মূল বেতনের ২০ শতাংশ (নূন্যতম ৩ হাজার টাকা) বাড়িভাড়া বাড়ানোসহ তিন দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে বিএনপি।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি দলের পক্ষ থেকে এই দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করব, ৫ পারসেন্ট এনাফ (পর্যাপ্ত) নয়। বিশেষ বিবেচনা আপনাদের করতে হবে।’

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষক–কর্মচারীদের সঙ্গে সংহতি জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান শহীদ উদ্দীন চৌধুরী। এ সময় তিনি এ কথা বলেন।

আরও পড়ুনউপদেষ্টাদের হুঁশিয়ার করলেন ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম১৮ ঘণ্টা আগে

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যেভাবে গত নয় দিন প্রখর রোদে আপনারা আন্দোলন করছেন, এটা তো করার কথা ছিল না। আমরা অনেক সময় অনেকভাবে দেখেছি, শিক্ষকদের বারবার রাস্তায় আসতে হয়। আন্দোলন করতে হয়। আবেদন করতে হয়। সেই কেন-এর উত্তরটা দিতে যেয়ে আমরা আপনাদের বলছি, আগামী দিনে আর যাতে আন্দোলন না করতে হয়, সে জন্য ওই পূর্ণ জাতীয়করণের কথাটাই আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম।’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাকে জাতীয়করণ করার ঘোষণা দিয়ে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, এই প্রতিশ্রুতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। এ সময় তিনি শিক্ষক–কর্মচারীদের আন্দোলনে বিএনপির পক্ষ থেকে সংহতির কথাও জানান।

শিক্ষক-কর্মচারীদের উদ্দেশে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী আরও বলেন, ‘আপনাদের দাবি অন্তর্বর্তী সরকার এর মধ্যে মেনে নিয়েছে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাবি কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছানোর জন্য, ২০ পারসেন্টের যে দাবি, সেটা এখনো হয়তো আপনারা পান নাই। তাই আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করব, ৫ পারসেন্ট এনাফ (পর্যাপ্ত) নয়। বিশেষ বিবেচনা আপনাদের করতে হবে।’

আরও পড়ুনদাবি আদায় না হলে দুপুরে ‘মার্চ টু যমুনা’ করবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা১৬ অক্টোবর ২০২৫

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। কোনো বিশৃঙ্খলা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।’

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন দেলোয়ার হোসেন আজিজী। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিবর্তন হবে, কিন্তু শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ফিরে যাব না। যদি বিকেলের মধ্যে আমাদের দাবি মানা হয়, তাহলে রাতের মধ্যে আমরা শহীদ মিনার ছেড়ে চলে যাব।’

মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম তিন হাজার টাকা) বাড়িভাড়া, দেড় হাজার টাকা চিকিৎসাভাতা ও কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করার  দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা ১২ অক্টোবর থেকে টানা আন্দোলন করে আসছেন।  শিক্ষক-কর্মচারীরা সব ধরনের শ্রেণি কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছেন।

আরও পড়ুন‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা১৫ অক্টোবর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন দ র ব এনপ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বাবরি মসজিদ নির্মাণের ডাক দেওয়ায় সাসপেন্ড তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা

ভারতে আবারো বাবরি মসজিদ নির্মাণের ডাক দেওয়া হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস। মমতার দলের সিনিয়র এই নেতা ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিধায়ককে মূলত দলবিরোধী কাজের জন্যই সাসপেন্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। 

তিনি বলেন, “হুমায়ুনের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক রাখবে না দল।”

সম্প্রতি বাবরি মসজিদ শিলান্যাসের ঘোষণা এবং এই ইস্যুতে দলের মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে দিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে নিশানা করে সবচেয়ে বড় বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন কবীর। সেই সাথে নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যেই কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন কবীর। যদিও বাবরি মসজিদ পুনঃনির্মাণের ব্যাপারে অটল থাকেন তিনি। 

কয়েক দিন আগেই বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমের সামনে কবীর জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের ৬ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বেলডাঙ্গায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করা হবে। মসজিদটি সম্পূর্ণ হতে তিন বছর সময় লাগবে। শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রায় দুই লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবেন এবং মঞ্চে ৪০০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত থাকবেন। অবশ্য ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজ্য বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই প্রথমবারের জন্য বাবরি মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হুমায়ূন কবীর। 

এবারই প্রথম নয় বিভিন্ন সময়ে নিজের দলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল এই বিধায়কের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে সতর্কও করা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন থেকে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বাবরি মসজিদ করার কথা বলে বাবরি ধ্বংসের স্মৃতি উসকে দিতে চাইছেন কবীর। আমরা মনে করি এর পিছনে বিজেপি রয়েছে। ওরা হুমায়ুনকে সামনে রেখে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের রাজনীতি করছে।”

ফিরহাদ আরো বলেন, “কেউ কোথাও নিজের অর্থে মসজিদ করলে করতেই পারেন। কিন্তু দলের বিধায়ক সংহতি দিবসের (৬ ডিসেম্বর) তারিখটাকেই বেছে নিলেন শিলান্যাসের জন্য? কেন?” ফিরহাদের দাবি, হুমায়ুন বাংলায় দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে।

যদিও দলের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিতে নারাজ হুমায়ুন। সাসপেন্ডের সিদ্ধান্তের কথা জানামাত্রই আগামী ২২ ডিসেম্বরই নতুন দল ঘোষণা দেন কবীর। 

যদিও হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণার পরেই দেশ জড়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। এমনকি ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও সিনিয়র বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেন, “আমরা উপরওয়ালা বা ইসলামের নামে নির্মিত মসজিদগুলোকে সম্মান করব, কিন্তু বাবরের নামে কোনো মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা হলে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মতো পরিণতি হবে।” 

মমতা ব্যানার্জীকে পরামর্শ দিয়ে উমা ভারতী বলেন, “যারা বাবরের নামে মসজিদ তৈরির কথা বলেন তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” 

ঢাকা/সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ