ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুর ওপর পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ‘জায়নবাদীদের’ কড়া বার্তা দিলেও সামরিক বিশ্লেষকদের ধারণা, তেহরান এখনো তার নতুন প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে নামায়নি।

গত শুক্রবার (১৩ জুন) বিনা উসকানিতে ইরানের ওপর আগ্রাসী হামলা চালায় ইসরায়েল। পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক ঘাঁটি ও আবাসিক এলাকার ওপর চালানো এ হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণুবিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক।

ইসরায়েলের এ কর্মকাণ্ডের জবাবে ইরানের সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিক পাল্টা হামলা শুরু করে। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) অ্যারোস্পেস ফোর্স গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস থ্রি’র অংশ হিসেবে ১৩ দফায় ইসরায়েল লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

ইরান রাত ও দিন—উভয় সময়েই হামলা চালাচ্ছে। সময়ের অনিয়মিত অবস্থা ইসরায়েলি বাহিনীকে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। ভুয়া অভিযানের সঙ্গে প্রকৃত হামলার সমন্বয়ের মাধ্যমে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইরানি হামলায় ব্যবহার করা হচ্ছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, আত্মঘাতী ড্রোনসহ বিভিন্ন ধরনের মারণাস্ত্র।

সামরিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরানের হামলার প্রধান ১০টি বৈশিষ্ট্য ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে একপ্রকার অকার্যকর করে দিয়েছে। বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

আরও পড়ুনইরান কীভাবে বিশ্বের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভাঙতে সক্ষম হচ্ছে১৯ জুন ২০২৫

১.

ইরান রাত ও দিন—উভয় সময়েই হামলা চালাচ্ছে। সময়ের অনিয়মিত অবস্থা ইসরায়েলি বাহিনীকে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না।

২. ভুয়া অভিযানের সঙ্গে প্রকৃত হামলার সমন্বয়ের মাধ্যমে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।

৩. হামলায় ব্যবহার করা হচ্ছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, আত্মঘাতী ড্রোনসহ বিভিন্ন ধরনের মারণাস্ত্র।

৪. ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ‘থাড’, ‘আয়রন ডোম’ ও ‘ডেভিডস স্লিং’-এর মতো আধুনিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করে লক্ষ্যে পৌঁছাচ্ছে। এতে ইসরায়েল বুঝে গেছে, তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা আসলে নয়।

৫. বিভিন্ন ধরনের ও অপ্রত্যাশিত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে থেমে থেমে, যা প্রতিরক্ষাব্যবস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

আরও পড়ুনইসরায়েলে হামলায় যে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইরান০২ অক্টোবর ২০২৪

৬. ইরানের বাহিনী ভিন্ন ভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে, যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে বিস্মিত করছে।

৭. হামলার পরিসীমা নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ নয়; ইসরায়েলজুড়েই ইরান হামলা চালাচ্ছে—উত্তরের শেষ প্রান্ত থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত।

৮. ইরানের হাতে লক্ষ্যবস্তুর একটি ‘ডেটা ব্যাংক’ রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা সামরিক ঘাঁটি, তেল শোধনাগারসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে আঘাত হানতে পারছে।

৯. ইরান বারবার সতর্ক করে দিয়েছে—অধিকৃত ভূখণ্ডের (ইসরায়েল) কোনো স্থান আর নিরাপদ নয়।

১০. ইরানের বেশ কয়েকটি নতুন প্রজন্মের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এখনো ব্যবহার করা হয়নি। ফলে ভবিষ্যতেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চমকে দেওয়ার মতো হামলা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনহয়তো মেয়েকে জড়িয়ে সাহস দিতে চেয়েছিলেন ইরানি মা, তখনই পড়ল ইসরায়েলি বোমা২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুন‘এবার আমরা পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধের চিন্তা করছি’, সাবেক ইসরায়েলি মন্ত্রীর হুমকি৪ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ইসর য় ল লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

ডি ব্রুইনা-সিটির পুনর্মিলনীতে হলান্ডের দ্রুততম ‘ফিফটি’

ম্যানচেস্টার সিটি ২-০ নাপোলি

ইতিহাদ ছেড়ে গিয়েছিলেন গত জুনে। তারপর এবারই তাঁর প্রথম ফেরা বড় সাধের এই স্টেডিয়ামে। ম্যানচেস্টার সিটির দর্শকেরা তাঁকে নায়কের মর্যাদায় বরণও করে নিলেও কোথায় যেন একটা অতৃপ্তি থেকে গেল। কেভিন ডি ব্রুইনা এখন হতে পারেন প্রতিপক্ষ, তবু ম্যাচের মাত্র ২৬ মিনিটে তাঁর বদলি হয়ে মাঠ ছাড়ার সময় সিটির দু-একজন সমর্থকদের মুখটা শুকনো দেখা গেল। ক্লাব কিংবদন্তিকে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁরা সম্মান দেখিয়েছেন, তবে মাঠে আরও কিছুক্ষণ দেখতে চেয়েছিলেন নিশ্চয়ই!

কৌশলগত কারণে মাঠ ছাড়তে হয় ডি ব্রুইনাকে। নাপোলি কোচ আন্তোনিও কন্তে অবশ্য তাতে হার এড়াতে পারেননি। বিরতির পর আর্লিং হলান্ড ও জেরেমি ডকুর গোল হজম করতে হয়। সিটির ২-০ গোলের এ জয়ে দারুণ এক রেকর্ডও গড়েন হলান্ড।

৫৬ মিনিটে তাঁর গোলটির উৎস সিটি মিডফিল্ডার ফিল ফোডেন। লব করে দারুণভাবে বলটা তুলে সামনে বাড়িয়ে দেন, হেডে চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজের ৫০তম গোল তুলে নেন হলান্ড। সেটা আবার এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে দ্রুততম। ৪৯ ম্যাচে ‘ফিফটি’ পাওয়া হলান্ড পেছনে ফেললেন রুদ ফন নিষ্টলরয়কে (৬২ ম্যাচ)।

ডকুর গোলটি দেখার মতো। ৬৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বল পেয়ে ভেতরে ঢুকে গোল করার পথে নাপোলির তিন খেলোয়াড় মিলেও তাঁকে থামাতে পারেননি। সিটির এই দুই গোলে এগিয়ে যাওয়া আসলে একটি সুবিধার ফল। ২১ মিনিটে বক্সে হলান্ডকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন নাপোলি অধিনায়ক ও রাইট ব্যাক জিওভান্নি ডি লরেঞ্জো। এরপর ১০ জনে পরিণত হওয়া ইতালিয়ান ক্লাবটির ওপর চেপে বসে সিটির আক্রমণভাগ।

গোল করলেন জেরেমি ডকু

সম্পর্কিত নিবন্ধ