রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় পর্যটকবাহী একটি জিপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা গাছে ধাক্কা দিয়েছে। এ সময় জিপটিতে থাকা তিনজন আহত হয়েছেন। আজ রোববার সকালে দীঘিনালা-বাঘাইহাট-সাজেক সড়কের হাজাছড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। জিপটি সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে যাচ্ছিল।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন পর্যটক। অন্যজন জিপের চালক। আহত পর্যটকেরা হলেন—মো.

আব্রাহাম শাহরিয়ার (২২) ও মো. মুছা ( ২৫)। তাৎক্ষণিকভাবে চালকের নাম জানা সম্ভব হয়নি। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পরিচয় চাকমা দুর্ঘটনায় তিনজন আহতের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকালে খাগড়াছড়ি শহর থেকে ছয়জন পর্যটক একটি ছাদখোলা জিপে সাজেকের উদ্দেশে রওনা দেন। সকাল ১০টার দিকে বাঘাইহাটের আগে হাজাছড়া এলাকায় পৌঁছালে জিপটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের বাইরে থাকা একটি গাছে ধাক্কা দেয়। এ সময় জিপে থাকা তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

জানতে চাইলে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় পর্যটকসহ তিনজন আহতের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত নজন

এছাড়াও পড়ুন:

টিউলিপ এখনো বাংলাদেশের ভোটার, আছে পাসপোর্ট, এনআইডিও

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির প্রভাবশালী এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক দাবি করে আসছেন, তিনি কেবলই ব্রিটিশ নাগরিক। কিন্তু প্রথম আলোর হাতে আসা নথিতে দেখা যাচ্ছে, টিউলিপের নামে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) রয়েছে। তিনি এখানকার ভোটার। বাংলাদেশি পাসপোর্টও করেছিলেন তিনি।

গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব-সংক্রান্ত নথিগুলো নিয়ে প্রথম আলো ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমস-এর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছে। বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে যাচাই করে এসব নথির সত্যতা পাওয়া গেছে।

নথিপত্রে দেখা যায়, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের নামে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) হয় ২০১১ সালে। তাতে তিনি ঢাকার ধানমন্ডির ৫ নম্বর সড়কের যে ঠিকানা ব্যবহার করেছেন, সেটা তাঁর খালা শেখ হাসিনার বাসা সুধা সদন।

২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে সাংবাদিকেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তিনি কি বাংলাদেশে আটক এক ব্রিটিশ প্রশিক্ষিত আইনজীবীর মামলায় হস্তক্ষেপ করবেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আপনি কি আমাকে বাংলাদেশি বলছেন? আমি ব্রিটিশ, সাবধানে বলুন, আমি ব্রিটিশ এমপি...আমি বাংলাদেশি নই।’

এনআইডির যেসব তথ্য ছাপা থাকে, তার বাইরে আরও কিছু তথ্য নিবন্ধনের সময় দিতে হয়। সেগুলো নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এনআইডি তথ্যভান্ডারে সংরক্ষিত থাকে। এই তথ্যভান্ডারে টিউলিপের এনআইডি-সংক্রান্ত সব তথ্যও সংরক্ষিত আছে।

এনআইডিতে টিউলিপের পেশা উল্লেখ করা হয়েছে ‘বেসরকারি চাকরি’। জন্মস্থান ঢাকা। ভোটার এলাকা ধানমন্ডি (সড়ক ৩-৫)। তাঁর এনআইডির তথ্যে ট্যাগ হিসেবে আছে, ‘মাইগ্রেটেড’ বা অভিবাসী। নির্বাচন কমিশনের অধীন এনআইডি সার্ভারে টিউলিপের বাংলাদেশি পাসপোর্টের নম্বরও উল্লেখ রয়েছে।

গত ১২ আগস্ট যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে টিউলিপ সিদ্দিকের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্টিফেনসন হারউডের এক মুখপাত্র বলেন, ‘টিউলিপ কখনো বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি পাননি এবং শৈশবের পর থেকে কোনো পাসপোর্টও রাখেননি।’

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানার পরিবারের ১০ সদস্যের এনআইডি ‘লক’ করে দেয় ইসি। এর মধ্যে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের এনআইডিও রয়েছে।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, যেসব প্রতিষ্ঠান ইসির সঙ্গে এনআইডি সেবার বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ, তারা লক করা এনআইডির তথ্য দেখতে পায় না। ব্যাংক সেবা, মুঠোফোনের সিম কেনা, জমি নিবন্ধনসহ বিভিন্ন কাজে এনআইডির সঠিকতা যাচাই করে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এনআইডি লক থাকলে এ ধরনের সেবা পেতে সমস্যা হয়।

আরও পড়ুনসুধা সদনের দেয়ালে টিউলিপ ও জয়কে দেওয়া দুদক-এনবিআরের নোটিশ২৬ আগস্ট ২০২৫

গত ১২ আগস্ট যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে টিউলিপ সিদ্দিকের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্টিফেনসন হারউডের এক মুখপাত্র বলেন, ‘টিউলিপ কখনো বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি পাননি এবং শৈশবের পর থেকে কোনো পাসপোর্টও রাখেননি।’

প্রায় এক বছর ধরে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ টিউলিপের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার চালাচ্ছে।টিউলিপ সিদ্দিকের মুখপাত্র

টিউলিপ অনেক আগে থেকে দাবি করে আসছেন, তিনি বাংলাদেশি নাগরিক নন। ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে সাংবাদিকেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তিনি কি বাংলাদেশে আটক এক ব্রিটিশ প্রশিক্ষিত আইনজীবীর মামলায় হস্তক্ষেপ করবেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আপনি কি আমাকে বাংলাদেশি বলছেন? আমি ব্রিটিশ, সাবধানে বলুন, আমি ব্রিটিশ এমপি...আমি বাংলাদেশি নই।’

১৯ বছর বয়সে প্রথম বাংলাদেশি পাসপোর্ট

কিন্তু বাংলাদেশের পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, টিউলিপের নামে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৯ বছর। ওই পাসপোর্ট ইস্যু করেছিল লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন।

ওই পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ২০১১ সালে ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে পরবর্তী পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন টিউলিপ। এরপর তাঁর নামে দ্বিতীয় পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়।

টিউলিপ সিদ্দিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ