‘জয় বাংলা’ স্লোগান ও ‘আপার বাড়ি’ বলায় ৩২ নম্বরে নারীসহ দুজনকে পিটুনি
Published: 6th, February 2025 GMT
রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির সামনে নারীসহ দুজনকে পিটুনি দিয়েছে ক্ষুব্ধ জনতা। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় ও আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলায় তাঁদের পিটুনি দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বেলা ১১টার দিকে এক ব্যক্তি ৩২ নম্বরের ওই বাড়ির সামনে গিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিচ্ছিলেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা ওই ব্যক্তিকে পেটান। পিটুনি খেয়ে তিনি একপর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে আহত অবস্থায় সেখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেন কয়েকজন। একপর্যায়ে তাঁকে রিকশায় তুলে দিতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও বলেন, এর কিছুক্ষণ পরে সালোয়ার-কামিজ পরিহিত মধ্যবয়সী এক নারী ভাঙা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে নানা কথা বলতে থাকেন। ওই নারী বাড়িটিকে ‘আপার বাড়ি’ বলছিলেন। এ নিয়ে সেখানে থাকা ক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে ওই নারীর বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। পরে ক্ষুব্ধ জনতা ওই নারীকে পিটুনি দেন ও লাঞ্ছিত করেন।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এক নারীকে পিটুনি দেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ষ ব ধ জনত
এছাড়াও পড়ুন:
জ্বালানির দাম বাড়ল ৯ শতাংশের বেশি
ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় আজ শুক্রবার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে। এতে জ্বালানির তেলের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন আশঙ্কায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে গেছে ৯ শতাংশেরও বেশি, যা গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। খবর বিবিসি, রয়টার্সের
অপরিশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারস ৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বা ৬ দশমিক ২৯ মার্কিন ডলার বেড়ে প্রতি ব্যারেলের দাম ৭৫ দশমিক ৬৫ ডলারে উঠেছে। একপর্যায়ে দাম ৭৮ দশমিক ৫০ ডলারে পৌঁছায়, যা গত ২৭ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। এছাড়া মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬ দশমিক ৪৩ ডলার বা ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে ৭৪ দশমিক ৪৭ ডলারে উঠেছে। একপর্যায়ে দাম ৭৭ দশমিক ৬২ ডলারে উঠেছিল, যা ২১ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সুপারমার্কেটে খাবারের দাম, গাড়িতে তেল ভরার খরচ, পরিবহন ব্যয়সহ সবকিছুর দাম বাড়বে।
হরমুজ প্রণালি বিশ্বে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের পথ। বিশ্বের মোট জ্বালানির প্রায় ২০ শতাংশ এই পথ দিয়েই সরবরাহ হয়। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের তেল ও গ্যাস উৎপাদক দেশগুলো এই পথ দিয়েই তাদের জ্বালানি বিশ্ববাজারে পাঠায়। উত্তরে ইরান, দক্ষিণে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঘেরা হরমুজ প্রণালি উপসাগরীয় অঞ্চলকে আরব সাগরের সঙ্গে যুক্ত করে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমএসটি মারকুইয়ের জ্যেষ্ঠ জ্বালানি বিশ্লেষক সল কাভোনিক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরান যদি আঞ্চলিক জ্বালানি তেল পরিকাঠামোতে পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে তেলের সরবরাহে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।
তিনি আরও জানান, চরম পরিস্থিতিতে ইরান অবকাঠামোতে হামলা বা হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ চলাচলে বাধা দিলে প্রতিদিন প্রায় দুই কোটি ব্যারেল তেল সরবরাহ ব্যাহত করতে পারে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে তেহরান। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, এই হামলা ইসরায়েলের ‘বর্বর স্বভাবের প্রমাণ’। ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল নিজেই নিজের জন্য একটি করুণ পরিণতির পথ তৈরি করেছে, যার ফলাফল তারা নিশ্চিতভাবেই ভোগ করবে।’ ইসরায়েলকে এ হামলার জন্য কঠোর শাস্তি পেতে হবে।
এদিকে ইরানে ইসরায়েলের হামলা একতরফা পদক্ষেপ হিসেবে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেন, এতে ওয়াশিংটনের কোনো অংশগ্রহণ নেই। তবে তেহরানকে সতর্ক করে তিনি বলেন, তারা (তেহরান) যেন মার্কিন স্বার্থ বা ব্যক্তিদের লক্ষ্য না করে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফিলিপ নভার জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা সচদেবা বলেন, ইরান পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে শুধু তেলের সরবরাহ বিঘ্ন ঘটাবে না, আশপাশের অন্যান্য তেল উৎপাদকদের দেশগুলোতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করছে।
আজ শুক্রবার ইরানের স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে তেহরানে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এর কিছু সময় পর, তেহরানে তখন ভোর ৫টা ৩০ মিনিট এবং ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান শহর তেল আবিবে ভোর ৫টা, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।