কাজের জন্য ভিসা নিয়ে লিবিয়ায় গিয়ে সেখানকার একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানির নির্যাতনের শিকার ২৭ বাংলাদেশি শ্রমিক দেশে ফেরার জন্য সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছেন। এক ভিডিও বার্তায় তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে তাদের বেতন-বোনাস দিচ্ছে না কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। এমনকি তাদের নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) লিবিয়া থেকে পাঠানো ভিডিও বার্তায় শ্রমিকরা তাদের করুন অবস্থার কথা তুলে ধরেন। ভিডিওটি তারা হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার এক গণমাধ্যমকর্মীর কাছে পাঠান।

ভিডিওতে শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় না তাদের। বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে তাদের বেতন-বোনাস দিচ্ছে না কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। চার দেয়ালের ভেতরে আটক শ্রমিকদের খাওয়া ও চিকিৎসা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। 

আরো পড়ুন:

খুলনায় ট্যাংকলরি শ্রমিকদের ধর্মঘট 

শ্রমিকলীগ নেতা নাছিরের গ্রেপ্তার দাবিতে সমন্বয়কদের আল্টিমেটাম

শ্রমিকরা জানান, রিক্রুটিং এজেন্সি ও নিয়োগকর্তা তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বাংলাদেশের সরকার প্রধান যাতে তাদের উদ্ধার করেন সে আকুতি জানান শ্রমিকরা। 

জানা যায়, লিবিয়ায় আটক ও নির্যাতনের শিকার ২৭ জন হবিগঞ্জ, দিনাজপুর, গাজীপুর টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, নওগাঁ, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, গাজীপুর, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার গোপায়া গ্রামের মো.

সিরাজ মিয়ার ছেলে মো. আব্দুল কাদের ও চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের টেকারঘাট গ্রামের মো. রাসেল মিয়ার ছেলে মো. আমিন রয়েছেন। 

লিবিয়ায় থাকা হবিগঞ্জের গোপায়া গ্রামের মো. আব্দুল কাদেরের ছোট ভাই আবুল কাশেম মোবাইল ফোনে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বলেন, “চুনারুঘাট উপজেলার নালমুখ গ্রামের জালাল মিয়ার মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা দিয়ে লিবিয়া যান আব্দুল কাদের। সেখানে যাওয়ার একমাস পরই আব্দুল কাদেরকে নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পারে পরিবার।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পেরে জালাল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করি। ভাইকে দেশে ফিরিয়ে আনতে তাকে অনুরোধ করি। এই মূহুর্তে ভাইকে দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে না বলেও জানিয়ে দেন জালাল মিয়া। আমি আমার ভাইসহ অন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।”

অপর একটি ভিডিওতে আল আমিন নামে এক যুবক বলেন, “হাশেম মেম্বার আমাকে লিবিয়ায় পাঠিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। তিনি আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছেন।”

ঢাকা/আজহারুল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ৪টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে চারটি আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপির হাইকমান্ড। শুধু নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।  

সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায়  গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় বিএনপির জাতীয় স্থানীয় কমিটির একাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী তালিকায়, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আজহরুল ইসলাম মান্নান এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ মাসুদুজ্জামান মাসুদ ধানের শীষ প্রতীকের সম্ভাব্য প্রার্থী।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে (সদর-বন্দর) মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন তিনবারের সংসদ সদস্য আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, বর্তমান সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল।

নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনটি এখনো ফাঁকা রেখেছে দলটি। ধারণা করা হচ্ছে এ আসনটিতে গতবারের মতো জোটের প্রার্থী ছাড় পাবেন। তবে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী শাহ্ আলম, জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়া, সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীও রয়েছেন। 

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম ও যুব উন্নয়নের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওলিউর রহমান আপেল।

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুর ও তার ভাতিজা বিএনপির সহঅর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জে) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন।

এদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২৩৮ আসনে আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছি। আমাদের সঙ্গে যারা আন্দোলন করেছেন, তারা যে সমস্ত আসনে আগ্রহী সে সমস্ত আসনে প্রার্থী দেই। আমরা আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থী ঘোষণা করবো। এটা আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা, এর মধ্যেই পরিবর্তন হতে পারে।

বিশেষ করে, আমাদের শরিক দলগুলোর সাথে আলোচনা এবং স্থায়ী কমিটি যদি মনে করে কোনো আসনে পরিবর্তন আনবে, সেক্ষেত্রে নিয়ম মেনে পরিবর্তন আনবেন।”

সম্পর্কিত নিবন্ধ