Samakal:
2025-05-01@05:36:52 GMT

কল্পনা বাড়ি যাবে আজ

Published: 30th, January 2025 GMT

কল্পনা বাড়ি যাবে আজ

‘এবার বাড়ি গিয়ে পড়াশোনা করব’– হাসিমুখে এ ইচ্ছার কথা বলল ১৩ বছর বয়সী কল্পনা। সাড়ে তিন মাস আগে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তাকে মেরে সামনের চারটি দাঁত ভেঙে দিয়েছিলেন গৃহকর্ত্রী দিনাত জাহান।

পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আজ বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার সদন গ্রামের বাড়িতে যাবে কল্পনা। মেয়ের এ ইচ্ছার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন তার বাবা শহীদ মিয়া ও মা আফিয়া বেগম।

অভাবের তাড়নায় কল্পনা গৃহকর্মীর কাজ করত। ওই বাসার গৃহকর্ত্রী তার হাতসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দিয়েছিলেন আগুনের ছ্যাঁকা। ১৯ অক্টোবরে গুরুতর জখম নিয়ে সে যখন হাসপাতালে আসে, তখন মা-বাবা শঙ্কায় ছিলেন– মেয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে কিনা। তিন মাসের বেশি ঢাকা বার্ন ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিয়ে অনেকটা সুস্থ সে।

গতকাল বুধবার বার্ন ইনস্টিটিউটের ষষ্ঠ তলায় ভিআইপি কেবিনে কথা হয় কল্পনা ও তার পরিবারের সঙ্গে। মা আফিয়া বেগম জানান, সংসারে পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে। স্বামী ছিলেন কাঠমিস্ত্রি। এক দুর্ঘটনায় কোমরে আঘাত পান। তারপর থেকে আয়-রোজগার করতে পারেন না। অভাবে পড়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে মেয়েকে পাঠিয়েছিলেন গৃহকর্মীর কাজে।

আফিয়া বেগম আরও জানান, মেয়ের চিকিৎসার জন্য স্বামী আর তিনি এই তিন মাস মেয়ের সঙ্গে হাসপাতালে ছিলেন। মেয়েকে মারধরের অভিযোগে আফিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০)-এর অধীনে ভাটারা থানায় মামলা করেন। মামলা চলছে। তাদের আইনজীবী ফাহমিদা আক্তার জানিয়েছেন, অভিযুক্ত দিনাত জাহান ও তার ভাই আনান কারাগারে আছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, যখন কল্পনা হাসপাতালে আসে, তখন নির্যাতনে কল্পনার ওপরের পাটির সামনের চারটি দাঁত ছিল না। হাতসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধর ও ছ্যাঁকার ক্ষত ছিল। একদিকে মারধর, অন্যদিকে রক্তশূন্যতা। শারীরিক সমস্যার সঙ্গে ট্রমা ছিল। বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচারের পর এখন অনেকটা সুস্থ সে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা.

মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, কল্পনার স্থায়ী দাঁতের ব্যবস্থা করে তাকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার জন্য কিছু দিন ব্যবধান রেখে তার তিন দফা অস্ত্রোপচার করা হয়। সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরলেও তার ভালো খাবার ও পরিচর্যার প্রয়োজন।

তিনি জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করে। সমাজকল্যাণ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ তার পড়াশোনাসহ যাবতীয় ব্যয় বহনের দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ হকর

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ