যশোরের মনিরামপুর উপজেলা সদরে অবস্থিত আওয়ামী লীগের উপজেলা কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরিচয়ে এক্সকাভেটর দিয়ে আওয়ামী লীগ উপজেলা কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়।

স্থানীয় লোকজন বলেন, মনিরামপুর উপজেলা সদরে রাজারহাট-চুকনগর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে দুই তলার উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি অবস্থিত। গতকাল রাত আটটার দিকে ১৫ থেকে ২০ জনের একদল বিক্ষুব্ধ তরুণ এক্সকাভেটর নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে যান। তাঁদের কাছে দুটি সাউন্ডবক্স ছিল। এরপর তাঁরা সাউন্ডবক্সে উচ্চ শব্দে হিন্দি গান বাজাতে থাকেন। এক্সকাভেটর দিয়ে প্রথমে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের কলাপসিবল গেট ভাঙা হয়। এরপর কার্যালয়ের দোতলার জানালা ভাঙা হয়। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে ভাঙচুর। এরপর একটি ইঞ্জিনচালিত ভটভটিতে করে ভাঙা কলাপসিবল গেট ও জানালা অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়।

গতকাল রাতে আওয়ামী লীগের উপজেলা কার্যালয় ভাঙচুরের সময় ফেসবুক লাইভে এসে নাছিমুল বারী সাইমুন নামের একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সৌহার্দ্য, সানি, শরীফ মাহমুদ রয়েছে। শেখ হাসিনা দিল্লি বসে লাইভে এসে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন উসকানিমূলক কথা এবং বিভিন্ন অরাজকতা সৃষ্টি করতে চেয়েছে। তারই প্রতিবাদে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্দেশ রয়েছে বাংলাদেশে যত আওয়ামী লীগের অবৈধ স্থাপনা রয়েছে, সব কটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার।’

তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান দাবি করেন, ‘মনিরামপুর উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কমিটি নেই। ভাঙচুরকারীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। ভাঙচুরের বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনাও ছিল না।’

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগও করেননি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র উপজ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

কমিটি নেই, সবাই নেতা

কয়রা উপজেলা বিএনপির কমিটি নেই একযুগ। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগে। কমিটি না থাকায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও। কেউ কারও কথা শুনছেন না। অবস্থা এমন, যেন সবাই নেতা– অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীর। 
কমিটি না থাকলেও উপজেলার একশ মিটারের মধ্যে পৃথক দুটি কার্যালয় রয়েছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নুরুল আমিন বাবুল। আরেকটি কার্যালয় চলছে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসানের নেতৃত্বে। নেতৃত্বের এ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতে কার্যক্রমও সীমিত। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি দেওয়ার দাবি দলীয় নেতাকর্মীর।
পৃথক কার্যালয়ের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলায় একটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পরে স্থানীয় একজন নেতা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি কার্যালয় খুলেছেন; যা সংগঠনবিরোধী কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়টি বন্ধ করেননি। 
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দুই নেতার বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। আগে দলে বিভক্তি থাকলেও আলাদা কার্যালয় ছিল না। এখন দুটি কার্যালয় থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা। 
২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। এরপর দুই দফায় আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নুরুল আমিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু। 
এদিকে কমিটি না থাকায় বেশির ভাগ নেতা স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাট, ঘাট, খাল দখলের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি সুবিধায় হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ আছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ। 
সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হবে। তখন গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব। 
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে কয়রায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কমিটি হলে দলীয় সব বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছি। 
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কয়রায় কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপি থেকে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি নেতাকর্মীর বিরোধও নিষ্পত্তি করবে। দ্রুতই ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স‌চিবাল‌য়ে কর্মচারী‌দের বি‌ক্ষোভ, চল‌বে মঙ্গলবারও 
  • পুরনো স্বাদের ঝুরা মাংসের
  • ভাত খাওয়ার সময় কেন ভাতটাই পরে খেতে বলেন চিকিৎসকেরা?
  • অ্যান্টার্কটিকায় বিরল স্কুইডের সন্ধান
  • পানিতে ভাসছিল ২২ দিনের শিশুর মৃতদেহ, ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা
  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • আমাদের যত ঘুঘু 
  • বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা