নিম্নকক্ষে পিআর দাবি ইসলামী আন্দোলনের
Published: 1st, August 2025 GMT
ঐকমত্য কমিশনের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসলামী আন্দোলন বলেছে, দেশ থেকে স্বৈরতন্ত্রকে চিরস্থায়ী উৎখাত করার নিমিত্তে জুলাই অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা তা নিশ্চিত করতে উভয়কক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন-ই একমাত্র সমাধান। উচ্চকক্ষের মত নিম্নকক্ষেও পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ শুক্রবার (১ আগস্ট) দলের এক বৈঠকে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “পিআর নিয়ে গণমানুষের মধ্যে সাধারণ ঐক্য তৈরি হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২০০৮ সাল থেকে পিআর নিয়ে কাজ করে আসছে। সাম্প্রতিক পিআর নিয়ে জনমত গড়ে তুলেছে, রাজনৈতিক যুথবদ্ধতা গড়ে তুলেছে।ঐকমত্য কমিশনের সাথে একক আলোচনায় পিআরের পক্ষে জোরাল অবস্থান জানিয়েছে।লিখিতভাবে পিআর নিয়ে আলোচনার দাবি জানানো হয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিরা ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় বারংবার এটাকে এনেছেন।কিন্তু ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফা আলোচনার এজেন্ডাতে নিম্নকক্ষে নির্বাচন পদ্ধতি বিষয়টিই অন্তর্ভুক্ত করা হয় নাই। গতকাল আমাদের প্রেসিডিয়াম সদস্য বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত করার দাবি জানালেও রুঢ়ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। নিম্নকক্ষে পিআরের আলোচনাকে এজেন্ডাভুক্ত না করে বরং আলোচনা তুলতে বাধা দেওয়ার ঘটনায় আমরা ক্ষোভ প্রকাশ করছি এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আচরণের নিন্দা জানাচ্ছি।”
বাদ জুমআ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পল্টনে জুলাই সনদের খসড়া নিয়ে পর্যালেচনা বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন দলের মুখপাত্র ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
তিনি বলেন, “দেশের সব মানুষের ভোটের মূল্যায়ন করতে, দেশকে ভোট নিয়ে অরাজকতা, হানাহানি, সন্ত্রাস থেকে মুক্ত করতে পিআর পদ্ধতির কোনো বিকল্প নাই। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে পিআরই সর্বোত্তম পন্থা। আমরা উভয়কক্ষেই পিআর চেয়েছি এবং সংসদের নিম্নকক্ষই যেহেতু জনপ্রতিনিধিত্ব, আইন প্রণয়ন ও জবাবদিহিতার প্রধান কেন্দ্র সেহেতু নিম্নকক্ষে পিআর বেশি জরুরি।”
“নিম্নকক্ষে পিআর না হলে দেশে স্বৈরতন্ত্রের প্রলম্বিত অপচ্ছায়া থেকেই যাবে। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দলের বিরোধিতার কারণে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও বুদ্ধিজীবীদের মতামতকে এত নগ্ন ও বেপরোয়াভাবে উপেক্ষা করা প্রকারান্তরে জুলাইয়ের রক্তকে উপেক্ষা করা। আমরা এটা প্রত্যাশা করি নাই।”
আতাউর রহমান বলেন, “আমরা ইতিবাচক রাজনীতি করি। সর্বদা সম্ভাবনাকে স্বাগত জানাই, আলীঙ্গন করি। সেই কারণেই উচ্চকক্ষে পিআরের সিদ্ধান্তকে আমাদের আমিরের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে।ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা ঐকমত্য কমিশনকে বলব, নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতির আলোচনা এজেন্ডায় আনুন। আলোচনা হোক। যদি আলোচনায় এই ব্যাপারে ঐকমত্যে না পৌঁছানোও যায় তাহলেও এর রেকর্ড থাকুক। ইতিহাস জানবে, কে বা কারা দেশের কল্যাণের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে।কাদের কারণে স্বৈরতন্ত্রকে চিরস্থায়ী উৎখাত করা যায় নাই। আর ঐকমত্য কমিশন যদি এটাকে এজেন্ডাতেই না আনেন তাহলে এর দায়ভার আপনাদেরকেই বহন করতে হবে।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ম নকক ষ প আর ন য় র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশন হাজির করেছে অনৈক্যের দলিল: বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন
ঐকমত্য কমিশনের কাজ ঐকমত্য তৈরি করা হলেও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে অনৈক্যের দলিল হাজির করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।
জহির উদ্দিন বলেছেন, ‘যতটুকু ঐক্য নিশ্চিত করা যায়, ততটুকুই ঐকমত্য কমিশনের কাজ। বাকিটা ঐক্যের চেষ্টার জন্য রেখে দিতে হবে।…কিন্তু তা না করে যখন এ রকমভাবে হাজির করা হচ্ছে সিদ্ধান্তের নামে, তখন মূলত বিরোধে লিপ্ত হওয়ার জন্য একটা পরোক্ষ আহ্বান এবং একটা বিরোধের এজেন্ডাকে কিন্তু হাজির করা হয়।’
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘পলিটিকস ল্যাব: পাবলিক ডায়ালগ’ শীর্ষক সংলাপে এ কথা বলেন জহির উদ্দিন। সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তরের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। বিএনপি অভিযোগ তুলেছে, তাদের আপত্তির বিষয়গুলো রাখা হয়নি সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়ায়। আলোচনায় আসেনি, এমন কিছুও যুক্ত করা হয়েছে।
সংলাপে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনই জাতির সামনে জানাল যে ঐক্য নাই। ঐকমত্যের কাজই হবে যতটুকু ঐক্য আছে, সেটাকে উত্তোলন করা, যতটুকু নাই ততটুকুকে জানিয়ে রাখা এর চাইতে বেশি কোনো কাজ নাই। কমিশন শব্দটার মধ্যেই তো রয়েছে যে তারা অথরিটি নয়।’
জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা থেকে যদি প্রকৃত অর্থে সংস্কারই উদ্দেশ্য হয়, তাহলে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি মেনে চলার ওপর জোর দেন তিনি।