পলাতক আসামি আ.লীগ নেতা বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি
Published: 27th, January 2025 GMT
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে দায়ের মামলার আসামি ময়েজ উদ্দিন তরফদার। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর গাঢাকা দেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। তবে আজ সোমবার শিবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে তাঁকে বিশেষ অতিথি করা হয়েছে। এমন প্রচারপত্র নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মোহসিনা বেগম।
এক আসামিকে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা জানান, পুলিশের তালিকায় পলাতক আসামি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ময়েজ উদ্দিন তরফদার। তাঁকে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিশেষ অতিথি করে কাজটি ঠিক করেননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আশুতোষ চক্রবর্তী জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম। তিনি বিদ্যালয়ের সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা ময়েজ উদ্দিন তরফদারের ঘনিষ্ঠজন। এ কারণে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও সভাপতি নিয়ম ভঙ্গ করে তাঁর ঘনিষ্ঠজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ একাধিকবার বিষয়টি জানালেও কর্ণপাত করেননি। এ ছাড়া ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতির ছেলের নামসহ ৩ সদস্য নিয়ে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির আবেদন করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ক্রীড়া অনুষ্ঠানের সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি হিসেবে ময়েজ উদ্দিনকে অতিথি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার প্রধান অতিথি মোহসিনা বেগমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এতে তিনি বলেন, ‘ময়েজ উদ্দিন তরফদারকে বিশেষ অতিথি করার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি জানলে অনুষ্ঠানের এমন চিঠি করতে দিতাম না।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ আওয় ম ল গ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরা শুরু, চাঁদপুরের মাছঘাটে কর্মব্যস্ততা
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ৭০ কিলোমিটার নদীর অভয়াশ্রমে দুই মাস পর ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরা শুরু হয়েছে। সরকারি পর্যায়ের আদেশে জাটকা রক্ষা ও অন্যান্য মাছ বৃদ্ধিতে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৬০ দিন শিকার বন্ধের পর বুধবার মধ্যরাত থেকেই জেলেরা নদীতে শিকারে নেমেছে। কর্মব্যস্ততা ফিরেছে চাঁদপুরের মাছঘাটে। তবে প্রথম দিনে আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলেরা।
মাছ আহরণ কম হওয়ায় প্রথম দিনে আড়তে তেমন ব্যস্ততা চোখে পড়েনি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ১০ মণ ইলিশও আসেনি মাছের বড় ঘাট বড় স্টেশনে। তাছাড়া বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, সন্দ্বীপসহ দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ আজ দুপুর পর্যন্ত পৌঁছেনি চাঁদপুর মাছ ঘাটে। নদী তীরে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইলিশের কার্গো ও নৌকাও আসেনি। ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ইলিশের পাইকারি বাজার চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন পর বেচাকেনা কিছুটা শুরু হওয়ায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মাঝে।
পুরান বাজারের হরিসভা অঞ্চলের জেলে বাবুল, সেলিম, মনির হোসেন বলেন, ভোরে মাছ ধরতে নেমেছি। নদীতে তেমন মাছ নাই। ইলিশ না পেলেও পোয়া, পাঙাশ, চিংড়িসহ বিভিন্ন দেশীয় মাছ পাওয়া যাচ্ছে। মাছ বিক্রির জন্য বড়স্টেশন মাছঘাটে এসেছি। তবে এই মাছে তেলের টাকাও উঠছে না।
ব্যবসায়ীরা জানান, আজকের আড়তে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজারে। এক কেজির কম ওজনের ২ হাজার ৫০০ টাকায়। সরবরাহ না বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানান তারা।
এদিকে শহরের সবচেয়ে বড় বাজার পালবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানের খুচরা ব্যবসায়ীরা আড়ত থেকে ইলিশই আনেননি। ‘কারণ’ হিসাবে কিরন নামে একজন ব্যবসায়ী বললেন, ‘তিন হাজার টাকার কেজিতে ইলিশ কে কিনবো বলেন? কয়জনে কিনবো? আমরা বেঁচমো কতো?’
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, এখন নদীতে পানি কম। স্রোত ও বৃষ্টিও কম। ফলে এ সময়ে ইলিশ কম পাওয়া যায়।
চাঁদপুরের ইলিশ ক্রেতা মোহন মাছঘাটে এসেছেন ইলিশ কিনতে। দাম শুনেই ফিরে গেলেন। তিনি সমকালকে বললেন, ‘আমাদের চাঁদপুরের মানুষের ইলিশ খাওয়া বড় কঠিন হয়ে পড়ছে। আজকেও যেমন আবার ভরা মৌসুমেও দেখবো দাম আর কমবে না!’