মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম খুলনার সুশোভন
Published: 19th, January 2025 GMT
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা হয়েছেন খুলনার ছেলে সুশোভন বাছাড়। রোববার বিকেলে প্রকাশিত ফলাফলে সবাইকে ছাড়িয়ে ৯০ দশমিক ৭৫ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন তিনি।
সুশোভনদের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে। থাকেন খুলনা নগরীর বড় বয়রা এলাকায়। তার বাবা সুভাস চন্দ্র বাছাড় খুলনার টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। মা বন্দনা সেন একসময় শিক্ষক ছিলেন। তবে এখন গৃহিণী। ১৪ বছর আগে একমাত্র সন্তানের দেখভালের জন্য চাকরি ছেড়ে দেন। সুভাস চন্দ্র ও বন্দনা সেন দম্পতির একমাত্র সন্তান সুশোভন।
ছোটবেলা থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন ছিল সুশোভনের। নিজেকে ভবিষ্যতে একজন ভালো মানুষ আর সৎ চিকিৎসক হিসেবে দেখতে চায় সে। প্রতিষ্ঠা করতে চায় এমন একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র যেখানে চিকিৎসা পাবে গরীব-অসহায় মানুষরা। নিজের সাফল্যে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি কৃতিত্ব দেন পরিবারের।
সুশোভন বলেন, আমি কখনো সময় ধরে বা রাত জেগে পড়াশোনা করিনি। পড়ার বাইরে খেলাধুলা করতাম। আমি বই পড়া খুব পছন্দ করি, প্রচুর বই পড়ি।
ছেলেকে নিয়ে স্বপ্নটা এখন আরও বড় বাবা-মায়ের। চিকিৎসক হয়ে দেশের গরীব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে এমনটাই প্রত্যাশা তাঁদের। তার এমন সাফল্যে বাঁধভাঙ্গা আনন্দের জোয়ার বইছে এলাকাতে। মিষ্টিমুখের পাশাপাশি ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়া হয়েছে তাকে।
সুশোভনের মা বন্দনা সেন বলেন, শুনে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। পরে আনন্দে কেঁদে ফেলেছি। আমার সন্তান যেন মানুষের ডাক্তার হয় সেই প্রার্থনা আমাদের। তিনি বলেন, জীবনে কখনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি সুশোভন। নিজে পড়া তৈরি করেছে, আমরা সহযোগিতা করেছি।
বাবা সুভাস চন্দ্র বাছাড় বলেন, আমি তাকে বই কিনে দিতে কখনো কার্পণ্য করিনি। তার মা তাকে সব সময় অনুপ্রেরণা দিয়েছে। ছোটবেলা থেকেই ছেলের স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবে, মানুষের সেবা করবে। বাবা-মা হিসেবে আমরা খুবই গর্বিত।
২০২২ সালে যশোর বোর্ডের টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ২০২৪ সালে সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন সুশোভন। দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। এর আগে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা হয়েছিলেন খুলনার মেয়ে সুমাইয়া মোসলেম মীম।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ