পটুয়াখালীর দুমকীতে ওএমএসের সরকারি চাল পাচারের সময় অটোরিকশা থেকে ১১ বস্তা (৫৫০ কেজি) চাল আটক করেছে স্থানীয় লোকজন। এই চাল উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের মাঝে বিক্রির জন্য বরাদ্দ হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে লেবুখালীর পাগলার মোড় ইউনিভার্সিটি স্কয়ার থেকে চাল জব্দ করেন ইউএনও মো. শাহীন মাহমুদ। পরে রাতেই তিনি ডিলারের গুদাম সিলগালা করেন।
ইউনিয়নের ডিলার খলিল শিকদারের ভাগনে উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির হাওলাদার এ ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি বেশি দামে বিক্রির জন্য খলিলের গুদাম থেকে চাল স্থানীয় মালেক শিকদারের দোকানে পাঠাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জহির হাওলাদারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁর মামা ডিলার খলিল শিকদারের দাবি, তিনি এ ঘটনায় জড়িত নন। চালও তাঁর নয়। জহির খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার ছিলেন। তাঁর ডিলারশিপের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তাই তাঁর (খলিল) গুদামে চাল রেখে ব্যবসা করেন। জহিরের কাছ থেকে তিনি গুদামের অর্ধেক ভাড়া নিয়ে ওএমএসের চাল রাখেন। তাঁর এক টন চাল এখনও গুদামে আছে। জহির নিজের চালই বিক্রি করেছেন।
ইউএনও শাহীন মাহমুদ বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ১১ বস্তা চাল জব্দ করেন। পরে ডিলারের গুদাম সিলগালা করেছেন। এ বিষয়ে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুমকী থানায় মামলা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী
অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।
আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগেগতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।
ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’
সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।
আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে