সরকারি প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ করা হয়েছে: অর্থসচিব
Published: 17th, January 2025 GMT
অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক ঝুঁকি কমিয়ে আনতে এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভ্যন্তরীণ অডিটিং এর গুরুত্ব বিবেচনা করে অর্থ বিভাগ স্বতন্ত্র অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ স্থাপন করেছে, যা আগামী সপ্তাহ থেকে সম্পূর্ণ কার্যকর হবে।
শুক্রবার মানিকগঞ্জে ‘ইন্টারনাল অডিটিং জার্নি ইন পাবলিক সেক্টর’ বিষয়ক স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এ কথা বলেন তিনি।
খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, আর্থিক ব্যবস্থাপনা শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়, সরকারের সব ব্যয় নির্বাহী প্রতিষ্ঠানও এর সঙ্গে যুক্ত। তাই অর্থ মন্ত্রণালয় পাঁচটি ‘হাই স্পেনর্ডি ডিপার্টমেন্ট’, যেখানে প্রকিউরমেন্ট বেশি হয়– প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভ্যন্তরীণ অডিটিং পাইলটিং হচ্ছে। এ উদ্যোগ সুদূর প্রসারী হবে এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চালু করার জন্য সরকার কাজ করেছে।
কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনটি সভাপতিত্ব করেন বাজেট ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব
সিরাজুন নূর চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.
জাতীয় কর্মসূচি পরিচালক অতিরিক্ত সচিব (বাজেট-১) বিলকিস জাহান রিমি স্ট্রেনদেনিং পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম টু এনবেল সার্ভিস ডেলিভারি (এসপিএফএমএস) অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে রাখেন।
সিরাজুন নূর চৌধুরী বলেন, ইন্টারনাল কন্ট্রোল স্থাপন, আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য ইন্টারনাল অডিটের গুরুত্ব অপরিসীম।
মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সিস্টেম ডিজিটাইজড করার পাশাপাশি এই সিস্টেম ব্যবহারকারী, বিশেষকরে ভেন্ডারদের দক্ষতার বিষয়টিও ভাবতে হবে।
ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ইন্টারনাল অডিট বাস্তবায়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা উন্নয়ন খুবই জরুরি।
বিলকিস জাহান রিমি বলেন, ইন্টারনাল অডিট ম্যানেজমেন্টের ‘থার্ড আই’ হিসেবে কাজ করে এবং এর মাধ্যমে সরকারি বিধিবিধান অনুসরণ করে আর্থিক ব্যবস্থাপনা হচ্ছে কিনা তা জানা যায়। সরকারি পর্যায়ে আমরা পাঁচটি ‘হাই স্পেনর্ডি ডিপার্টমেন্ট’ – প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে সম্প্রসারণ করা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।