ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় গ্রেপ্তার ১৫০০ জনকে ক্ষমা করলেন ট্রাম্প
Published: 21st, January 2025 GMT
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার ঘটনায় জড়িত ১৫০০ জনকে ক্ষমা করে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় সোমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই এ সংক্রান্ত পদক্ষেপ নেন তিনি।
ক্যাপিটলে দাঙ্গার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আইনি কৌঁসুলি ড্যারেক স্ট্রম বলেন, বন্দিরা যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার রাতের আগেই ওয়াশিংটনের কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন বলে তিনি আশা করছেন।
ক্যাপিটলে দাঙ্গায় জড়িত হাজার দেড়েক সমর্থককে মুক্তি দেওয়ার ইঙ্গিত কয়েক মাস আগে থেকেই দিয়ে রেখেছিলেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি তা বাস্তবায়ন করলেন।
এছাড়া দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বড় ধরনের কিছু ঘোষণা দিয়েছেন, যার মধ্যে মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, পানামা খাল ফেরত নেওয়া, বিদেশি পণ্যের আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির মতো ঘোষণাও রয়েছে।এর পাশাপাশি বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশও বাতিল করেন তিনি।
সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় যুক্ত থাকার অভিযোগে আটক হওয়া প্রায় ১৫০০ জনকে ক্ষমা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের দিনের প্রায় পুরোটা সময় তার সমর্থকরা ডিসি জেলের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ক্যাপিটল ওয়ান অ্যারেনায় ভাষণ দেন, তখনই তিনি ঘোষণা করেন- ওভাল হাউসে পৌঁছেই তিনি ৬ জানুয়ারির ঘটনার জন্য অভিযুক্তদের ক্ষমা করবেন। সেসময় উপস্থিত জনতার মধ্য থেকে আনন্দধ্বনি শোনা যায়।
ক্যাপিটল হিল আক্রমণের জন্য জেলবন্দি ব্যক্তিদেরকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘রাজনৈতিক বন্দি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যদিও এটি পরিষ্কার নয় যে, এই ক্ষমা কতদূর পর্যন্ত যাবে এবং দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদেরকেও এই ক্ষমার অন্তর্ভুক্ত করা হবে কিনা।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। কংগ্রেসের যৌথ ওই অধিবেশনে সেদিন জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছিল।
একপর্যায়ে ক্যাপিটল ভবনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ও মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন ট্রাম্প সমর্থকরা। হামলাকারীদের অনেকেই ছিল সশস্ত্র। ভেতরে ঢুকে সিনেট হলে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় তারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শপথগ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
হরমুজ প্রণালি বন্ধ করল ইরান, তেলের বাজারে উত্তেজনা
তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে এক ঘোষণায় জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হরমুজ প্রণালি দিয়ে কোনো জাহাজ চলতে পারবে না। এরই মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দামও বেড়ে গেছে।
এই ঘোষণায় স্পষ্ট হয়ে গেছে, ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আরও জোরদার করবে এবং হরমুজ প্রণালিকে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করবে, যা বিশ্ব জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ জলপথ।
হরমুজ প্রণালি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং কৌশলগতভাবে সংবেদনশীল একটি সমুদ্রপথ। এটি পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে এবং ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত।
প্রণালিটির প্রস্থ খুব বেশি নয়, সবচেয়ে সংকীর্ণ জায়গায় মাত্র ৩৯ কিলোমিটার, যার মধ্যে কেবল দুটি সংকীর্ণ চ্যানেল দিয়ে বড় জাহাজ চলাচল করতে পারে। তবে ছোট এই পানিপথ দিয়েই প্রতিদিন বিশ্বের মোট সমুদ্রপথে পরিবাহিত তেলের প্রায় ২০ শতাংশ যাতায়াত করে, যা একে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
হরমুজ প্রণালি দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ইরান প্রায়ই এই প্রণালিকে একটি কৌশলগত চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা বা সামরিক হুমকির জবাবে ইরান একাধিকবার হুমকি দিয়েছে, তারা হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিতে পারে, যা গোটা বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় চরম বিপর্যয় ডেকে আনবে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা বারবার এই প্রণালির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের নৌবাহিনী মোতায়েন করেছে।
ইরানে হামলার পরপরই হরমুজ প্রণালি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। খবর আলজাজিরার।