বগুড়ায় আ.লীগ, জাতীয় পার্টি ও জাসদ অফিস গুঁড়িয়ে দিল ছাত্র-জনতা
Published: 7th, February 2025 GMT
বগুড়ায় জেলা আওয়ামী লীগ, জাসদ ও জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। পরে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় অফিস ঘরগুলো। পাশাপাশি বগুড়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামফলক ভাঙচুর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঘটনাগুলো ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে বগুড়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রবেশ করে। তারা ১২ তলা ভবনের নিচতলায় শেখ হাসিনার নামফলক হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলেন। রাত ৮টার দিকে স্টেশন রোড, নবাববাড়ি সড়ক দিয়ে দুই শতাধিক ছাত্র-জনতা ‘দিল্লি না ঢাকা ঢাকা-ঢাকা’, ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে বগুড়া শহরের সাতমাথা সংলগ্ন টেম্পল রোডে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ অফিস হামলা চালায়। তারা হাতুড়ি দিয়ে ভাঙচুর করে কার্যালয়টিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আরো পড়ুন:
সরকার নিরপেক্ষ নয়, সংস্কার হতে হবে পার্লামেন্টে: জিএম কাদের
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে চিঠি
আমার কিছু হলে ‘কাজী মামুন গং’ দায়ী: এরিক এরশাদ
এরপর বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগ অফিস সংলগ্ন জেলা জাসদ কার্যালয় ভাঙচুর করে। পরে তারা অফিসের ভেতর থেকে আসবাবপত্র বাইরে বের করে আগুন ধরিয়ে দেয়। আওয়ামী লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিতে রাত পৌনে ১০ টার দিকে বুলডোজার নিয়ে আসে ছাত্র-জনতা। এরপর শহরের টেম্পল রোডস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ জাসদ অফিস, টাউন ক্লাব, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খানের ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেন। পরে শহরের কাজী নজরুল ইসলাম সড়কে অবস্থিত জাতীয় পার্টির কার্যালয় ভাঙচুর চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় তারা।
ভাঙচুরে অংশ নেওয়া জুবায়ের নামে একজন বলেন, “আমরা এইবার দিয়ে তিনবার হলো আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছি। আমরা এই অফিস ভেঙে পাবলিক টয়লেট বানাবো।”
এদিকে, বগুড়া-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের বাবার বাড়ি সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা গ্রামে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সিদ্দিকুর রহমানের বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে ছাত্র-জনতা।
এ বিষয়ে কথা বলতে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা ও জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান এর সাথে যোগাযোগ হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঢাকা/এনাম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ছ ত র জনত ল গ অফ স আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
মধ্যরাতে সাংবাদিককে অবরুদ্ধ, পরে পুলিশে হস্তান্তর
নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে মধ্যরাতে জামাল হোসেন (৪৫) নামের এক সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এরপর তাঁকে পুলিশের হস্তান্তর করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের টাউনহল মোড়–সংলগ্ন ফ্ল্যাট রোডে এ ঘটনা ঘটে। একদল তরুণ তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
জামাল হোসেন দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি ও নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। একটি কুরিয়ার সার্ভিসের স্থানীয় পরিবেশক হিসেবেও রয়েছেন তিনি।
জামাল হোসেনের ব্যবসায়িক অংশীদার মো. জিহাদ প্রথম আলোকে বলেন, রাতে তিনি জামাল হোসেনের সঙ্গে নিজেদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় কয়েকজন তরুণ জামাল হোসেনের কাছে এসে তাঁর পরিচয় জানতে চান। একপর্যায়ে গণজাগরণ মঞ্চের ব্যানারে যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবিতে আয়োজিত একটি মানববন্ধনের ছবি দেখিয়ে সেখানে জামাল হোসেনের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন।
মো. জিহাদ আরও বলেন, জামাল হোসেন ওই তরুণদের পরিচয় জানতে চাইলে ইয়াছিন আরাফাত নামের তাঁদের একজন নিজেকে জাতীয় নাগরিক কমিটির লোক দাবি করেন। এরপর জামাল হোসেনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের কারণে আমাদের নেতাদের ফাঁসি হয়েছে।’ জামাল হোসেন তখনকার পরিপ্রেক্ষিতে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে আরও কিছু তরুণ সেখানে জড়ো হয়ে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জামাল হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়ে জানতে চেয়ে আজ বুধবার দুপুরে ইয়াছিন আরাফাত নামের ওই তরুণকে ফোন করা হয়। তখন তিনি বলেন, ‘ভাই এটা সেন্ট্রাল বিষয়। আমি থানায় আছি। এখানে সবাই আছেন।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
জানতে চাইলে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইসহাক খোন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংবাদিক জামাল হোসেনকে কারা অবরুদ্ধ করেছেন কিংবা পুলিশে দিয়েছেন, তা তিনি জানেন না। যাঁদের নাম শুনছেন, তাঁদের তিনি চেনেন না। এ ছাড়া সাংগঠনিকভাবে জামায়াতের এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় সুনির্দিষ্টভাবে কোনো মামলা নেই। গতকাল মধ্যরাতে লোকজন তাঁকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ছাড়া তখন তাঁকে পুলিশ উদ্ধার না করলে অপ্রীতিকর ঘটনারও আশঙ্কা ছিল। ওসি আরও বলেন, যাঁরা তাঁকে আটক করেছেন, তাঁরা আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। বিষয়টি নিয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।