ব্যাটিংয়ে যশস্বী জয়সোয়াল আর আম্পায়ারিংয়ে শরফুদ্দৌলা সৈকত—এমন পরিস্থিতিতে কিছু একটা যেন ঘটবেই। গত কয়েক মাসের একাধিক ঘটনা তা-ই বলে। এবার এজবাস্টন টেস্টে আবারও আলোচনায় ভারতীয় ওপেনার ও বাংলাদেশি আম্পায়ার।

না, দুজনে একে অপরের মুখোমুখি হয়ে পড়েননি। বরং জয়সোয়ালকে নিয়ে শরফুদ্দৌলার সিদ্ধান্তে বিতর্কে জড়িয়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। তবে দিন শেষে যা হয়েছে, তাতে শরফুদ্দৌলার সিদ্ধান্তই সঠিক প্রমাণিত হয়েছে।

ঘটনাটি ইংল্যান্ড-ভারত দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ বিকেলের। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের অষ্টম ওভারে জয়সোয়ালের বিরুদ্ধে এলবিডব্লুর আবেদন করেন ইংলিশ পেসার জশ টাং। দায়িত্বে থাকা শরফুদ্দৌলার আঙুল তুলে জয়সোয়ালকে আউট ঘোষণা করেন।

সিদ্ধান্তটি ইংল্যান্ডকে খুশি করলেও জয়সোয়াল ছিলেন দ্বিধাগ্রস্ত। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করবেন কি না, এ নিয়ে কথা বলেন সঙ্গী লোকেশ রাহুল। বেশ সময় নিয়েই রিভিউ নেওয়ার কথা জানান জয়সোয়াল, নিয়মানুযায়ী শরফুদ্দৌলা সেটি তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে পাঠিয়ে দেন।

ঘটনার এ পর্যায়ে স্টোকস ছুটে যান শরফুদ্দৌলার দিকে। তাঁর দাবি, রিভিউ নেওয়ার ১৫ সেকেন্ডের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেছে। রিভিউ নেওয়ার সুযোগ আর নেই। এ সময় শরফুদ্দৌলা তাঁকে জানান, সময়ের মধ্যেই জয়সোয়াল রিভিউ নিয়েছেন। তবে নিয়মের মধ্যেই রিভিউ হয়েছে জানালেও স্টোকস সেটি মানতে রাজি নন। বেশ কিছুটা সময় স্টোকস তর্ক করে যেতে থাকেন আম্পায়ারের সঙ্গে। এর মধ্যে ম্যাচের অপর আম্পায়ার ক্রিস গাফানিও এসে যোগ দেন। পুরো দৃশ্যপটে স্টোকসকে বেশ অসন্তুষ্ট দেখা গেছে।

এদিকে টিভি আম্পায়ার পল রাইফেল পর্যালোচনা করে দেখতে পান, জয়সোয়াল আউটই ছিলেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানার পর মাঠ ছাড়েন জয়সোয়াল, ভারত হারায় একটি রিভিউ। অর্থাৎ শরফুদ্দৌলার আউটের সিদ্ধান্ত সঠিকই ছিল—মাঝখানে জয়সোয়ালের মনে হয়েছে আম্পায়ার সঠিক সিদ্ধান্ত দেননি, স্টোকসের মনে হয়েছে আম্পায়ার নির্ধারিত সময়ের পরে রিভিউ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন।

এর আগে ভারতের প্রথম ইনিংসেও জয়সোয়ালের বিরুদ্ধে আউটের আবেদনে সঠিক ছিলেন শরফুদ্দৌলা। তখন ক্রিস ওকসের বলে জয়সোয়ালকে এলবিডব্লু দেননি শরফুদ্দৌলা, সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ স্টোকস রিভিউ নিলেও ‘আম্পায়ার্স কল’ বহাল থাকে। গত ডিসেম্বরে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির মেলবোর্ন টেস্টে জয়সোয়ালকে তৃতীয় আম্পায়ার হিসেবে আউট দিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিলেন শরফুদ্দৌলা।

চলমান ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজে এজবাস্টন টেস্টসহ দুটি ম্যাচে অনফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করার কথা শরফুদ্দৌলার। এখন পর্যন্ত এজবাস্টন টেস্টে ৭টি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়েছে ভারত ও ইংল্যান্ড। এর মধ্যে ব্রাইডন কার্সের বিরুদ্ধে মোহাম্মদ সিরাজের এলবিডব্লুর নটআউট সিদ্ধান্ত বাদে আর একটিও সফল হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শরফ দ দ ল র আম প য় র র জয়স য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

নানাবাড়ি থেকে ফেরার পথে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ

মির্জাপুরে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার এক সপ্তাহ পর গত শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত মেহেদি খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২৭ জুন মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেন ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা।

গ্রেপ্তার মেহেদি খান উয়ার্শী ইউনিয়নের সাফর্তা গ্রামের লিটন খানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগও রয়েছে।

কিশোরীর বক্তব্য থেকে জানা গেছে, অভিযুক্ত মেহেদি খান কিছুদিন ধরে ওই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সে। গত ২৭ জুন বিকেলে ওই কিশোরী তার এক বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে পাশের গ্রামে নানাবাড়িতে বেড়াতে যায়। বিকেল ৫টার দিকে নানাবাড়ি থেকে নিজের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় তারা। কিছুদূর যাওয়ার পর ওই গ্রামেরই একটি নির্জন স্থানে পৌঁছলে পেছন দিক থেকে এসে দু’জনের হাত ধরে টানাহ্যাঁচড়া করতে থাকে মেহেদি খান। কিশোরীর বান্ধবী দৌড়ে মেহেদির বাড়িতে যায় ঘটনা জানাতে। এ সময় ওই কিশোরীকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ কথা কাউকে বললে প্রাণে মারার হুমকি দেয়।

ঘটনা জানার পর কিশোরীর পরিবার মাতবরদের কাছে বিচার দাবি করে। ঘটনার এক সপ্তাহ পার হলেও কোনো বিচার না পেয়ে শনিবার থানায় মামলা করেন কিশোরীর মা। এর আগে শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় পুলিশ নিজ বাড়ি থেকে অভিযুক্ত মেহেদি খানকে আটক করে।

শনিবার দুপুরে কিশোরীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একজন মাতবর জানান, রাস্তায় হাত ধরে টানাহ্যাঁচড়া করার অভিযোগ করে কিশোরীর পরিবার। অভিযুক্ত আত্মগোপনে থাকায় সামাজিকভাবে বিচার করা সম্ভব হয়নি। কিশোরীর পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তকে গ্রপ্তার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে তাকে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ