Samakal:
2025-11-03@13:09:41 GMT

সুফলা এক বাংলাদেশ

Published: 19th, June 2025 GMT

সুফলা এক বাংলাদেশ

দেশে ফলের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। গত দুই দশক ধরেই ফল উৎপাদনে টেকসই ও ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। ছোট দেশ, জমি কম। তবুও বিশ্বের শীর্ষ ১০ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল উৎপাদনকারী দেশের অন্যতম বাংলাদেশ। একসময় মানুষ বাড়ির আশপাশের ছোট বাগানে সীমিত পরিমাণ ফল উৎপাদন করত। এখন দেশের প্রায় সব অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফলের চাষ ছড়িয়ে পড়ছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে গত ১৮ বছরে ফল উৎপাদন গড়ে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ করে বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের মানুষের ফল বেশি খাওয়ারও তথ্য দিচ্ছে। বিবিএসের খানা জরিপে দেখা গেছে, ২০২২ সালে দেশের একজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে ৯৫ দশমিক ৪ গ্রাম ফল খেয়েছেন। ২০১০ সালে এই গড় ছিল ৪৪ দশমিক ৭ গ্রাম। এর মধ্যে ২০১৬ সালে অবশ্য ফল খাওয়া কমে গিয়েছিল, জনপ্রতি গড়ে ৩৫ দশমিক ৮ গ্রাম। 

একসময় দেশে কাঁঠাল ও আম ছিল প্রধান ফল। এখন অন্তত ২২ প্রজাতির ফল বাংলাদেশের মানুষ নিয়মিত খাচ্ছে। বার্ষিক কাঁঠাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয়। আম উৎপাদনে সপ্তম। পেয়ারা উৎপাদনেও সপ্তম। এখন জাম, বরই, কামরাঙা, কতবেল, লেবু, আনারস, লটকন, আতা, সফেদার মতো স্থানীয় ফলের পাশাপাশি স্ট্রবেরি, ড্রাগন ফ্রুট, মাল্টা, রামবুটান ইত্যাদি বিদেশি ফলের চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে।

এক দশক আগে দেশে প্রায় ৫৬ ধরনের ফল চাষ হতো। এখন ৭২ ধরনের ফল চাষ হচ্ছে। ফল চাষে বৈচিত্র্যের পাশাপাশি নতুন বাজারও তৈরি হয়েছে। রপ্তানি বাড়ছে। ভারত, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকাসহ ৩৮টি দেশে বাংলাদেশের আম, লিচু, পেয়ারার চাহিদা রয়েছে।

আয়তনে বিশ্বে ৯৪তম, জনসংখ্যায় অষ্টম বাংলাদেশ। সবচেয়ে কম জমি আর বেশি মানুষের এই দেশে বছরে ১০ শতাংশ হারে ফল চাষ বাড়ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে আমের উৎপাদন দ্বিগুণ, পেয়ারা 

দ্বিগুণের বেশি, পেঁপে আড়াই গুণ এবং লিচু উৎপাদন ৫০ শতাংশ বেড়েছে। চার-পাঁচ বছর নতুন ফল ড্রাগন ও অ্যাভোকাডো এবং দেশি ফল বাতাবিলেবু, তরমুজ, খরমুজ, লটকন, আমড়া ও আমলকীর উৎপাদনও বেড়েছে।

বছর পাঁচেক আগেও ড্রাগন ছিল বড় সুপারশপের ফল। দাম বেশি থাকায় কেবল অবস্থাপন্ন ক্রেতারা কিনতেন বিদেশ থেকে আসা এ ফল। এখন ফুটপাতের দোকান কিংবা ভাসমান ভ্যানেও শোভা পাচ্ছে ড্রাগন। খুচরা বাজারে আকারভেদে প্রতি কেজি ড্রাগন ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড.

সাত্তার মণ্ডল বলেন, দেশে আশাব্যঞ্জক হারে বিদেশি ফল উৎপাদন হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের সঙ্গে সঙ্গে আমদানিনির্ভরতাও কমছে। এ খাতে উৎপাদন বাড়াতে এবং উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে কিছু নীতি-সহায়তা দিতে হবে সরকারকে। এটি আমদানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি, মূলধন জোগানসহ বিভিন্নভাবে হতে পারে। তিনি বলেন, এখনও ফল সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ ও প্যাকেজিং ব্যবস্থা আধুনিক হয়নি। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন।

একসময় বেশির ভাগ স্থানীয় ফল গ্রীষ্মের তিন মাস পাওয়া যেত। মানুষ সারা বছর অপেক্ষা করত মে, জুন ও জুলাই মাসের জন্য। এ সময় আম, লিচু, কাঁঠাল ও অন্যান্য ফল বাজারে আসে। দৃশ্যপট এখন পাল্টেছে। অনেক ফল এখন সারা বছর উৎপাদন হয়, পাওয়া যায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন’ প্রকল্পের সাবেক পরিচালক ড. মো. মেহেদী মাসুদ বলেন, আম, কলা, পেঁপে, পেয়ারাসহ অনেক ফলের নতুন জাত এসেছে। কিছু জাত আগাম এবং দেরিতে ফলন দেয়। ফলে সারা বছর ফলের সরবরাহ থাকে। 

ঢাকা মহানগর ফল আমদানি-রপ্তানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুল করিম সমকালকে বলেন, দেশি ফলের উৎপাদন বেশ ভালো। অনেক বিদেশি ফলও এখন দেশে উৎপাদিত হচ্ছে। উৎপাদন ভালো হওয়ায় মৌসুমি ফলের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকে এবং দামও স্থিতিশীল থাকে। 
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ফলের আমদানি খরচ বেড়েছে। আগে ২০ কেজি আপেলের প্যাকেটে শুল্ক দিতে হতো ৩০০ টাকা। এখন সেটা ১ হাজার ৪০০ টাকা। এক কেজি আঙুরে দিতে হতো ৩০ টাকা, এখন ১০০ টাকা। আবার ডলারের দাম বেশি। আবার বিদেশি ফল সবুজ মাল্টা, ড্রাগন এগুলো দেশে উৎপাদন হচ্ছে। তাই বিদেশি ফলে ওপর নির্ভরতা কমছে, আমদানিও কমছে।

ফল উৎপাদনে ইতিবাচক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সংরক্ষণ একটি বড় সমস্যা। এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, সরকারের পার্টনার প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপী আধুনিক কোল্ডস্টোরেজ স্থাপনের কাজ চলছে। দীর্ঘমেয়াদি ফল সংরক্ষণের জন্য নতুন প্রযুক্তি ও গবেষণায় সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। কাঁঠাল, আম ও আনারস শুকিয়ে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে, যাতে সারা বছর ফল পাওয়া যায় এবং খাদ্যের পুষ্টিমান বজায় থাকে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফল ফল চ ষ দশম ক সরক র আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

কৃষি বিবর্তনের গল্প বলে যে জাদুঘর

বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির মূলে রয়েছে কৃষি। এই কৃষির বিবর্তনের গল্প, এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষের জীবন, প্রযুক্তির বিকাশ এবং গ্রামীণ সমাজের ঐতিহ্য যেন এক অমূল্য উত্তরাধিকার।

সময়ের প্রবাহে অনেক কিছুই হারিয়ে যাচ্ছে, ভুলে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। সেই হারানো ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ ও তুলে ধরার প্রয়াসেই গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম কৃষি জাদুঘর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি জাদুঘর।

আরো পড়ুন:

জাপানের এনইএফ বৃত্তি পেলেন বাকৃবির ২০ শিক্ষার্থী

গোপনে বাকৃবি ছাত্রীদের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি তুলে সাবেক ছাত্রকে দিতেন আরেক ছাত্রী

বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে, বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) ঠিক সামনেই সবুজ দেবদারু গাছে ঘেরা এক মনোরম পরিবেশে দাঁড়িয়ে আছে এই কৃষি জাদুঘর। প্রকৃতির কোলে যেন কৃষির ইতিহাস কথা বলে এখানে।

২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মু. মুস্তাফিজুর রহমানের হাত ধরে জাদুঘরটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়, যার মূল স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হোসেন। পরবর্তীতে ২০০৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম এর উদ্বোধন করেন।

নানা প্রতিবন্ধকতা ও জনবল সংকটের কারণে কিছুদিন বন্ধ থাকলেও, ২০০৭ সালের ৩০ জুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসাইন মিঞাঁ এটি পুনরায় দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এটি দেশের কৃষি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তির এক জীবন্ত সংগ্রহশালা হিসেবে পরিচিত।

৫ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত এই অষ্টভুজ আকৃতির ভবনটি স্থাপত্যগত দিক থেকেও দারুণ দৃষ্টিনন্দন। প্রবেশদ্বার পেরিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে রঙিন মাছের অ্যাকুয়ারিয়াম, পাশে প্রাচীন সাতটি খনার বচন। প্রবেশমুখের ঠিক পরেই দুটি অফিস কক্ষ, আর একটু ভেতরে এগোলেই দেখা যায় একটি ছাদহীন বৃত্তাকার বাগান, যা প্রাকৃতিক আলোর ছোঁয়ায় উজ্জ্বল। সেই বাগানের চারপাশেই রয়েছে সংরক্ষণশালার বিভিন্ন কক্ষ। প্রতিটি কক্ষই যেন কৃষির একেকটি অধ্যায়।

জাদুঘরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো বীজ সংগ্রহশালা। এখানে রয়েছে ধান, গম, ভুট্টা, তিসি, চিনাবাদাম, কাউনধান, ফ্রেঞ্চ বিন, ফাবা বিনসহ নানা ফল ও সবজির বীজ। দেখা মেলে বিরল প্রজাতির তৈকর ফলের বীজ, যা একসময় আচার ও জেলি তৈরিতে ব্যবহৃত হতো। রয়েছে বহুল পরিচিত ভ্যান্না বীজ, যার তৈল দিয়ে কসমেটিক ও ঔষধি পণ্য তৈরি হয়।

মাটির নানা প্রকার নমুনা, প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম সার, এমনকি পাহাড়ি চাষাবাদের মডেলও স্থান পেয়েছে এখানে।

শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও দর্শনার্থীদের শিক্ষার জন্য প্রদর্শিত হয়েছে বিভিন্ন ফসল রোগের চিত্র, আক্রান্ত বীজ, ও ব্যাকটেরিয়ার নমুনা। এ অংশের এক বিশেষ আকর্ষণ আড়াই কেজি ওজনের এক বিশাল মিষ্টি আলু, যা দর্শনার্থীদের বিশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

জাদুঘরের আরেক অংশ যেন এক ক্ষুদ্র প্রাণিবিজ্ঞান জাদুঘর। এখানে প্রদর্শিত আছে বুনো মহিষ, হরিণের শিং, গরু, অজগর ও গোখরা সাপের কংকাল। রয়েছে সংরক্ষিত কালো মেটো ইঁদুর, ধারাই সাপ, এবং কচ্ছপের খোল ও কঙ্কাল।

উপরে তাকালে দেখা যায় এক বিশাল প্রিজার্ভড শকুন, সে যেন আকাশে ডানা মেলে উড়ছে। রয়েছে প্লাটিপাসের কংকালও, যা এক বিরল প্রাণীর বাস্তব নিদর্শন। প্রতিটি নমুনাই যেন দর্শনার্থীকে স্মরণ করিয়ে দেয়, কৃষি কেবল ফসল বা জমির নয়, এটি প্রকৃতি ও প্রাণের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।

গ্রামীণ জীবনের বৈচিত্র্যও এখানে তুলে ধরা হয়েছে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে। এক কক্ষে সাজানো আছে ঢেকি, কুলা, পানের ডাবর, হুকা, হারিকেন, কুপি বাতি, গরুর গাড়ির মডেল, এমনকি মাছ ধরার পুরোনো যন্ত্রও। রয়েছে তবলা, বেহালা, আদুরী, ক্রাম ও নাতকসহ বিভিন্ন দেশীয় বাদ্যযন্ত্র।

এক পাশে দেখা যায় ‘গিলা’, যা একসময় বর-কনের গোসল অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হতো। এখনকার তরুণ প্রজন্ম হয়তো নামটিও জানে না, অথচ এটি ছিল গ্রামীণ সংস্কৃতির এক অপরিহার্য অংশ।

আরো রয়েছে কৃষকের বসতবাড়ির পূর্ণাঙ্গ মডেল, যা দেখতে যেন একেবারে বাস্তব কৃষকের ঘর। এখানে দেখা যায় কৃষকের হালচাষের দৃশ্য, রান্নাঘর, ধান রাখার গোলা, গরুর খোঁয়াড় এবং গৃহিণীর সাজানো রান্নার জায়গা। যেন একবারে গ্রামের জীবনচিত্র ফুটে উঠেছে দেয়াল আর মডেলের মধ্যে।

প্রযুক্তির ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য জাদুঘরে স্থান পেয়েছে পুরনো মাইক্রো কম্পিউটার, ডট প্রিন্টার, পাওয়ার টিলার, ধান মাড়াইয়ের আধুনিক যন্ত্র, ঘাণি, ডিঙি নৌকা, কাঁঠের তৈরি গরুর গাড়ি, তালগাছের কুন্দা ও উপজাতিদের পোশাক। এক পাশে ঝুলছে হরিণের চামড়া, অন্য পাশে সাজানো উপজাতীয় কৃষি উপকরণ, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এই উপকরণগুলো কেবল প্রযুক্তির বিবর্তনের ইতিহাস নয়, বরং কৃষির সঙ্গে মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনধারার মেলবন্ধনের প্রতীক।

জাদুঘরের আরেক বিশেষ প্রদর্শনী হলো প্রাচীন থেকে আধুনিক সময়ের মুদ্রার সংগ্রহ। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের মুদ্রা এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে। এগুলো দেখে কৃষিনির্ভর অর্থনীতির বিকাশ ও সামাজিক পরিবর্তনের চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

জাদুঘরের প্রতিটি কোণ যেন বলে, কৃষিই বাংলাদেশের প্রাণ। এখানকার প্রতিটি উপকরণ, প্রতিটি মডেল, প্রতিটি নমুনা কৃষির বিকাশ ও মানুষের সংগ্রামের গল্প বহন করে। দর্শনার্থীরা এখানে এসে কৃষির অতীত ঐতিহ্য থেকে বর্তমান প্রযুক্তির রূপান্তর পর্যন্ত এক নজরে দেখতে পান।

বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “এটি দেশের প্রথম এবং সবচেয়ে উপকরণসমৃদ্ধ কৃষি জাদুঘর। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে এটিকে দোতলা ভবনে রূপান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে, যেখানে কৃষি ভিত্তিক ১৪টি জেলার ঐতিহ্যবাহী কৃষি উপকরণ সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।”

তিনি আরো বলেন, “দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য ভবিষ্যতে টিকিট ব্যবস্থা চালুর কথাও ভাবা হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এবং জাদুঘরের রক্ষণাবেক্ষণেও ভূমিকা রাখবে।”

এই কৃষি জাদুঘর শুধু কৃষি উপকরণের প্রদর্শনী নয়, বরং এটি বাংলাদেশের কৃষি সভ্যতার ইতিহাস, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি ও মানুষের সম্পর্কের এক সজীব দলিল। শহরের কোলাহল আর কংক্রিটের ভিড় থেকে বেরিয়ে কেউ যদি এখানে আসে, তবে মুহূর্তেই যেন হারিয়ে যায় মাটির গন্ধে, কৃষকের ঘামে, বাংলার গ্রামীণ জীবনের সহজ সরল সৌন্দর্যে।

জাদুঘরটি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে এবং প্রতি শনিবার বন্ধ থাকে। সময় সুযোগে একবার ঘুরে গেলে দেখা মিলবে বাংলাদেশের কৃষির হাজার বছরের গল্প, যা মাটি, ঘাম, বীজ আর ঐতিহ্যের বন্ধনে গাঁথা এক অনবদ্য ইতিহাস।

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কৃষি বিবর্তনের গল্প বলে যে জাদুঘর
  • একসময় ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ভবিষ্যৎ তারকা, এখন ক্লাব খুঁজে বেড়াচ্ছেন