অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, চলচ্চিত্রের আলাদা মন্ত্রণালয় হওয়া উচিৎ। ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে চলচ্চিত্রের সামগ্রিক উন্নতি করা সম্ভাবনা। আমারা সবাই জানি আমাদের সমস্যা কি, সমাধান কোথায়। তার আগে স্টেকহোল্ডারদের একটি নীলনকশা তৈরি করা উচিৎ, যার তত্ত্বাবধানে একটি কর্মশালার ব্যবস্থা করা হবে; যা আমাদের চলচ্চিত্র সংস্কারে প্রথম ধাপ হবে। এছাড়া দাবি আদায়ে আপনারা রাস্তায় নামেন। আপনারা আমাদের ঘেরাও করেন। আন্দোলন করে আমাদের বাধ্য করেন যাতে আমরা চলচ্চিত্র সংস্কারে তৎপর হই।’

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাংলাদেশ ফিল্ম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় চলচ্চিত্র সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

‘সংস্কারে চলচ্চিত্র, পরিবর্তনে দেশ’ প্রতিপাদ্য ধারণ করে আয়োজিত এ সম্মেলনে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিনয়শিল্পী, নির্মাতাসহ সিনেমা সংশ্লিষ্ট প্রায় চার শতাধিক চলচ্চিত্রকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্যের শুরুতে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমি একজন পরিচালক। বর্তমানে আমি সরকারি একটি দায়িত্বে আছি দুইদিন পর আবার পূর্বের অবস্থানে চলে যাব। আমাকে যদি প্রশ্ন করেন, নতুন দেশে আমারা যে দায়িত্বে পেয়েছি সেখান থেকে সিনেমার জন্য আমরা কাজ করতে পেরেছি কিনা। আমার উত্তর হবে আমরা পারিনি। এটার পেছনে অনেক কারণ আছে। তার মধ্যে একটি হল- প্রতিদিন আমরা রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।’

ফারুকীর কথায়, ‘চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ২৫০ জন মানুষ মিলে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছিল। এখানে এসে আমি অনেক প্রস্তাবনা হাতে পেয়েছি। সেগুলো দেখেছি। এই প্রস্তাবনাগুলো শুধু নিয়মের মধ্যে ফের কিছু বাস্তবায়ন করলে কিন্তু আমাদের অনেক সমস্যা সমাধান হবে। কিন্তু সেগুলো আমরা করতে পারিনি। আমি সরকারে থেকে এটা আমাদের ব্যর্থতা মনে করি।’

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে অন্যতম গণযোগাযোগ, বিনোদন, শিল্প চর্চা ও বাণিজ্যিক খাত হিসেবে গড়ে তুলতে  প্রায় ১৮টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। চলচ্চিত্র মন্ত্রণালয় গঠনের পাশাপাশি ‘চলচ্চিত্র সংস্কার কমিশন’ গঠনের মাধ্যমে অংশীজন প্রস্তাবিত সংস্কার, ভবিষ্যৎ কর্ম-পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো.

নাহিদ ইসলাম ও বিশেষ অতিথি হিসেবে সেখানা থাকার কথা ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের আরেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের। তবে তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, নির্মাতারা।

সংগঠনটির সভাপতি সাদমান শিহির সভাপতিত্বে সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জারিন তাসনিম রোজা। এরপর জুলাই বিপ্লবের শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সম্মেলনে আলোচনা পর্বে বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য আকরাম খান, জনপ্রিয় গীতিকার ও  নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী, নির্মাতা রায়হান রাফী, প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল, অভিনয়শিল্পী ইমতিয়াজ বর্ষণ, জান্নাতুল ফেরদৌসি ঐশী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেলের সদস্য মাশরুর আলমসহ আরও অনেকে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র স সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে খুলছে ৪ বন্ধ কারখানা

নয় দিন বন্ধ থাকার পর আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) থেকে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের চারটি কারখানায় চালু হচ্ছে। 

বেতন, বোনাসসহ বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলনের মুখে গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে চারটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

আরো পড়ুন:

ঝিনাইদহে গাছ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু 

বরিশালে অপসো ফার্মার ৫০০ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অভিযোগ

কারখানাগুলো হলো দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিল লিমিটেড, সেকশন সেভেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মেইগো বাংলাদেশ লিমিটেড ও ইপিএফ প্রিন্টিং লিমিটেড।

সেকশন সেভেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের পরিচালক আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘২৬ অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকেরা কারখানা চালুর দাবি জানান। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে কারখানা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের কারখানায় সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক রয়েছে।’’ 

ইপিজেড সূত্র জানিয়েছে, বন্ধ চারটি কারখানায় সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিক রয়েছে। 

উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার জানান, শ্রমিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) থেকে বন্ধ থাকা চার কারখানা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এ দিন থেকে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম শুরু হবে এবং শ্রমিকদের যথাসময়ে কারখানায় আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

উত্তরা ইপিজেডের ২৭টি কারখানায় ৩৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছে।

ঢাকা/সিথুন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ