চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ ও নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদকে জিম্মি করে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। তারা চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ও রিজাউর রহমানকে ‘ডট গ্যাং’ নামক কিশোর গ্যাং গ্রুপের সঙ্গ ত্যাগ করার আহ্বান জানান। আজ রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়, রাফি ও রিজাউরের প্রশ্রয়ে কিশোর গ্যাং গ্রুপ ‘ডট গ্যাং’ শনিবার ওই হামলা চালায়। মানববন্ধনে সমন্বয়করা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ বিশেষ সুবিধা নিতে কিশোর গ্যাংয়ের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। কিশোর গ্যাংয়ের কেউ চাঁদাবাজি, নারী উত্ত্যক্তসহ নানা অপকর্ম করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।

জানা যায়, ছাত্র আন্দোলনে সারাদেশে নিহত, আহতসহ আন্দোলনের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আন্তর্জাতিক মানের ডকুমেন্টারি তৈরির কাজ করছে চট্টগ্রামের একটি প্রডাকশন হাউস। শনিবার ওই প্রতিষ্ঠানে মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসুদ ও সমন্বয়ক রাসেলকে অবরুদ্ধ করে রাখে ডট গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ সময় ওই প্রতিষ্ঠানের বেশকিছু যন্ত্রপাতি ও আসবাব ভাঙচুর করা হয়। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ডট গ্যাংয়ের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী নারীদের সাইবার বুলিংয়ের শিকারে ফেলা হচ্ছে। এ জন্য তারা রাফি ও রিজাউরকে অভিযুক্ত করেন এবং গ্যাং সদস্যদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, ডট গ্যাংয়ের সাদিক আরমানকে ব্যবহার করে রাফি ও রিজাউর চট্টগ্রামজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করছেন। 

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক রিদোয়ান সিদ্দিকী, সাইফুর রুদ্র, সিয়াম ইলাহী, মিনহাজ রহমান, নিলা আফরোজ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’