আরলিং হালান্ড আবারও ইতিহাস লিখলেন। চ্যাম্পিয়নস লিগে সবচেয়ে দ্রুত ৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন তিনি, মাত্র ৪৯ ম্যাচেই! ফন নিস্টেলরয়ের রেকর্ড (৬২ ম্যাচ) ভেঙে এদিন নতুন অধ্যায় রচনা করেন নরওয়ের গোলমেশিন। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে তার দুর্দান্ত হেড এবং পরে জেরেমি ডোকুর গোলেই ১০ জনের নাপোলিকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে প্রতিযোগিতার লিগ পর্ব শুরু করল ম্যানচেস্টার সিটি।

ইতিহাদে রাতটা শুধু রেকর্ডের নয়, আবেগেরও ছিল। গ্রীষ্মে বিদায় নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো নিজের পুরোনো ঘরে ফিরেছিলেন কেভিন ডি ব্রুইনে। দর্শকেরা দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানালেন তাকে। তবে ভাগ্যের পরিহাসে লাল কার্ডের ঘটনার জটিলতায় অ্যান্টোনিও কন্তে তাকে নামিয়ে নিতে বাধ্য হন প্রথমার্ধেই।

আরো পড়ুন:

২১ বছর পর এমন বাজে পরিস্থিতিতে ম্যানসিটি

ম্যানচেস্টার সিটির দাপুটে জয়

শুরুতেই আক্রমণ জমায় সিটি। রেইজেন্ডার্সের ভয়ঙ্কর দূরপাল্লার শট ঠেকান নাপোলির গোলকিপার ভানজা মিলিনকোভিচ-সাভিচ। যিনি একসময় ছিলেন ম্যানইউর খেলোয়াড়। এর পর থেকে যেন গোলরক্ষক হয়ে উঠলেন ঢাল। রড্রির ভলি, ফোডেনের শট, ও’রেইলির হেড, গার্দিওলের প্রচেষ্টা; সবই একে একে ঠেকালেন তিনি।

নাপোলি অবশ্য কিছুটা এগোচ্ছিল। কিন্তু ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় ২১ মিনিটে। ফোডেনের দারুণ পাসে হালান্ড ছুটছিলেন একেবারে গোলের দিকে। শেষ ভরসা হয়ে দাঁড়ান অধিনায়ক দি লরেঞ্জো। রেফারি প্রথমে ট্যাকলকে বৈধ মনে করলেও ভিএআর চেক করে লাল কার্ড দেখানো হয় তাকে। ১০ জনে নেমে যায় নাপোলি।

সুযোগটা কাজে লাগাতে মরিয়া হয় সিটি। হালান্ড একবার মাথায় বল ঠিকঠাক লাগাতে পারেননি। তবে সিটির চাপ বাড়তে থাকে। এর মাঝেই নাপোলি কোচ কন্তে রক্ষণ মজবুত করতে নামান অলিভেরা, আর বিদায় নেন ডি ব্রুইনে। এ সময় বিদায়ী করতালিতে সিক্ত হন তিনি।

বিরতির পরও একই চিত্র। ৫৬ মিনিটে এল ফোডেনের মুহূর্ত। বক্সের সামনে দাঁড়িয়ে অদ্ভুত দক্ষতায় বল তুলে দিলেন দুই ডিফেন্ডারের ওপর দিয়ে। হালান্ড মাথা ছুঁইয়ে ভাসিয়ে দিলেন এমন এক হেড, যা হাত বাড়িয়েও ধরতে পারলেন না দীর্ঘদেহী মিলিনকোভিচ-সাভিচ। সেই গোলেই লেখা হলো ইতিহাস, মাত্র ৪৯ ম্যাচে চ্যাম্পিয়নস লিগে হাফ সেঞ্চুরি!

গোল পাওয়ার পর আরও মুক্ত হয়ে খেলে সিটি। ৬৫ মিনিটে মঞ্চে আসেন ডোকু। ম্যানচেস্টার ডার্বিতে দুই অ্যাসিস্টের পর এবার নিজেই নায়ক। দারুণ গতিতে বক্সে ঢুকে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বল ঠেলে দিলেন গোলরক্ষকের পায়ের ফাঁক দিয়ে। দর্শকাসন তখন উল্লাসে ফেটে পড়ল। ম্যাচও কার্যত সেখানেই শেষ।

অবশিষ্ট সময়ে নাপোলি কেবল রক্ষণ সামলানোর চেষ্টাতেই ব্যস্ত থাকে। সিটি ধীরস্থিরভাবে বল দখলে রেখে আক্রমণ সাজায়। কিন্তু আর গোলের প্রয়োজনও ছিল না। শেষ পর্যন্ত ২-০ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে গার্দিওলার দল।

এই জয়ে শুধু তিন পয়েন্টই নয়, আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে নিল ম্যানসিটি। সামনে প্রিমিয়ার লিগে আর্সেনালের মাঠে বড় লড়াই। তার আগে হালান্ড-ডোকুর এ রকম ফর্ম গার্দিওলার জন্য নিঃসন্দেহে স্বস্তির খবর।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল চ য ম প য়নস ল গ

এছাড়াও পড়ুন:

কৃষকদের পর্যাপ্ত সহায়তা না দিলে কৃষি উৎপাদন ও বাজারব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, কৃষিঋণ শুধু কৃষকদের উৎপাদনই বাড়ায় না, এটি গ্রামীণ উন্নয়ন ও ঋণগ্রহীতাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নেরও অন্যতম কার্যকর সমাধান। বাংলাদেশ যতটুকু এগিয়েছে, কৃষির হাত ধরেই এগিয়েছে। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের উন্নতি হতে পারে কৃষির মাধ্যমেই।

গতকাল বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের একটি হোটেলে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) আয়োজিত ‘কৃষি উদ্যোক্তা সমাবেশ ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘কৃষি শুধু কৃষকের জীবিকা নয়, এটি পুরো জাতির খাদ্যনিরাপত্তা ও অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তাই কৃষি উদ্যোক্তাদের সহায়তা ও সহজ শর্তে ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমরা চাই, প্রকৃত কৃষকের হাতে কৃষিঋণ পৌঁছাক, ব্যাংকিং সেবা সহজ হোক এবং ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কৃষকেরা আরও সুবিধা পান।’

ইউসিবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে কক্সবাজার জেলার প্রায় তিন শ কৃষি উদ্যোক্তা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে ইউসিবির চেয়ারম্যান শরীফ জহীর, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদ, অতিরিক্ত এমডি নাবিল মোস্তাফিজুর রহমান; বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. মকবুল হোসেন; কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল কুমার প্রামাণিক; জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ এম খালেকুজ্জামান; জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা; বিটিভির মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক রেজাউল করিম সিদ্দিক প্রমুখ।

আহসান এইচ মনসুর সতর্ক করে দিয়ে বলেন, কৃষকদের পর্যাপ্ত সহায়তা না দিলে কৃষিপণ্য উৎপাদন ও বাজারব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য পর্যাপ্ত সহায়তা ও ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা জরুরি, যা গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউসিবির চেয়ারম্যান শরীফ জহীর বলেন, ‘আমরা দেশের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য কৃষির টেকসই উন্নয়ন ও কৃষি উদ্যোক্তাদের স্বাবলম্বী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের বিশ্বাস, এ ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।’

ইউসিবির এমডি ও সিইও মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদ বলেন, ‘আমরা শুধু ঋণ দিয়ে দায়িত্ব শেষ করছি না। আমরা চাই উদ্যোক্তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে সফল ও আত্মনির্ভরশীল হোক এবং দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখুক।’

প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তারা জানান, সফল উদ্যোক্তা হতে হলে বাজার বিশ্লেষণ, ব্যবসা পরিকল্পনা, প্রযুক্তি ব্যবহারের কৌশল এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট জ্ঞান থাকা জরুরি। এ ছাড়া তাঁরা ব্যাংকের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করা এবং আর্থিক সহায়তা পাওয়ার সুযোগগুলো কাজে লাগানোর বিষয়েও হাতে-কলমে নির্দেশনা পেয়েছেন এ প্রশিক্ষণ থেকে। অংশগ্রহণকারীরা অনেকেই বললেন, এর আগে ইউসিবির সহায়তায় তারা আধুনিক বীজ, সার কিংবা কৃষি যন্ত্রপাতি পেয়েছেন। তবে সরাসরি প্রশিক্ষণ পেয়ে এবার তারা আরও আত্মবিশ্বাসী।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ভরসার নতুন জানালা’ নামে ইউসিবির একটি অ্যাগ্রো সিএসআর প্রকল্প রয়েছে। এর মাধ্যমে সারা দেশে ৬৪ জেলায় প্রায় ১৪ হাজার কৃষককে ‘কৃষি উদ্যোক্তা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ’ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশের ৫০টি মডেল উপজেলার ৩ হাজার কৃষককে নিবিড় সহায়তা প্রদান করেছে ইউসিবি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ