কুষ্টিয়ায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির কারণে কুষ্টিয়ার খাজানগর মোকামে চালের দাম বাড়ছে বলে দাবি করেছেন দলের একাংশের নেতারা। 

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালা চলাকালে শিল্পকলার বাইরে থেকে এভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা।

গত ৪ নভেম্বর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে পদ বঞ্চিত ও অবমূল্যায়িত নেতাকর্মীরা ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল দশটা থেকে কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়। 

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির আয়োজনে কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। এ কর্মসূচি সামনে রেখে দলের অবমূল্যায়িত ও পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীরা বেলা সাড়ে বারটায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিল্পকলা একাডেমির সামনে যায়। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সকাল দশটা থেকে শিল্পকলা একাডেমির ভেতরে কর্মশালা চলতে থাকে। অপর দিকে বেলা বারটার দিকে শহরের ইসলামিয়া কলেজ মাঠে জড়ো হয়ে শতাধিক নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। শহরের এনএস রোড প্রদক্ষিণ করে সাড়ে বারটার দিকে শিল্পকলা একাডেমির প্রধান ফটকের সামনে যায়। তারা ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। নেতাকর্মীরা ফটকের সামনে শ্লোগান দিতে থাকে। হট্টগোল সৃষ্টি হয়।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেহাবুর রহমান পুলিশ নিয়ে ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে যান। এসময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের কেউ কেউ জোর করে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। পরে শিল্পকলা একাডেমির প্রধান ফটকের সামনেই সমাবেশ করেন তারা। বেলা সোয়া একটার দিকে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ করে তারা চলে যান। 

এর আগে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে গত ৭ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। ঢাকা ও কুষ্টিয়ায় তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচির মধ্যে ছিল অনশন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও অবমূল্যায়িত নেতা আইনজীবী শামিমুল হাসান অপু বলেন, “দলের নিবেদিত প্রাণ ও আওয়ামী দুঃশাসনের হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির নেতাদের চাঁদাবাজির কারণে আজকে সারা কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় যে চাদাবাজি, দখলদারিত্ব, মসজিদের জায়গা দখল, চালের মোকামে চাঁদাবাজি- এসব কারণে আজকে চালের দাম বেড়ে গেছে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ত কর ম এক ড ম র ব এনপ র শ ল পকল কর ম র

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ