পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে একটি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাসের মালিক অভিযোগ করেছেন, ২০ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে স্থানীয় যুবদল নেতা রানু বিশ্বাস বাসটি পুড়িয়ে দিয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রানু বিশ্বাস।

অভিযুক্ত রানু বিশ্বাস একই ইউনিয়নের রুপুপর গ্রামের রশিদ বিশ্বাসের ছেলে। তিনি মালিগাছা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আর ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী এনামুল হক শংকরপুর গ্রামের নায়েব আলী প্রামাণিকের ছেলে। তিনি পুড়ে যাওয়া তামিম ট্রাভেলস নামে বাসটির মালিক। 

শনিবার ভোররাতে তিনটি মোটরসাইকেলযোগে কয়েকজন এসে শংকরপুর গ্রামে দাঁড় করিয়ে রাখা বাসে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে। এ সময় প্রতিবেশী জাবুল প্রামাণিক, শাহীন প্রামাণিক বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয়দের ডাকাডাকি করলে আগুন নেভাতে এগিয়ে আসে। এ ঘটনায় আনুমানিক ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী।

আরো পড়ুন:

ঢাকা-টাঙ্গাইল-ধনবাড়ী রুট
অনির্দিষ্টকালের জন্য বিনিময় পরিবহনের বাস চলাচল বন্ধ

কুষ্টিয়ায় বাসে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার সিদ্ধান্ত 

পুড়িয়ে দেওয়া তামিম ট্রাভেলসের মালিক এনামুল হক বলেন, ‘‘দুই দিন আগে রানু বিশ্বাস আমার কাছে প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন আমি তাকে বলেছিলাম কিসের জন্য চাঁদা দেবো? তিনি আমাকে বলেন, চাঁদা না দিলে বাস চলতে দেওয়া হবে না, পুড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপর গত রাতে রানু বিশ্বাসের নেতৃত্বে আমার বাস পোড়ানো হয়েছে।’’ 

মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুন্তাজ আলী বলেন, ‘‘বাসটিকে পেট্রোল ঢেলে এমনভাবে পোড়ানো হয়েছে, বলার ভাষা নেই। আমি সকালে শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সদরের ওসি ও ইউএনও স্যারকে অবগত করেছি। যারা এ অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার।’’ 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মালিগাছা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানু বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমার অনুরোধ আপনারা সঠিকভাবে তদন্ত করে দেখেন। তদন্ত করতে যদি কিছু খরচ হয় আমি দেবো। ওসি স্যারকেও বলেছি তদন্ত করতে। যদি আমি ওই এলাকার আশপাশে গিয়ে থাকি বা এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনোরকম জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আইন আমাকে যে শাস্তি দেয় মাথা পেতে নেবো।’’ 

পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার জানান, কে বা কারা আগুন দিয়েছে তাদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তবে ভুক্তভোগী বাস মালিক এনামুলকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহারুল ইসলাম জানান, দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস য বদল তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে টর্চলাইট জ্বালিয়ে সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ