয়ার্ড পত্রিকায়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল (সি আর) আববার বলেন, ‘কবর’ কবিতার শত বছর পূর্তির ঘটনা একটা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কবিতাটির শতবর্ষ নিয়ে বই প্রকাশ ব্যতিক্রমী প্রয়াস।
এ সময় শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি শহরে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের মতো সংগঠন থাকা উচিত। একটা বৃহত্তর পরিবারের মতো কাজ করে তারা। তিনি বলেন, এ ধরনের নাগরিক সমাজ রাষ্ট্রের বাইরে থেকে দেশ ও সমাজ সম্পর্কে ভাবে। এটা বিশাল শক্তি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জালাল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী, পক্ষিবিশারদ ইনাম আল হক, কথাসাহিত্যিক ফারুক মঈন উদ্দীন। গবেষক, সাংবাদিক ও ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন নয়নজুলি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী খান, অধ্যাপক এম এ সামাদ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ কাকলী মুখোপাধ্যায়, ডেইলি স্টারের সাহিত্য সম্পাদক ইমরান মাহফুজ প্রমুখ।
‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান শুরু হয় ‘কবর’ কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে। স্বাগত বক্তব্য দেন ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফ হোসেন।