শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত, দুজনের মৃত্যু
Published: 19th, September 2025 GMT
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৫০ হেক্টর রোপা আমন সম্পূর্ণ নিমজ্জিত।
উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি অফিস ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একাধিক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। খইলকুড়া এলাকায় ১০০ মিটার এবং দীঘিরপাড়ে ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙে লোকালয় ও ফসলি জমিতে পানি ঢুকে পড়ে। এ কারণে ১ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়। এর মধ্যে ৬৫০ হেক্টর সম্পূর্ণ ও ৯১৫ হেক্টর আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত শেরপুর জেলার ভোগাই, চেল্লাখালী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ–নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছিল। ভোগাই নদের পানি বিপৎসীমার নিচে ৯৯ সেন্টিমিটার এবং চেল্লাখালী নদীর পানি ৬১ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় শেরপুরে মাত্র ১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
পাহাড়ি ঢলে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নালিতাবাড়ীতে ১০ বছর বয়সী হুমায়ুন লাকড়ি তুলতে গিয়ে নদীতে ভেসে যায়। রাত ৯টার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। ঝিনাইগাতীতে ১৭ বছর বয়সী ইসমাইল গাছ ধরতে গিয়ে নদীতে ভেসে যায়। আজ তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঝিনাইগাতীর খইলকুড়া ও দীঘিরপাড় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাঁধ ভেঙে নদীর পানি ঘরবাড়ি ও জমিতে ঢুকে পড়েছে। এ কারণে বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জীবিকা ও সম্পদের বড় ক্ষতি হওয়ায় অনেকে সহায়তার অপেক্ষায় আছেন।
খৈলকুড়া কৃষক করিম মিয়া (৫২) বলেন, ‘বাঁধ ভাইঙ্গা নদীর পানি আমগর ফসলের জমি ও ঘরবাড়িত ডুইকা পড়ছে। সারা বছরের পরিশ্রমের ফসল পানিতে ভাইসা গেছে। অহন কেমনে চলমু, বুঝতাছি না। আমরা সরকারের সহযোগিতা চাই।’ ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব খৈলকুড়া গ্রামের সাত্তার মিয়া (৬৫) বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ, কাজ কইরা খাই। প্রতিবছরই পাহাড়ি ঢলে আমগর বাড়িঘর ভাঙে। হঠাৎ কইরা পানি আয়ুনে কোনো রকমে খাট-শোকেজডা বাইর করেছি, আর কিছুই তুলবার পাইছি না। বাঁধটা যদি আগেই ঠিক করত, তাইলে আমগর অহন ক্ষতি হইত না। অহন কেডা দিব আমগরে ক্ষতিপূরণ?’
আরও পড়ুনশেরপুরে ঢলের পানিতে নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর ভেসে উঠল কিশোরের লাশ২ ঘণ্টা আগেউপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম বলেন, কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। দুর্গত পরিবারগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্রুত বাঁধ মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে: আপ বাংলাদেশ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত না হলে তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। এ সময় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির
জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর
দাবিগুলো হলো— আসন্ন জকসু নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত করতে হবে; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে; সব সংগঠনকে সমান সুযোগ দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে; অরাজনৈতিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবির প্রধান সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, “আমরা যখন জকসুর দাবিতে অনশন করছিলাম, তখন প্রশাসন ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের অনশন ভাঙিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একটি মহল নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে।”
তিনি বলেন, “ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা ও বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় ওই মাসে নির্বাচন অসম্ভব। তাই ২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচনের উপযুক্ত সময়।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা জানতে চাই, নির্বাচন পেছানোর মধ্য দিয়ে জকসু নির্বাচন ভণ্ডুল করার কোনো প্রক্রিয়া চলছে কিনা। পুরান ঢাকাকে অস্থিতিশীল করে একটি মহল নির্বাচন পণ্ড করতে চায়। শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম ভোট হবে জকসু নির্বাচন—তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী