মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তায় রাকিবুল
Published: 28th, January 2025 GMT
রাজা মোল্লা ও আমেনা খাতুন দম্পতি তাঁত শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। দুই ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে পাঁচজনের সংসার তাদের। দিন কাটে অভাব-অনটনে। জীবনের এমন পর্যায়ে আনন্দের উপলক্ষ নিয়ে এসেছে একটি সুসংবাদ। তাদের ছেলে রাকিবুল ইসলাম এবার টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। সন্তানের এমন সাফল্যে তাদের পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে গেলেও ছেলের পড়ালেখার খরচ জোগানোর চিন্তায় তাদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
রাজা মোল্লা-আমেনা খাতুন দম্পতির বসবাস পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের নাড়িয়াগদাই গ্রামে। জমিজমা না থাকায় রাকিবুলের নানার বাড়িতে থাকেন তারা। ধারদেনা ও এনজিও থেকে কিস্তিতে ঋণ নিয়ে এ পর্যন্ত ছেলের পড়ালেখা করিয়েছেন। রাকিবুল নিজেও তাঁতের কাজ করে বাবা-মাকে সহায়তা করেছেন। টিউশনি করে নিজের পড়ালেখার খরচ জুগিয়েছেন। মেডিকেলে পড়ার খরচ অনেক বেশি। এখন ভর্তি থেকে শুরু করে লেখাপড়া শেষ করার মতো আর্থিক সংগতি এ পরিবারের নেই। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ভর্তি শুরু হয়ে চলবে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত ভর্তির টাকা জোগাড় হয়নি। রাকিবুলকে ভর্তি করাতে না পারলে ভেঙে যাবে তাদের স্বপ্ন।
কথা হলে রাকিবুল ইসলাম জানান, ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবো। অভাব-অনটনের কারণে অনেক দিন স্কুল, কলেজ বাদ দিয়ে তাঁত শ্রমিকের কাজ করেছি। নিয়মিত প্রাইভেট পড়তে পারিনি। টিউশনি করে নিজের পড়ালেখার খরচ চালাতে হয়েছে। শুনেছি, মেডিকেলে পড়ায় অনেক খরবচ। সেই খরচ কীভাবে জোগাব সে চিন্তায় বাবা-মায়ের ঘুম নেই। এখন আমার একটাই স্বপ্ন, ডাক্তার হয়ে বাবা-মায়ের কষ্ট দূর করা। জনগণের সেবা করা। এ জন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা চাই।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র খরচ
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
অন্তবর্তী সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সবাইকে ধৈর্য ধরে বিচার প্রক্রিয়া, সংস্কার এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সারাদেশ এখন জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার অপেক্ষায় রয়েছে।”
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাহাঙ্গীরনগর বিবিদ্যালয়ে নির্মিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে, অদম্য ২৪ উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্মিত জুলাইয়ের ভিডিও ও ফটো ডকুমেন্টারি উপভোগ করেন।
আরো পড়ুন:
জবির পরিত্যক্ত ডাস্টবিনগুলো সংস্কার করল ছাত্রদল
রাকসু থেকে জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্বে যারা
আদিলুর রহমান খান বলেন, “১ বছর আগে বাংলাদেশে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, সেই ঐক্যই পারে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে। বিচার প্রশ্নে বলতে চাই কোনো অবস্থাতেই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া সরকার বিচারের ক্ষেত্রে দুর্বলতা স্কোপ রাখবে না। খুব দ্রুতই বেশ কয়েকটি বিচারের কাজ দৃশ্যমান হবে।”
তিনি আরো বলেন, “তরুণ ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি এবং দেশকে বাঁচানোর জন্য জীবন দিয়েছেন। ছাত্র-জনতার মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে। সেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে।” এছাড়া স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য-২৪’ বিভাজন ভুলে একাত্ম হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন।
সমাপনী বক্তব্যে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “সংঘবদ্ধ আন্দোলনে ৫ আগস্ট আমরা বিজয় অর্জন করেছি। এর মানে এই নয় যে, অন্য যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে আর স্বর আপনারা শুনবেন না। আপনারা দেখবেন, জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা সচেতন এবং কথা বলার ব্যাপারে উন্মুক্ত।”
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, এই স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আবার স্মরণ করিয়ে দিলাম, আমরা যদি বাংলাদেশে কোনো অশান্তি দেখি, বৈষম্য দেখি, পরাজয়ের কালো মেঘ দেখি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অদম্য সংগ্রামীরা আবারো তাদের সেই কার্যক্রম শুরু করবে। গোটা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবে, আবার বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।
অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, উপ -উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলমসহ জাহাঙ্গীরনগরের সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য দেন।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী