যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটিকের ব্যবসা কিনে নেওয়ার কোনো ইচ্ছা তাঁর নেই বলে জানিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক।

গত শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাবশালী এই উপদেষ্টার কয়েকটি মন্তব্য প্রকাশ করা হয়।

সেখানে মাস্ক বলেছেন, ‘আমি টিকটকের জন্য কোনো দরপত্র জমা দিইনি। যদি আমার টিকটিক থাকত, তবে সেটা নিয়ে আমি কী করতাম, তা নিয়েও আমার কোনো পরিকল্পনা নেই।’

গত মাসের শেষ দিকে অনলাইনে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে একটি জার্মান ফোরামে অংশ নিয়েছিলেন মাস্ক। সেখানে তিনি টিকটক নিয়ে এ মন্তব্য করেন।

জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকের মূল মালিক চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে টিকটিক নিয়ে একটি বিল পাস হয়।

ওই বিলে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাইটড্যান্সকে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ব্যবসার মালিকানা ছেড়ে দিতে বলা হয়। এ জন্য তাদের ছয় মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।

টিকটকের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে এর কয়েক লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হতে পারে বলে আশঙ্কা দেশটির সরকারের। এ জন্য তারা চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানি সে দেশে টিকটকের ব্যবসা কিনে নিক।

বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে মালিকানা হস্তান্তর না হওয়ায় গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক ঘণ্টার জন্য টিকটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই টিকটককে আইনি বাধ্যবাধকতা পালনের জন্য বাড়তি আরও ৭৫ দিন সময় দিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে পুনরায় বৈধভাবে কার্যক্রম শুরু করে টিকটক।

আরও পড়ুনইলন মাস্ক টিকটক কিনলে আপত্তি নেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের২৩ জানুয়ারি ২০২৫

নির্বাহী আদেশে সই করার পরপরই ট্রাম্প বলেছেন, যদি মাস্ক টিকটক কিনে নিতে চান, তবে তাঁর আপত্তি থাকবে না।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স এবং টেসলাসহ আরও বেশ কয়েকটি কোম্পানির মালিক মাস্ক।

তবে ট্রাম্প যতই চান, মাস্ক এখনো বলে যাচ্ছেন, টিকটক অধিগ্রহণের ইচ্ছা তাঁর নেই।

মাস্ক বলেছেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে টিকটক ব্যবহার করি না। তাই, আপনি বুঝতেই পারছেন, আমি এটার সঙ্গে খুব একটা পরিচিত নই। আমি এটা অধিগ্রহণ করতে আগ্রহী নই।’

২০২২ সালে ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে টুইটার কিনে নেন মাস্ক। প্ল্যাটফর্মটি কিনে নেওয়ার পর সেটির নাম পরিবর্তন করে রাখেন ‘এক্স’।

আরও পড়ুনটিকটকের চীনা মালিক সম্পর্কে কী জানা যায়১৬ মার্চ ২০২৪

মাস্ক সে সময় বলেছিলেন, তিনি ‘বাক্‌স্বাধীনতার’ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এটা করছেন।

যদিও অধিকারকর্মীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, মাস্ক কিনে নেওয়ার পর প্ল্যাটফর্মটিতে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য বেড়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট কটক র বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।

চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই  তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ