মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার
Published: 31st, October 2025 GMT
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।
ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো.                
      
				
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র র ন জ ম উদ দ ন ব শ বব দ য
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মেয়েটির খরচ জোগানো নিয়ে দুশ্চিন্তা
জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েটি পড়ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছেলে এইচএসসি পাস করে বেকার। তাঁদের বাবা শ্যামল সাহা অসুস্থ, কোনো কাজ করতে পারেন না। তাই অন্যের বাড়িতে কাজ করতে হয় তাঁদের মা অনিতা সাহাকে। যা পান তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম অবস্থা। মেয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ জোগানো নিয়ে আছেন দুশ্চিন্তায়।
এই পরিবারের বাস টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বানিয়াবাড়ী গ্রামে। অনিতা সাহা বলেন, তাঁদের প্রথম মেয়ে পুতুল সাহা সুস্থ-স্বাভাবিক। তাঁর বিয়ে হয়েছে সিরাজগঞ্জে। পুতুলের পর এক ছেলে ভোলানাথ সাহা ও মেয়ে সীমা সাহার জন্ম। তাঁরা দুজনই জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন।
সীমা সাহা লেখাপড়া করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়েছেন। থাকেন শামসুন্নাহার হলে। সীমা বলেন, চোখে না দেখলেও তাঁর লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকে। রাজশাহী পিএসসি সেন্টার অন্ধ ও বধির স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। পরে ঢাকার আদাবর মিশন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০২১ সালে এসএসসি পাস করেন। এসএসসিতে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৪ দশমিক ১৭ পেয়েছিলেন। ঢাকার মোহাম্মদপুর বছিলা ফিরোজা বাসার আইডিয়াল কলেজ থেকে ২০২৩ সালে জিপিএ-৫ পান। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
সীমাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ৫ শতাংশ জায়গায় ভাঙাচোরা একটি টিনের ঘর। টিনের চাল ফুটো হয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই পাশের রৌহা গ্রামে মামার বাসার একটি কক্ষে আপাতত তাঁরা থাকছেন।
অনিতা সাহা বলেন, ‘নিজেরাই চলবার পারি না। মেয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ কেমনে যোগামু?’ স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সহযোগিতা নেন জানিয়ে তিনি মেয়ের জন্য একটা বৃত্তির ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন।
এলেঙ্গা লুৎফর রহমান মতিন মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক কাশীনাথ মজুমদার বলেন, দৃষ্টিহীনতাকে জয় করে দুই ভাই-বোন লেখাপড়া করেছে। বোনটির লেখাপড়ার জন্য আর ভাইটির কর্মসংস্থানের জন্য কেউ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলে পরিবারটির খুব উপকার হতো। শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে জয় করে তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারত।
টাঙ্গাইলের সরকারি এমএম আলী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শামসুল হুদা বলেন, দরিদ্র পরিবারটির দুটি সন্তানের চোখে আলো নেই। অদম্য ইচ্ছা শক্তিতে তাঁরা পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের আরেকটু এগিয়ে যাওয়ার জন্য মানুষের সহায়তা প্রয়োজন।
 লক্ষ্মীপুরে স্বর্ণালংকার লুটের জন্য মা-মেয়েকে হত্যা, জানাল পুলিশ
লক্ষ্মীপুরে স্বর্ণালংকার লুটের জন্য মা-মেয়েকে হত্যা, জানাল পুলিশ