টিকফা নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা ও মার্কিন দূতের বৈঠক
Published: 22nd, January 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ-সংক্রান্ত কাঠামোগত সমঝোতা চুক্তিসহ (টিকফা) বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঢাকায় মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তাদের আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধিসহ আরো কিছু বিষয় গুরুত্ব পায়।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার কার্যালয়ে ট্রেসি অ্যান সাক্ষাৎ করতে আসেন। এসময় তাদের মধ্যে বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো.
আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন অংশীদার এবং রপ্তানির জন্য বড় বাজার। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ সম্পর্ক আরো জোরালো করার সুযোগ রয়েছে।
সরকার বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে সহজ করতে কাজ করছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরো বেশি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্যাক্টরি স্থাপনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের প্রতি আহ্বান রাখেন।
উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন বলেন, টিকফা চুক্তির পরবর্তী রাউন্ড ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হবে। প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরি করেছে। টিকফা থেকে বাংলাদেশ লাভবান হতে চায়।
এসময় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট (জিটুজি) এবং বিজনেস টু বিজনেস পর্যায়ে অর্থবহ আলোচনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন উপদেষ্টা।
চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বলেন, “নতুন বাংলাদেশে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।”
দুর্নীতি প্রতিরোধ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টরে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন ট্রেসি অ্যান।
বাংলাদেশে কাজ করার সময় সাফল্যের অনেক চিহ্ন রেখে যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স।
ঢাকা/হাসনাত/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ণ জ য উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস