মেক্সিকোয় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারি বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে ফ্যাসিবাদের চিহ্ন থাকবে কি না কিংবা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পূজা-অর্চনার স্থান টিকে থাকবে কি না, সে সিদ্ধান্ত একমাত্র দেশের জনগণের।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে রাষ্ট্রদূত–সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারি আরও বলেন, ‘অগণিত ছাত্র-জনতার রক্ত যাদের হাতে, সেই নরপিশাচরা ও তাদের নেত্রী এত স্পর্ধা দেখায় কীভাবে? এই সাহস আসে কোথা থেকে?’

জুলাই গণহত্যার প্রতি ইঙ্গিত করে মুশফিকুল ফজল আনসারি বলেন, ‘যারা এমন অপরাধ করেছে, যার সর্বোচ্চ শাস্তি হলেও ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়, তাদের প্রতি কি কোনো সহানুভূতি প্রদর্শনের সুযোগ থাকতে পারে?’

দেশে সুশীল সমাজের আবরণে শেখ হাসিনা সরকারের দোসর রয়েছে দাবি করে মুশফিকুল ফজল আনসারি বলেন, ‘শুধু ইট-বালু-পাথর–কংক্রিটই ফ্যাসিবাদের চিহ্ন? রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার বাঁকে বাঁকে এবং সুশীল সমাজের আবরণে হাসিনা সরকারের দোসরদের ঘাপটি মারা অবস্থান কি ফ্যাসিবাদের চিহ্ন নয়?’

পোস্টের শেষে মুশফিকুল ফজল আনসারি জুড়ে দেন, ‘এ মতামত একান্তই আমার ব্যক্তিগত।’

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারিকে জ্যেষ্ঠ সচিব পদমর্যাদায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর, হোয়াইট হাউস ও জাতিসংঘের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের গুম, খুন, দুর্নীতি ও বিরোধীদের ওপর নির্যাতন–নিপীড়ন নিয়ে প্রশ্ন করে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিতি পান মুশফিকুল ফজল আনসারি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা

পিআর পদ্ধ‌তি‌তে জাতীয় নির্বাচন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, জাপা ও চৌদ্দ দ‌লের রাজনী‌তি নি‌ষিদ্ধ করাসহ ৫ দফা দা‌বি‌তে তিন‌ দি‌নের কর্মসূ‌চি ঘোষণা ক‌রে‌ছে বাংলা‌দেশ জামায়া‌তে ইসলামী।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ স‌ম্মেল‌নে এই কর্মসূচি ঘোষণা ক‌রেন দল‌টির নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

আরো পড়ুন:

মুক্তিযুদ্ধ না মানলে বাংলাদেশকে অস্বীকার করা হবে: জামায়াত নেতা আযাদ

জনগণ রায় দিলে দেশকে ৫ বছরেই দারিদ্র্যমুক্ত করা সম্ভব: শফিকুর রহমান

তি‌নি ৫ দফা দা‌বি তু‌লে ধ‌রে ব‌লেন, “জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হ‌বে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হ‌বে, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হ‌বে, ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করতে হ‌বে এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হ‌বে।”

এসব দা‌বি বাস্তবায়নে তিন‌ দি‌নে কর্মসূ‌চি ঘোষণা ক‌রেন দল‌টির না‌য়ে‌বে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

কর্মসূ‌চি হ‌লো:
১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল, ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের সব জেলা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল অনু‌ষ্ঠিত হ‌বে।

এ সময় উপ‌স্থিত ছি‌লেন দ‌লের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুর রব ও মোবারক হোমাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মুসা, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ইয়াসিন আরাফাত এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার প্রমুখ।

লি‌খিত বক্ত‌ব্যে বলা হয়,  সরকার জুলাই জাতীয় ঘোষণা ও জুলাই জাতীয় সনদ প্রস্তুত করেছেন। একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জুলাই জাতীয় ঘোষণা ও জুলাই জাতীয় সনদের প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ তাদের পরামর্শ সরকারের নিকট উপস্থাপন করে। জামায়াতে ইসলামী বরাবরই জুলাই জাতীয় সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’ হিসেবে অতীতের বিভিন্ন নজির ও উদাহরণ তুলে ধরে জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তির বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান বারবার ব্যক্ত করে আসছে। আমরা মনে করি, জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান ব্যতীত ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান ও তার অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।

সরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ক‌রে‌ছে জা‌নি‌য়ে সংবাদ স‌ম্মেল‌নে বলা হয়,  সরকা‌রের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভয়ভীতিমুক্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছে। অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ, ভোটকেন্দ্র দখল, পেশিশক্তি প্রদর্শন ও ভোটের বিভিন্ন অনিয়ম ও অপতৎপরতা বন্ধ, কোয়ালিটি-সম্পন্ন পার্লামেন্ট এবং দক্ষ আইনপ্রণেতা তৈরিসহ প্রতিটি ভোট মূল্যায়নের লক্ষ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য জোর দা‌বি জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে। এমন‌কি দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন। কিন্তু তারপরও জনগণের দাবিসমূহ কার্যকর করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। এমতাবস্থায় জনগণের দাবি আদায়ের জন্য গণআন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। তাই জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিতামূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্ররূপে গড়ে তোলার লক্ষ্যে  ৫-দফা গণদাবি মে‌নে নি‌তে সরকা‌রের প্রতি আহ্বান জানা‌নো হয়ে‌ছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পটুয়াখালীতে সালিস বৈঠকে অংশ নিলে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিএনপি
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • জিবের রং শরীরের যেসব লক্ষণ প্রকাশ করে
  • জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা